বনের জমিতে মাদ্রাসা ও এতিমখানা। গত বৃহস্পতিবার সেই মাদ্রাসা ভাঙতে যান বন বিভাগের লোকজন। মাদ্রাসার ছাত্ররা বাধা দিতে গেলে মারধর করে বন্দুক তাক করে বলে অভিযোগ উঠেছে। একজন মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে এলাকাবাসীকে এগিয়ে আসতে বলেন। ঘোষণা শুনে পিঁপড়ার মতো ছুটে আসে মানুষ। মারধরের শিকার হন ৯ বনকর্মী।
এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন এলাকাবাসী। বন বিভাগের লোকজনের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা হাবিবুর রহমান। বক্তব্য দেন স্কুলশিক্ষক আবু তালিব, ধলাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, উপজেলা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল বাদশা আজাদ প্রমুখ।
জানা গেছে, ঘাটাইল উপজেলার শহরগোপীনপুর এলাকায় বনের জমিতে বহু বছর ধরে বসবাস করে আসছেন স্থানীয়রা। এখানে রয়েছে দিঘুলিয়াচালা মদিনাতুল উলুম রাহমানিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা। টিনের ঘর থেকে প্রায় পাঁচ মাস আগে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। গত বৃহস্পতিবার সকালে মাদ্রাসার ভবন ভেঙে জমি উদ্ধার করতে যান বন বিভাগের লোকজন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দাবি, ভবন নির্মাণের সময় দফায় দফায় টাকা নিয়েছেন বন বিভাগের লোকজন। বৃহস্পতিবারও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় মাদ্রাসা ভাঙতে যান তারা। ফলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে বন বিভাগের পাঁচ কর্মীকে মাদ্রাসার একটি ঘরে আটকে রাখে এলাকাবাসী। মারধরের শিকার হন ৯ বনকর্মী। খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও যৌথ বাহিনী।
মাদ্রাসার সভাপতি রুহুল আমীন জানান, মাদ্রাসার ভবন নির্মাণের শুরু থেকেই টাকা দাবি করে আসছেন বন বিভাগের লোকজন। দফায় দফায় এক লাখ টাকা দেওয়া হয় তাদের। বৃহস্পতিবার সকালে এসে চার লাখ টাকা দাবি করেন তারা। টাকা না দেওয়ায় মাদ্রাসার এক ছাত্রের গায়ে হাত তোলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকাবাসী তাদের আটকে রাখেন। তাঁর অভিযোগ, এলাকায় কেউ একটা ঘর তুলতে গেলেই বন বিভাগের লোকজনকে ঘুষ দিতে হয়।

স্থানীয় আবুল বাদশা আজাদের দাবি, ২০ বছর ধরে স্থানীয়দের কাছে থেকে টাকা নিচ্ছে বন বিভাগ। শুধু আত্মাটা ছাড়া প্রায় সব নিয়েছেন বন বিভাগের লোকজন। তাদের অপরাধ শত বছর ধরে বনের জমিতে বসবাস।
স্কুলশিক্ষক আবু তালিব হোসাইন বলেন, ‘আমাদের অপারাধ একটাই, শত বছর ধরে বংশপরম্পরায় বনের জমিতে বসবাস। অপরাধ যদি করে থাকি আমাদের বংশধররা করেছেন। আমরা এখন কোথায় যাব?’
বন বিভাগের ধলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা ওয়াদুদুর রহমানের ভাষ্য, বৃহস্পতিবার বনের জমি দখলমুক্ত করতে দিঘুলিয়াচালায় যান বন বিভাগের লোকজন। স্থানীয়রা তাদের ওপর হামলা করেছেন। এ ঘটনায় বন কর্মকর্তাসহ ৯ কর্মী আহত হয়েছেন। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। 
ঘাটাইল থানার ওসি রকিবুল ইসলাম বলেন, হামলার ঘটনায় শুক্রবার বন বিভাগ অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এল ক ব স কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ