কর্মব্যস্ত জীবনে ভ্রমণের পরিকল্পনা সাজানোয় বড় ঝক্কি হয়ে দেখা দেয় বাস-ট্রেনের টিকিট কাটা, হোটেল বুকিং, খাওয়াদাওয়াসহ নানা বিষয়। বড় দল বেঁধে ঘুরতে গেলে তো কথাই নেই। তবে এই ডিজিটাল যুগে এসে ভ্রমণ পরিকল্পনা সাজানো এখন আগের চেয়ে সহজ। এ ক্ষেত্রে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের কল্যাণে ভ্রমণপিপাসুরা নিজের সুবিধামতো সময়ে ঘরে বসেই পুরো ট্যুর প্ল্যান সেরে ফেলতে পারছেন। কেননা বিকাশ অ্যাপ দিয়েই ই-টিকিটিং থেকে শুরু করে হোটেল-রিসোর্ট বুক করার পাশাপাশি ভ্রমণ সম্পর্কিত বিভিন্ন খরচের হিসাব রাখতে পারছেন গ্রাহকরা। একটু খোঁজখবর রাখলে বিকাশ পেমেন্টে ই-টিকিটিং, হোটেল বুকিংয়ে চলা বিভিন্ন ক্যাশব্যাক ও ডিসকাউন্ট অফার ব্যবহার করে ভ্রমণের খরচ কিছুটা হলেও কমিয়ে আনার সুযোগ রয়েছে।
একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত সামিউল ইসলাম মাসখানেক আগে বন্ধুবান্ধবসহ ঘুরতে গিয়েছিলেন বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলায়। উদ্দেশ্য ছিল পাহাড়ে ট্র্যাকিং। তিনি বলেন, ‘আমরা যেহেতু নিয়মিতই পার্বত্য জেলাগুলোয় ট্র্যাকিংয়ে যাই এবং অন্যদের জন্যও ট্যুর প্ল্যান করে দিই, এ কারণে পরিচিত ভালো ট্যুর গাইড, রাত্রিযাপনের স্থান এবং স্থানীয় জায়গায় চলাচলের জন্য গাড়ি বা নৌকা আগে থেকেই বুকিং করে ফেলি। পেমেন্টের কিছু অংশ আগেই পাঠিয়ে দিই বিকাশে। যাত্রা শুরুর আগে দলের সদস্যদের কাছ থেকে ভ্রমণের চাঁদা সংগ্রহ থেকে শুরু করে বাস বা ট্রেনের টিকিট কাটা, হোটেল বুক করাসহ সবই করতে পারছি বিকাশের মাধ্যমে।’

তিনি জানান, বিকাশের কল্যাণে অতিরিক্ত ক্যাশ টাকা বহনের ঝামেলা নেই। জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা কার্ড থেকে টাকা অ্যাড করা যায়। ফলে ভ্রমণের সময় টাকা হারানো বা চুরি-ছিনতাইয়ের মতো ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকা যায়।
সিলেট জেলার অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ ভোলাগঞ্জ। জেলা শহর থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরের সীমান্তবর্তী এই এলাকায় ছোট একটি খাবারের দোকান চালান আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘সারাদেশ থেকেই দল বেঁধে ভ্রমণপিপাসুরা– সাদা পাথর দেখতে আসেন। ঘুরতে এসে অনেকেই এখানে দুপুরের খাওয়াদাওয়া সারেন। হঠাৎ করে বড় পর্যটক দল এলে তাদের সবার জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এ কারণে আসার আগে অনেকেই ফোনে খাবারের অর্ডার দিয়ে রাখেন বিলের একটা অংশ অগ্রিম দিয়ে দেন বিকাশে। নিয়মিত অর্ডার পাওয়ায় দোকানের জন্য বিকাশ মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টও করে নিয়েছি।’

এদিকে যারা ‘বাজেট ফ্রেন্ডলি’ ঘোরাঘুরিতে অভ্যস্ত। ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থানে বিকাশ পেমেন্টের সুবিধা তাদের জন্য বাড়তি পাওনা। এমনই এক দম্পতি সালমা ও মাসুদ, যারা নিয়ম করে প্রতি মাসেই ঘুরতে বের হন। সালমা বলেন, ‘ঘোরাঘুরি আমাদের জন্য অনেকটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। আমাদের চেষ্টা থাকে ন্যূনতম বাজেটে ট্যুর প্ল্যান করা। ট্যুর প্ল্যান করার সময় কোন খাতে কত খরচ হবে তার একটা তুলনামূলক চিত্র দেখে নিতে পারি বিকাশ অ্যাপ থেকেই। বিকাশ অ্যাপ থেকে টিকিট কাটার পাশাপাশি দেখে নিতে পারি কোথায় কোন হোটেল কী অফার দিচ্ছে বা ট্যুর অপারেটররা কোনো ছাড় দিচ্ছে কিনা। অ্যাপের পাশাপাশি তাই নজর রাখি বিকাশের ওয়েবসাইট এবং সোশ্যাল মিডিয়া পেজগুলোতেও।’
বিকাশ পেমেন্টে  টিকিট কাটা

অবকাশ যাপন কিংবা পরিবার-পরিজনের কাছে বেড়াতে যাওয়া বা পেশাগত প্রয়োজনে ভ্রমণের আগে প্রথম কাজ বাস, ট্রেন, লঞ্চ বা এয়ারটিকিট বুক করা। কাউন্টারে গিয়ে লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা এড়িয়ে বর্তমানে বিকাশ অ্যাপ দিয়েই স্বনামধন্য বিভিন্ন ই-টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম থেকে সরাসরি বিকাশ পেমেন্টে টিকিট বুক করতে পারছেন গ্রাহকরা।
টিকিটিং প্ল্যাটফর্মগুলোর মাঝে রয়েছে ‘যাত্রী’, ‘সহজ’ ও ‘বিডিটিকেটস’; যেখানে কাটা যায় বাস, ট্রেন ও লঞ্চের টিকিট। আবার ডোমেস্টিক বা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারটিকিট কাটার জন্য বিকাশ অ্যাপ থেকে সরাসরি পেমেন্ট করার সুবিধা রয়েছে ট্র্যাভেল এজেন্সি ‘শেয়ারট্রিপ’, ‘গোযায়ান’ এবং ‘এমি ট্রাভেল’-এ। একই সঙ্গে বিভিন্ন হোটেল-রিসোর্ট, বিনোদন কেন্দ্র, রেস্টুরেন্টে সরাসরি বিকাশ পেমেন্টে অফার-ডিসকাউন্টও দেখে নেওয়া যায় বিকাশ থেকে।

বিকাশ পেমেন্টে ই-টিকিটিং ও হোটেল
বুকিং সম্পর্কিত অফারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে এই লিংকে– https://www.

bkash.com/campaign/ travel-umbrella।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ রমণ র ব ক কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের ছুটিতে পর্যটক আসতে শুরু করেছে কক্সবাজারে

পুরো রমজান মাসে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ছিল প্রায় সুনসান নীরবতা। হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টগুলো ছাড় দিয়েও অতিথি পায়নি। বন্ধ ছিল পর্যটক নির্ভর রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য ব্যবসা। সেই নীরবতা ভেঙেছে ঈদুল ফিতরের ছুটিতে। ঈদের দিন দুপুর থেকে স্থানীয় পর্যটকরা সৈকতমুখী হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার থেকে আসবেন বাইরের জেলার ভ্রমণপ্রেমীরা।

পর্যটকদের বরণ করে নিতে ইতোমধ্যে হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সংস্কার করে প্রস্তুত করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকাররাও নব উদ্যমে প্রস্তুতি নিয়েছেন।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবারের ঈদে ৯ দিনের লম্বা ছুটিতে চাকরিজীবীদের বড় একটি অংশ সপরিবারে বেড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন। আর লম্বা ছুটি বা বিশেষ দিনে ভ্রমণপিপাসুদের বরাবরই পছন্দের জায়গা কক্সবাজার। এখানে সমুদ্রসৈকত ছাড়াও পাহাড়, নদী, ছড়া, ঝিরি-ঝরনাসহ প্রকৃতির অপরূপ সব সৌন্দর্য দেখার সুযোগ রয়েছে।

হোটেল-মোটেল মালিকরা জানান, রমজান মাসের আগের চার মাসে বিপুলসংখ্যক পর্যটক কক্সবাজার ঘুরতে এসেছেন। প্রতি সপ্তাহে গড়ে আড়াই থেকে তিন লাখ পর্যটক এসেছিলেন। আর গত বছর ঈদুল ফিতরের ছুটিতে অন্তত ১০ লাখ পর্যটকের সমাগম হয়েছিল। এবার অনেকেই দেশের নানা প্রান্ত থেকে অনলাইন বা ফোনে যোগাযোগ করে কক্ষ বুকিং দিয়েছেন। ২ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কক্ষ বুকিং রয়েছে। কক্সবাজার শহর ও মেরিন ড্রাইভের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্টে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটক থাকার ব্যবস্থা রয়েছে।

হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, ‘বাইরের পর্যটকরা ঈদের পরদিন অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে কক্সবাজারমুখী হবেন। পর্যটকরা ভ্রমণে এসে যাতে সমস্যার সম্মুখীন না হন এর জন্য অনলাইনে হোটেল বুকিং দিয়ে এলেই সবচেয়ে ভালো।’

টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, পর্যটকদের অতিরিক্ত চাপ বাড়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সমুদ্রসৈকত ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে সার্বক্ষণিক টুরিস্ট পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। টুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তৎপর রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, পর্যটকরা এসে যাতে ভালো সেবা পান এর জন্য পর্যটনসংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধ, অন্যান্য ক্ষেত্রে হয়রানি রোধ এবং নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে সৈকতে ও আশপাশের বিনোদনকেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে। কোনো অভিযোগ পেলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঈদের ছুটিতে পর্যটক আসতে শুরু করেছে কক্সবাজারে