সম্মানজনক জীবনের জন্য সম্মানজনক জীবিকার কোনো বিকল্প নেই। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বৈধ উপায়ে বেচাকেনা এবং সম্পদ উপার্জনের কথা বলা হয়েছে। বৈধ এবং হালাল পথে সম্পদ উপার্জনকে ইসলাম ইবাদত হিসেবে গণ্য করেছে। সমাজে সুদমুক্ত লেনদেন ও বিনিয়োগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের কয়েকজন শিল্পপতি ও সমাজকর্মীর যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসলামিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পিএলসি (আইএফআইপিএলসি)। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদনক্রমে আইএফআইপিএলসি ২০০১ সালের ১২ এপ্রিল যাত্রা শুরু করে। চলতি বছর অগ্রযাত্রার ২৫ বছর পূর্ণ করছে প্রতিষ্ঠানটি। 

আইএফআইপিএলসির কর্মকর্তারা জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানের অঙ্গীকার হচ্ছে, দেশে সুদবিহীন আর্থিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে উন্নত গ্রাহক সেবা, সততা, একাগ্রতা ও ব্যবসায়িক সাফল্যে স্বল্প সময়ে আর্থিক খাতে সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক আইএসও সনদ লাভ করে আইএফআইপিএলসি। স্বল্প সময়ে বিনিয়োগের নিশ্চয়তা, আমানতের বিপরীতে আকর্ষণীয় মুনাফা ও গ্রাহকের আস্থার ফলে ক্রমান্বয়ে লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যাচ্ছে আইএফআইপিএলসি। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো– সম্পূর্ণ কোরআন ও হাদিস অনুমোদিত আমানত ও বিনিয়োগ সেবার নিশ্চয়তা, আমানত ও বিনিয়োগসহ সব কার্যক্রম শরিয়াহ সুপারভাইজরি কমিটি অনুমোদিত, মজবুত আর্থিক ভিত্তি, অভিজ্ঞ পরিচালকমণ্ডলী ও সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা। 

কোম্পানির কর্মকর্তারা বলেন, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সব শ্রেণি-পেশার মানুষ আইএফআইপিএলসিতে মুদারাবা পদ্ধতিতে আমানত সঞ্চয়ের মাধ্যমে সুদবিহীন মুনাফা লাভ করে উপকৃত হচ্ছেন। একই সঙ্গে শরিয়াহসম্মত বিভিন্ন পদ্ধতিতে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ পরিসরে শিল্প-বাণিজ্যের প্রায় সব খাতে বিনিয়োগ গ্রহণ করে নিজেদের আর্থিকভাবে সমৃদ্ধ করেছেন। দেশের বিশিষ্ট আলেম ও শরিয়াহ বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত আইএফআইপিএলসির একটি কার্যকর শরিয়াহ বোর্ড রয়েছে। আইএফআইপিএলসি সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংকস অব বাংলাদেশের সদস্য। প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি লেনদেনে শরিয়াহ বোর্ডের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা বাস্তবায়নে আইএফআইপিএলসি বদ্ধপরিকর। 

গ্রাহক ও তাদের পরিবারের ভবিষ্যৎ সচ্ছলতা ও আর্থিক নিরাপত্তার জন্য আইএফআইপিএলসিতে চালু রয়েছে আকর্ষণীয় সঞ্চয় স্কিম। যেমন– মুদারাবা আসান ডিপোজিট স্কিম (সঞ্চয় করুন, যখন যেমন খুশি), মুদারাবা পেনশন ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা হজ ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা ক্যাশ ওয়াক্ফ স্কিম, মুদারাবা ‘মুহ্সিনাত’ (মহীয়সী নারী), মুদারাবা ‘আত্ফাল’ (স্কুল ব্যাংকিং), মুদারাবা-‘আশ্-শিফা’ (বেসিক হেলথ্ চেকআপ ফ্যাসিলিটি), মুদারাবা মেয়াদি আমানত, মুদারাবা মিলিয়নিয়র ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা কোটিপতি ডিপোজিট স্কিম, মুদারাবা দ্বিগুণ, তিন গুণ স্কিম। 
কর্মকর্তারা জানান, আইএফআইপিএলসি শরিয়াহসম্মত পদ্ধতিতে বিনিয়োগ করে থাকে। বিনিয়োগ পদ্ধতিগুলো হলো– হায়ার পারচেজ শিরকাতুল মিল্ক বা মালিকানায় অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ক্রয় করে ভাড়া প্রদানের মাধ্যমে মালিকানা হস্তান্তর, ইজারা বা ভাড়া (লিজ), নারী উদ্যোক্তাদের জন্য লিন্নিসা, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বিনিয়োগ ইস্তিসমার, রাহা (সহজ বিনিয়োগ), এসএমই বিনিয়োগ, সিলা উল ইসতিহ্লাক এবং লিত্ তাবিব বা চিকিৎসাসেবায় বিনিয়োগ।  

সাফল্য হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি পেয়েছে স্বীকৃতিও। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে বর্ষসেরা উৎপাদনশীল খাত উদ্যোক্তাবান্ধব অব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পুরস্কার অর্জন করে আইএফআইপিএলসি। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইএফআইপিএলসিকে বেস্ট কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট বডি বাংলাদেশ ২০২০ হিসেবে পুরস্কৃত করেছে যুক্তরাজ্যের ব্যবসা-বাণিজ্যবিষয়ক ম্যাগাজিন বিজনেস ট্যাবলয়েড। আইএফআইপিএলসি ফাইন্যান্স কোম্পানি অব দ্য ইয়ার-বাংলাদেশ ক্যাটেগরিতে এশিয়ান ব্যাংকিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ সিঙ্গাপুর পুরস্কার অর্জন করেছে। ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটি সবচেয়ে উদ্ভাবনী শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান-বাংলাদেশ ক্যাটেগরিতে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স অ্যাওয়ার্ড ২০১৮ ইউকে পুরস্কার অর্জন করে। 
বর্তমানে দেশব্যাপী মোট সাতটি শাখার মাধ্যমে আইএফআইপিএলসির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, উন্নত গ্রাহকসেবা, আমানতের বিপরীতে আকর্ষণীয় মুনাফা ও স্বল্পতম সময়ে বিনিয়োগের নিশ্চয়তা নিয়ে আইএফআইপিএলসি এখন গ্রাহকের দোরগোড়ায়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর থ ক গ র হক প এলস ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

বাউফলে তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাইয়ের মামলায় যুবদল কর্মীসহ গ্রেপ্তার ৩

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নদীবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে চাঁদার দাবিতে কৃষকের তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগে হওয়া মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া পাঁচ শ তরমুজ উদ্ধার করে ওই কৃষকের ছেলেকে বুঝিয়ে দিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের যুবদল কর্মী মো. সাইফুল, মো. মেহেদী হাসান (২০) ও গোলাম মুর্তজা (৪০)। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি সাইফুলকে গত বুধবার রাতে এবং মেহেদী ও মুর্তজাকে আজ শনিবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাইফুল নাজিরপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাঁকে উপজেলা ছাত্রদল বহিষ্কার করেছে। বর্তমানে তিনি যুবদলের সক্রিয় কর্মী বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশ, স্থানীয় চাষি ও ভুক্তভোগী কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার খেত থেকে ৮৬০টি তরমুজ কেটে ট্রলারে উঠিয়ে বরিশাল নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কৃষক মো. মানিক ব্যাপারী। দুপুর ১২টার দিকে বিএনপি নেতা এনায়েত হোসেনের ছেলে মো. সাইফুল (৩৫) দেশি অস্ত্রসহ ২০-২৫ জনের একটি দল নিয়ে ট্রলারের চালককে মারধর করেন। এরপর চর রায়সাহেব থেকে তরমুজভর্তি ট্রলারটি ছিনিয়ে নিয়ে নিমদী লঞ্চঘাটের দক্ষিণ পাশে ইটভাটার কাছে নিয়ে নোঙর করে রাখেন তাঁরা। খবর পেয়ে কৃষক মানিক ব্যাপারী সেখানে গিয়ে ট্রলারসহ তরমুজ ফেরত চাইলে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাইফুল ও তাঁর লোকজন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মানিক ব্যাপারী ও তাঁর ছেলে সাগরকে মারধর করে তরমুজ অন্য ট্রলারে উঠিয়ে নিয়ে যান সাইফুল। পরে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে ট্রলার ফেরত দেওয়া হয়।

এ ঘটনায় বুধবার রাত ১২টার দিকে মো. মানিক ব্যাপারী বাদী হয়ে মো. সাইফুল ইসলামসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আরও ২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে বাউফল থানায় মামলা করেন। ওই রাতেই পুলিশ সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সাইফুলের বিরুদ্ধে আগে থেকে দুটি মাদক মামলা, চাঁদাবাজিসহ অন্তত ছয়টি মামলা আছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লুট হওয়া পাঁচ শ তরমুজ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আশা করছি খুব কম সময়ের মধ্যে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পুলিশকে গুলি ছোড়া সাজ্জাদ কেন ধরা পড়ছে না, যা জানা গেল
  • বাউফলে তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাইয়ের মামলায় যুবদল কর্মীসহ গ্রেপ্তার ৩