শরিয়াহ পরিপালনে অগ্রাধিকার দেয় আইএফআই
Published: 31st, January 2025 GMT
সম্মানজনক জীবনের জন্য সম্মানজনক জীবিকার কোনো বিকল্প নেই। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বৈধ উপায়ে বেচাকেনা এবং সম্পদ উপার্জনের কথা বলা হয়েছে। বৈধ এবং হালাল পথে সম্পদ উপার্জনকে ইসলাম ইবাদত হিসেবে গণ্য করেছে। সমাজে সুদমুক্ত লেনদেন ও বিনিয়োগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের কয়েকজন শিল্পপতি ও সমাজকর্মীর যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পিএলসি (আইএফআইপিএলসি)। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে আইএফআইপিএলসি ২০০১ সালের ১২ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে। চলতি বছর অগ্রযাত্রার ২৫ বছর পূর্ণ করছে প্রতিষ্ঠানটি।
আইএফআইপিএলসির কর্মকর্তারা জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের অঙ্গীকার হচ্ছে, দেশে সুদবিহীন আর্থিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে উন্নত গ্রাহক সেবা, সততা, একাগ্রতা ও ব্যবসায়িক সাফল্যে স্বল্প সময়ে আর্থিক খাতে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক আইএসও সনদ লাভ করে আইএফআইপিএলসি। স্বল্প সময়ে বিনিয়োগের নিশ্চয়তা, আমানতের বিপরীতে আকর্ষণীয় মুনাফা ও গ্রাহকের আস্থার ফলে ক্রমান্বয়ে লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যাচ্ছে আইএফআইপিএলসি। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো– সম্পূর্ণ কোরআন ও হাদিস অনুমোদিত আমানত ও বিনিয়োগ সেবার নিশ্চয়তা, আমানত ও বিনিয়োগসহ সব কার্যক্রম শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি অনুমোদিত, মজবুত আর্থিক ভিত্তি, অভিজ্ঞ পরিচালকমণ্ডলী ও সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা।
কোম্পানির কর্মকর্তারা বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আইএফআইপিএলসিতে মুদারাবা পদ্ধতিতে আমানত সঞ্চয়ের মাধ্যমে সুদবিহীন মুনাফা লাভ করে উপকৃত হচ্ছেন। একই সঙ্গে শরিয়াহসম্মত বিভিন্ন পদ্ধতিতে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ পরিসরে শিল্প-বাণিজ্যের প্রায় সব খাতে বিনিয়োগ গ্রহণ করে নিজেদের আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। দেশের বিশিষ্ট আলেম ও শরিয়াহ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত আইএফআইপিএলসির একটি কার্যকর শরিয়াহ বোর্ড রয়েছে। আইএফআইপিএলসি সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংকস অব বাংলাদেশের সদস্য। প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি লেনদেনে শরিয়াহ বোর্ডের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নে আইএফআইপিএলসি বদ্ধপরিকর।
গ্রাহক ও তাদের পরিবারের ভবিষ্যৎ সচ্ছলতা ও আর্থিক নিরাপত্তার জন্য আইএফআইপিএলসিতে চালু রয়েছে আকর্ষণীয় সঞ্চয় স্কিম। যেমন– মুদারাবা আসান ডিপোজিট স্কিম (সঞ্চয় করুন, যখন যেমন খুশি), মুদারাবা পেনশন ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা হজ ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা ক্যাশ ওয়াক্ফ স্কিম, মুদারাবা ‘মুহ্সিনাত’ (মহীয়সী নারী), মুদারাবা ‘আত্ফাল’ (স্কুল ব্যাংকিং), মুদারাবা-‘আশ্-শিফা’ (বেসিক হেলথ্ চেকআপ ফ্যাসিলিটি), মুদারাবা মেয়াদি আমানত, মুদারাবা মিলিয়নিয়র ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা কোটিপতি ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা দ্বিগুণ, তিন গুণ স্কিম।
কর্মকর্তারা জানান, আইএফআইপিএলসি শরিয়াহসম্মত পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করে থাকে। বিনিয়োগ পদ্ধতিগুলো হলো– হায়ার পারচেজ শিরকাতুল মিল্ক বা মালিকানায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ক্রয় করে ভাড়া প্রদানের মাধ্যমে মালিকানা হস্তান্তর, ইজারা বা ভাড়া (লিজ), নারী উদ্যোক্তাদের জন্য লিন্নিসা, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিনিয়োগ ইস্তিসমার, রাহা (সহজ বিনিয়োগ), এসএমই বিনিয়োগ, সিলা উল ইসতিহ্লাক এবং লিত্ তাবিব বা চিকিৎসাসেবায় বিনিয়োগ।
সাফল্য হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি পেয়েছে স্বীকৃতিও। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে বর্ষসেরা উৎপাদনশীল খাত উদ্যোক্তাবান্ধব অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার অর্জন করে আইএফআইপিএলসি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইএফআইপিএলসিকে বেস্ট কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট বডি বাংলাদেশ ২০২০ হিসেবে পুরস্কৃত করেছে যুক্তরাজ্যের ব্যবসা-বাণিজ্যবিষয়ক ম্যাগাজিন বিজনেস ট্যাবলয়েড। আইএফআইপিএলসি ফাইন্যান্স কোম্পানি অব দ্য ইয়ার-বাংলাদেশ ক্যাটেগরিতে এশিয়ান ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ সিঙ্গাপুর পুরস্কার অর্জন করেছে। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে উদ্ভাবনী শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান-বাংলাদেশ ক্যাটেগরিতে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ ইউকে পুরস্কার অর্জন করে।
বর্তমানে দেশব্যাপী মোট সাতটি শাখার মাধ্যমে আইএফআইপিএলসির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, উন্নত গ্রাহকসেবা, আমানতের বিপরীতে আকর্ষণীয় মুনাফা ও স্বল্পতম সময়ে বিনিয়োগের নিশ্চয়তা নিয়ে আইএফআইপিএলসি এখন গ্রাহকের দোরগোড়ায়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর থ ক গ র হক প এলস ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
মেঘনায় ‘বালুখোকো’ কানা জহির-মিজি গ্রুপের গোলাগুলি, নিহত দুই
চাঁদপুর-মুন্সীগঞ্জ সীমান্ত এলাকার মেঘনা নদীতে বালু মহাল ও বালু উত্তোলনের দ্বন্দ্বের জের ধরে বালুখেকো কানা জহির ও কিবরিয়া মিজি গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন।
পুলিশ বলছে, চাঁদপুরের মতলবের উত্তর থানার মোহনপুর চরে মেঘনা নদীর মুখে ড্রেজার ও বাল্কহেড নোঙর করা ছিল। ওই ড্রেজার ও বাল্কহেডে বালুখেকো কানা জহিরের লোকজন অবস্থান নেয়।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্পিডবোটে আরেক বালুখেকো কিবরিয়া মিজির লোকজন এসে তাদের লক্ষ্য করে আকস্মিক গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় কানা জহিরের লোকজন ড্রেজার ও বাল্কহেড থেকে পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন।
আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ রিফাত খান (২৮) ও রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার খবর শুনে হাসপাতালে ভিড় করেন তাদের স্বজনরা।
গুলিবিদ্ধ আইয়ুব আলীর অবস্থা গুরুতর, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রিফাতের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলায় এবং রাসেলের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ সদরের ভাষানচর এলাকায়।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনাটি চাঁদপুর-মোহনপুর এলাকার মেঘনা নদীতে ঘটেছে। বালু মহালের দ্বন্দ্বের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে এনে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে এসে মৃতদেহ হেফাজতে নেয়।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মাসুদুর রহমান রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যান। নিহত দুজনের মধ্যে একজনের বুকের ডান পাশে ও অন্যজনের বুকের বাঁ পাশে গুলির চিহ্ন রয়েছে। আহত একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা/রতন/রাসেল