Samakal:
2025-03-03@20:28:29 GMT

শিশুখাদ্যে ভ্যাট বৃদ্ধি কেন?

Published: 31st, January 2025 GMT

শিশুখাদ্যে ভ্যাট বৃদ্ধি কেন?

সম্প্রতি বাংলাদেশে শিশুখাদ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা আলোচনা ও সমালোচনা হচ্ছে। পুষ্টিকর খাদ্যকে আরও ব্যয়বহুল করে তোলা শুধু পরিবারগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করবে না; এটি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাঠামোতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রেক্ষাপটে শিশুখাদ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গভীর উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বিক্রয়কর্মী ও বেকারি মালিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, ভ্যাট বাড়ানোর প্রভাব শুধু পণ্যের দাম বাড়িয়েই থেমে থাকছে না; বরং বাজারে ভেজাল পণ্য এবং অপ্রয়োজনীয় কাটছাঁটের মতো সমস্যাও বাড়ছে। ফলে এ সংকট শুধু অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয়; সামাজিক ও নৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও মূল্যায়ন করা জরুরি।
পুষ্টিহীনতায় শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সক্ষমতা কমে যায়। শিশুখাদ্যে অতিরিক্ত কর আরোপ করা হলে তা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যেতে পারে, যা শিশুদের পুষ্টি চাহিদা পূরণে বাধা সৃষ্টি করে। একটি গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের ৩৫.

৫% শিশু স্টান্টিং তথা বৃদ্ধিজনিত সমস্যায় ভুগছে। ২২% শিশু ওয়েস্টিং (অতিরিক্ত দুর্বলতা) সমস্যার শিকার ও ৪০% শিশু আয়রন ঘাটতিজনিত সমস্যায় ভুগছে।
অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে শিশুখাদ্যের মূল্য এমনিতেই বেশি। তদুপরি ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পরিস্থিতি আরও খারাপ করবে। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে শিশুখাদ্যের দাম অনেক কম এবং ভ্যাটমুক্ত কিংবা ভ্যাটের পরিমাণ সীমিত। এ ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। মালয়েশিয়ায় শিশুদের পুষ্টিকর খাদ্য ভ্যাটমুক্ত। দেশটির সরকার ভর্তুকির মাধ্যমে কম আয়ের পরিবারের জন্য বিশেষ পুষ্টি কর্মসূচি পরিচালনা করে। ইউনিসেফের মতে, পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা গেলে অপুষ্টিজনিত সমস্যার কারণে স্বাস্থ্য খাতে যে অতিরিক্ত এক বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়, তা কমানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাজস্ব বাড়ানোর জন্য বিকল্প পন্থা গ্রহণ করা সম্ভব। বিলাসপণ্য, উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের ওপর কর বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানো যেতে পারে। কিন্তু শিশুদের পুষ্টির মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে অতিরিক্ত ভ্যাটের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার মতো এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত নয়। শিশুদের সুরক্ষা ও পুষ্টি নিশ্চিত করা কেবল সামাজিক বা নৈতিক দায়িত্ব নয়, এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক বিনিয়োগ। শিশুখাদ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির মতো পদক্ষেপ শুধু বর্তমান প্রজন্মের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও ক্ষতিকর। সরকারের উচিত, শিশুখাদ্যে ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা। এটা শুধু জনকল্যাণের জন্য নয়, বরং সরকারের দীর্ঘমেয়াদি সুনাম, গ্রহণযোগ্যতা ও আস্থা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।

প্রজ্ঞা দাস 
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, 
ইডেন মহিলা কলেজ 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য র ওপর সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ