সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড বর্তমান বিশ্ব চ‌্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে পুনেতে কীভাবে হেরে গেল, সেটাই এক বিরাট বিস্ময়! জয়ের তীরে এসে ডুবল টিম ইংল্যান্ডের তরী। আর তাতেই ভারতের কাছে সিরিজ খোয়াতে হলো সফরকারী ইংলিশদের। 

সিরিজ বাঁচানোর মিশনে টস জিতে ভারতকে ব‌্যাটিংয়ে পাঠিয়ে দুর্দান্ত শুরু পায় ইংল‌্যান্ড। ১২ রান তুলতে ৩ উইকেট হারায় ভারত। পঞ্চম উইকেট হারায় ৭৯ রানে। শিশির ভেজা উইকেটে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৮১ রান করে স্বাগতিকরা। ৫৩ রানের দুটি কার্যকর ইনিংস খেলেন শিভাব দুমে ও হার্দিক পান্ডিয়া।

জবাব দিতে নেমে পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬২ রান তুলে নেয় ইংলিশরা। ১৪ ওভার পর্যন্ত তারাই ছিল ফেভারিট। স্কোর বোর্ডে রান তখন ৪ উইকেটে ১২৪। শেষ ৩৬ বলে ৫৮ রান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মামুলি ব্যাপারই বটে। তবে বিধি বাম; ১৫তম ওভারে সব সমীকরণ পাল্টে যায়।

আরো পড়ুন:

ভারতকে জিতিয়ে অনন্য রেকর্ডে তিলক 

অভিষেক ঝড়ে উড়ে গেল ইংল্যান্ড

স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী নিজের শেষ ওভার এসে তুলে নেন হ‌্যারি ব্রুক ও ব্রাইডন কার্সের উইকেট। আর তাতেই হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ ফসকে যায় ইংল‌্যান্ডের। ১৯.

৪ ওভারে তারা গুটিয়ে যায় ১৬৬ রানে। ১৫ রানের হারে পাঁচ ম‌্যাচের সিরিজ ৩-১ ব‌্যবধানে খোয়াল ইংলিশরা।

ভারতের জয়ের নায়ক শিভাব দুমে। ৩৪ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ রান করেন তিনি। হার্দিক ৩০ বলে ৪টি করে চার ও ছক্কায় ৫৩ রানের ইনিংসটি সাজান। এর আগে রিংকু সিং ৩০ ও অভিষেক শর্মা ২৯ রান করেন। বল হাতে ইংল‌্যান্ডের হয়ে ৩টি উইকেট নেন সাকিব মাহমুদ।

ইংল‌্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন ফিল সল্ট ও বেন ডাকেট। তবে ভালো শুরুর পর তারা কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি। সল্ট ২৩ ও ডাকেট ৩৯ রানে আউট হন। ভালো করতে পারেননি অধিনায়ক বাটলার। ২ রানে থেমে যায় তার ইনিংস। সেখান থেকে হ‌্যারি ব্রুকের ঝড়ে লড়াইয়ে টিকে থাকে ইংল‌্যান্ড। ২৬ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫১ রান করেন ব্রুক।

১৫তম ওভারে বরুণ এসে তাকে ফেরালে ম‌্যাচ বেরিয়ে যায় সফরকারীদের হাত থেকে। পরের ব‌্যাটসম‌্যানরা কেবল পরাজয়ের ব‌্যবধান কমিয়েছেন। ১০ রান করেন ওভারটন। আর ১০ রান আসে আদির রশিদের ব‌্যাট থেকে।

বল হাতে রবি বিষ্ণুয় ও হারশিত রানা ৩টি করে উইকেট নেন। সিরিজের পঞ্চম ম‌্যাচ ২ ফেব্রুয়ারি ওয়াংখেড়েতে অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা/ইয়াসিন/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর ন উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

গঙ্গা চুক্তি পর্যালোচনার বৈঠকে কলকাতা যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা

গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠকে যোগ দিতে ভারতে আসছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও ফারাক্কায় সেই বৈঠক হতে যাচ্ছে ৩ থেকে ৮ মার্চ।

এবার হতে চলেছে জেআরসির ৮৬তম বৈঠক। তাতে যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেন। প্রতিনিধিদলে থাকছেন আরও ১০ বিশেষজ্ঞ ও সরকারি কর্মকর্তা।

ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এক সরকারি বার্তায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এই বৈঠক সম্পর্কে জানানো হয়েছে। সেই বার্তায় সফরকারী প্রতিনিধিদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রবাহিত গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে ১৯৯৬ সালে ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সই করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছরের। আগামী বছর সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।

গত বছর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন, চুক্তি নবায়ন নিয়ে দুই দেশ বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পর্যালোচনায় রাজি হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর দুই দেশের সার্বিক সম্পর্ক ঘিরে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সেই আবহে প্রথম বসতে চলেছে এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। গঙ্গা ছাড়া আর কোনো নদীর পানি বণ্টনের চুক্তি হয়নি। তিস্তার পানিবণ্টনের প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। এর প্রধান কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসহযোগিতা ও তাঁর আপত্তি।

২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এক চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গা চুক্তির একতরফা চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া সত্ত্বেও এই চুক্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ করে না।

কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের প্রতিনিধিদের রেখে ২০২৩ সালেই কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছে। উত্তরাখন্ড, উত্তর প্রদেশ ছাড়াও এই দুই রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

পশ্চিমবঙ্গকে পাঠানো কেন্দ্রীয় সরকারের বার্তা অনুযায়ী ৩ মার্চ বেলা পৌনে ১১টায় মোহাম্মদ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল কলকাতা পৌঁছাবে। সেদিন দুপুরেই তাঁরা ট্রেনে চড়ে রওনা দেবেন ফারাক্কা। পরদিন তাঁরা ফারাক্কায় গঙ্গা নদীর সন্নিহিত এলাকা পরিদর্শন করবেন। ৫ মার্চ কলকাতা ফিরে আসবেন।

পরে ৬ মার্চ কলকাতায় হায়াৎ রিজেন্সি হোটেলে বসবে ৮৬তম যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক। ৭ মার্চ সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে দুই দেশের প্রযুক্তিবিদ পর্যায়ের (টেকনিক্যাল লেভেল) বৈঠক। ৮ মার্চ বাংলাদেশ ফিরে যাবেন সফরকারী প্রতিনিধিরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গঙ্গা চুক্তি পর্যালোচনার বৈঠকে কলকাতা যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা