সোনারগাঁয় মোগল আমলের সেতু রক্ষার দাবিতে মানববন্ধন
Published: 31st, January 2025 GMT
মোগল আমলের স্থাপত্যকীর্তি পানাম সেতু রক্ষায় মানববন্ধন করেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটি। গতকাল শুক্রবার সকালে ধ্বংসপ্রায় পানাম সেতুর পাশে এ মানববন্ধন করা হয়।
মানববন্ধনে সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক কবি শাহেদ কায়েসের সভাপতিত্বে যুগ্ম আহ্বায়ক রহমান মুজিব, মিজানুর রহমান, সদস্য সচিব রবিউল হুসাইন, সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের সভাপতি আসমা আকতারী, উদীচীর সোনারগাঁ শাখার সভাপতি শংকর প্রকাশ, সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মোয়াজ্জেনুল হক, সমাজসেবক বজলুর রহমান, সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের নির্বাহী সদস্য রোকেয়া আক্তার বেবী, শিক্ষিকা শামীমা নাসরিন ও লতা মাহমুদ বক্তব্য দেন। মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটির সদস্য সেলিম আহমেদ প্রধান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সোনারগাঁ ছিল প্রাচীন বাংলার রাজধানী। দেশ-বিদেশে সোনারগাঁয়ের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে।
পানাম নগরীর পাশে পঙ্খীরাজ খালের ওপর নির্মিত মোগল শাসনামলের সেতুটি এখন জরাজীর্ণ। অযত্ন-অবহেলা ও সংরক্ষণের অভাবে এটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। দ্রুত এটি সংস্কার করে পর্যটকদের পরিদর্শনের ব্যবস্থা করার জন্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাছে আহ্বান জানানো হয়।
বক্তারা আরও বলেন, বিগত সময়ে প্রশাসনের উদাসীনতা ও অবহেলার কারণে পানাম নগরীর প্রবেশমুখের একটি ঐতিহাসিক সেতু ভেঙে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে যে সেতুটি টিকে আছে, এর পরিণতি যেন আগেরটির মতো না হয়।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ফেরি সার্ভিস বন্ধে চক্রান্তের অভিযোগ
সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া-সন্দ্বীপের গুপ্তছড়া রুটে চালু হওয়া ফেরি সার্ভিস বন্ধের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব ও সন্দ্বীপে পৃথক কর্মসূচিতে এ অভিযোগ করেন সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। তারা বলেন, ‘একটি সিন্ডিকেট আবহাওয়ার দোহাই দিয়ে ফেরি সার্ভিস বন্ধের পাঁয়তারা করছে। প্রতিকূল আবহাওয়ায় সাময়িক বন্ধ রাখা হলেও, অন্য সময়ে ফেরি চালু রাখা সম্ভব। এ ছাড়া সিট্রাক দিতে মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করলেও বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ তা অমান্য করে ফেরি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা সন্দ্বীপবাসী মেনে নেবে না।’ এদিকে সন্দ্বীপের বাসিন্দা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে বলেছেন, ‘নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফের সঙ্গে কথা হয়েছে। ফেরি তুলে নেওয়ার বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফেরি তুলে নেওয়ার আগেই
বিকল্প সিট্রাক দেওয়া হবে। পন্টুনও কোথাও সরানো হচ্ছে না।’
গত ২৪ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো সীতাকুণ্ড-সন্দ্বীপ সমুদ্র পথে ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ছয়জন উপদেষ্টা ও দু’জন বিশেষ সহকারী উপস্থিত ছিলেন। ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তব্য রাখে প্রধান উপদেষ্টাও। এতে উচ্ছ্বসিত হন যাতায়াতে দীর্ঘদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হয়ে আসা সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। গত ২০ এপ্রিল এই রুটে ফেরি সার্ভিস সাময়িক বন্ধের একটি আদেশ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। বুধবার থেকে ফেরি চলাচল বন্ধের কথা জানান বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, সামুদ্রিক এই রুটে ফেরিটি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তাই বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিসির এমন সিদ্ধান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সন্দ্বীপের বাসিন্দারা। এরপর থেকে ফেরি সার্ভিস চালু রাখা, এই রুটে চলাচলরত কপোতাক্ষ ফেরি ও পন্টুন সরিয়ে না নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
সাংবাদিক সালেহ নোমানের সভাপতিত্বে ও সমাজকর্মী আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন– চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসাইন, সন্দ্বীপ পৌরসভা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মোশারফ হোসেন দিদার, সন্দ্বীপ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা যুবদলের সহসভাপতি ফোরকান উদ্দীন রিজভী, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আকবর ভূইয়া, সমাজকর্মী অধ্যক্ষ মুকতাদের আজাদ খান, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুজা-উদ-দৌলা সজিব, যুগ্ম আহ্বায়ক নুর নবী, গণঅধিকার পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-নারীবিষয়ক সম্পাদক নাসরিন আক্তার, মিলাদ উদ্দীন মুন্না, খাদেমুল ইসলাম, এমআরকে তারেক, নুর নবী রবিন, মিলাদ হোসাইন, মাহবুবুর রহমান, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয় সন্দ্বীপের সংগঠন ‘ছাত্র ফোরাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ল স্টুডেন্ট ফোরাম, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার স্টুডেন্ট ফোরাম, নাবিক বহুমুখী সমবায় সমিতি, চট্টগ্রাম কলেজ স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, আমরা সন্দ্বীপবাসী, নাগরিক সমাজ, ইসলামিক ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ও যুব পরিষদ, আলোকিত সংঘ, সন্দ্বীপ অধিকার আন্দোলন, উড়িরচর সোশ্যাল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাসোসিয়েশন, সন্দ্বীপ ইসলামী কালচারাল ফোরামসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপি নেতা ও সন্দ্বীপের বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘যদি ফেরি বন্ধ করে, আমাদের লাশের ওপর দিয়ে বন্ধ করতে হবে। আমরা ফেরি এখান থেকে যেতে দেব না। ফেরি এখানে থাকবে। প্রতিকূল পরিবেশে বন্ধ রাখা হলেও অনুকূল পরিবেশে যেন ফেরি চলাচল চালু থাকে।’
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, ‘আগে লাল বোটের মাধ্যমে যাতায়াতে অনেক লোক হতাহত হয়েছেন। আমরা চাই নিরাপদ যাত্রীবাহন ফেরি যেন চালু থাকে। একটি সিন্ডিকেট আমাদের ফেরি বন্ধের চক্রান্ত চালাচ্ছে, যেটা আমরা কখনও হতে দেব না। সন্দ্বীপের মানুষ অনেক কষ্ট করেছেন। যে কষ্টের দিন আমারা ফেলে এসেছি সে দিনে আর ফিরতে চাই না। আমরা চাই চক্রান্ত প্রতিহতের মাধ্যমে যাতায়াতের সুব্যবস্থা যেন অব্যাহত থাকে।’
এদিকে, সন্দ্বীপ উপজেলা কমপ্লেক্স অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সন্দ্বীপ উপজেলা যুবদলের আহ্ববায়ক প্রভাষক নিঝুম খান। এতে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আলাউদ্দীন শিকদার, উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলমগীর হোসাইন ঠাকুর, সন্দ্বীপ প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. মোজাম্মেল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ওমর ফয়সাল, ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মীর ইসমাঈল, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য আজমত আলী বাহাদুর, জামায়াতে ইসলামীর সন্দ্বীপ উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা আবু তাহের, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার মনির তালুকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাসেম মাস্টার প্রমুখ।