সিরাজগঞ্জের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে বাসচাপায় স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের তিন অটোরিকশা যাত্রী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যার পর সদর উপজেলার মুলীবাড়ী চেকপোস্ট এলাকায় ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও তিনজন।

যমুনা সেতু পশ্চিমপাড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ারুল ইসলাম সমকালকে জানান, যমুনা সেতুর পশ্চিম পাড়ে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের মুলিবাড়ি চেকপোস্ট এলাকায় সন্ধ্যার পর ৬ জন যাত্রী নি‌য়ে একটি অটোরিকশা মহাসড়ক পার হচ্ছিল। এ সময় উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী নাবিল পরিবহনের একটি বাস অটোরিকশাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিকশার যাত্রী দুজন ও হাসপাতালে নেওয়ার পর একজন মারা যান।

নিহতরা হলেন- সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সয়দাবাদ ইউনিয়নের পুর্ব-বাঐতারা গ্রামের গোলাম হোসেনের স্ত্রী মো.

শফিকুল ইসলাম (৪৫), তার স্ত্রী সুমনা খাতুন (৩৮) এবং শফিকুল ইসলামের বোন লাকী খাতুন (২২)। শফিকুল ও তার স্ত্রীর মরদেহ সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। আর শফিকুলের বোন লাকীর মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। 

ওসি আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বাসটিকে ও চালককে শনাক্ত করার চেষ্টা করছে পুলিশ। শুক্রবার রাত পৌনে এগারোটা পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। তবে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ সড়ক দ র ঘটন দ র ঘটন ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে তামাকের ব্যবহার কমেছে

বাংলাদেশে গত ১৩ বছরে তামাকের ব্যবহার কমেছে ৭ শতাংশ। তামাক নিয়ন্ত্রণে এমন অগ্রগতি থাকলেও ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এখনও চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

আজ বুধবার বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশে তামাক ব্যবহারের প্রবণতা ও পূর্বাভাস’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন বিএমইউর জার্নালের এক্সিকিউটিভ এডিটর অধ্যাপক ড. এম মোস্তফা জামান। সভাপতিত্ব করেন বিএমইউর প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের যুগ্ম-সচিব (বিশ্ব স্বাস্থ্য) মো. মামুনুর রশিদ।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২৫-৬৯ বছর বয়সী বাংলাদেশীদের তামাক ব্যবহার (ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন) ২০০৯ সালে ৫৪ শতাংশ থেকে কমে ২০২২ সালে ৪৭ শতাংশে নেমেছে। ধূমপানের হার ২৭ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশ এ মেনেছে। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার ৩৬ শতাংশ থেকে ৩১ শতাংশ। লিঙ্গভিত্তিক বিশ্লেষণে পুরুষদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হ্রাস নারীদের তুলনায় কিছুটা বেশি। শহর ও গ্রামীণ এলাকায় তামাক ব্যবহার কমলেও শহুরে অঞ্চলে হ্রাসের হার বেশি স্পষ্ট।

এম মোস্তফা জামান বলেন, বর্তমান যে হারে তামাক ব্যবহার কমছে, এই গতিতে এগোলে ২০৩০ সালের মধ্যে তামাকের ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানোর বৈশ্বিক লক্ষ্য পূরণ সম্ভব নয়। তথ্য বিশ্লেষণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এনসিডি (অসংক্রামক রোগ) প্রতিরোধ রোডম্যাপ অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে তামাক ব্যবহার ৩০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য অর্জন করতে হলে বর্তমান নীতিমালার গতি দ্বিগুণ করতে হবে।

গবেষণায় সুপারিশ তুলে ধরে তিনি বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি জোরদার করে বর্তমান হ্রাসের হার ত্বরান্বিত করতে হবে। ব্যবহারিক গবেষণা পরিচালনা করা প্রয়োজন, বিশেষ করে নীতি ও আইনের দিকে বিশেষ নজর দিয়ে, যাতে অপর্যাপ্ত হ্রাসের কারণ চিহ্নিত করা যায়।

ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, তামাক ব্যবহার বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির জন্য দায়ী এবং উদ্বেগজনক। এই ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গণমানুষকে সম্পৃক্ত ও সচেতন করতে হবে। গণমাধ্যম এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। তামাক ব্যবহারের মাত্রা ও ঝুঁকি শহর ও গ্রাম পর্যায়ে আলাদাভাবে তুলে ধরা জরুরি।

বিশেষজ্ঞদের মন্তব্যে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তামাক ব্যবহার হ্রাসে বাংলাদেশের অগ্রগতি প্রশংসনীয়, তবে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে আরও কঠোর নীতি ও সামাজিক সচেতনতা প্রয়োজন। ধোঁয়াবিহীন তামাকের ব্যবহার কমাতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ