কুমিল্লা জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি উপজেলা নাঙ্গলকোট। জেলা শহর থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দূরে উপজেলাটির অবস্থান। ১৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে উপজেলাটি গঠিত। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পার হলেও এখনও ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন হয়নি উপজেলাটিতে। এতে নানা সময়ে অগ্নিকাণ্ডে উপজেলার বিভিন্ন বাজার, বসতবাড়ি, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আসতে আসতে ততক্ষণে সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। নাঙ্গলকোট বাজারের ব্যবসায়ী মো.

আলমগীর হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময়ে নাঙ্গলকোটে অগ্নিকাণ্ডে কোটি কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। ফায়ার সার্ভিসের টিম পাশের উপজেলা লাকসাম অথবা চৌদ্দগ্রাম থেকে আসতে আসতে পুড়ে সব ছাইয়ে পরিণত হয়। এ পর্যন্ত আমার জানা মতে, পৌরবাজারসহ আশপাশে উপজেলার বাজারগুলো এবং অনেকের বাড়িতে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে ছাইয়ের ওপর পানি ছিটিয়ে চলে যায়। তাই আমরা নাঙ্গলকোটে ফায়ার সার্ভিস স্থাপনের দাবি জানাই।
উপজেলার হেসাখাল ইউনিয়নের মেটুয়া গ্রামের বাসিন্দা মুহিব্বুল্লাহ আল হুসাইনী বলেন, নাঙ্গলকোটে ফায়ার সার্ভিসের অভাবে কিছুদিন পরপর অগ্নিকাণ্ডের অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটছে। পার্শ্ববর্তী লাকসাম ও চৌদ্দগ্রাম থানা থেকে দমকল কর্মী আসতে আসতে সব পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। এই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি যেন দেখার কেউ নেই। আমরা এর যথাযথ প্রতিকার চাই।
সাম্প্রতিককালে নাঙ্গলকোটে পরপর বেশ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। অথচ তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই নাঙ্গলকোট উপজেলাবাসীর প্রাণের দাবি, নাঙ্গলকোটে ফায়ার সার্ভিস স্থাপন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে নাঙ্গলকোটের জনগণ।

রবিউল হোসাইন রাজু: মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিক, সমকাল

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ঙ গলক ট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বাণিজ্য মেলার শেষ দিনে ছিল উপচে পড়া ভিড়

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার পর্দা নেমেছে শুক্রবার। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এদিন সকাল থেকেই মেলায় ক্রেতাদের আনাগোনা শুরু হয়। দুপুরের পর মেলা প্রাঙ্গণে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড় বাড়ে। বিকেল শেষে সন্ধ্যায় সে ভিড় রূপ নেয় জনসমুদ্রে। এমন ভিড়ের মধ্যে ছিল শেষ মুহূর্তের কেনাকাটার ধুম।

বিকেলে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন আহমেদ আনুষ্ঠানিকভাবে মেলার সমাপ্তি ঘোষণা করেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মেলায় থাকা উদ্যোক্তাদের মাঝে বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে পুরস্কার বিতরণ করেন তিনি। এবার বিভিন্ন ক্যাটেগরিতে ২২টি প্রতিষ্ঠান প্রথম পুরস্কার, ১৬টি দ্বিতীয় এবং ১৩টি প্রতিষ্ঠান তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছে। এর আগে ১ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বাংলাদেশ চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। 

সরেজমিন দেখা যায়, শুক্রবার দুপুর ২টার পর থেকে মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীর ঢল নামে। টিকিট কাউন্টারগুলোতে ছিল মানুষের দীর্ঘ সারি। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। মেলা চলে রাত ১০টা পর্যন্ত।

বাণিজ্য মেলায় আগত হাটাব এলাকার দর্শনার্থী মামুন মোল্লা বলেন, খুবই ভালো লেগেছে। তবে মেলার ভেতরে ফুটপাতে অনেক হকার বসিয়ে মেলার মানকে একেবারে নষ্ট করে ফেলেছে। এদের জন্য হাঁটতে অসুবিধা হয়।

মেলায় বিদেশি স্টল কাশ্মীরি শাল হাউসের কর্মী আব্দুল মালেক বলেন, এবার বিক্রি ভালো। দর্শনার্থীও অনেক বেশি।

সায়মন ফেব্রিক্সের বিক্রয় প্রতিনিধি রাজিব নয়ন বলেন, মেলার শুরুতে একটু হতাশ হলেও শেষটা খুব ভালো ছিল। বেচাবিক্রি বেশ ভালো হয়েছে।

মিয়াকোর মার্কেটিং অফিসার আব্দুর রহমান বলেন, আমাদের ব্যবসা ও প্রচার এবং জনগণের সাড়া– সব বিষয় পজিটিভ। ঢাকার ভেতর থেকে রূপগঞ্জেই আমাদের জন্য ভালো হয়েছে।

মেলার খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ করে আক্কাস আলী নামে এক দর্শনার্থী বলেন, বাণিজ্য মেলার সবই ভালো ছিল, কিন্তু খাবারের মান তেমন ভালো না; দাম তিন থেকে চার গুণ বেশি।

এদিকে শুক্রবার কয়েক লাখ দর্শনার্থীর চাপ সামাল দিতে গলদঘর্ম ৭০০ পুলিশ সদস্য ও শতাধিক সেনা। এর মধ্যে দুপুরে তুচ্ছ ঘটনায় ঈগলু আইসক্রিম স্টলের বিক্রয়কর্মী ও মেলার প্রবেশদ্বার ঠিকাদার নিয়োজিত কর্মীদের মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে মেলায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়। এ ঘটনায় সাংবাদিকরা ছবি তুলতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন। পরে তাদের ওপরও হামলার ঘটনা ঘটে। ঈগলু আইসক্রিম স্টলের কর্মচারীদের হামলায় যমুনা টিভির রূপগঞ্জ প্রতিনিধি জয়নাল আবেদীন জয় আহত হন।

রূপগঞ্জ থানার এসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মানুষ যে যেভাবে পারে, এলোমেলোভাবে মেলায় প্রবেশ করে। এর মধ্যেও সব ঠিক রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছি।

এবারের মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হন। মেলায় ৯টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এ ছাড়া দেশি ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি হলের বাইরে মিলে মোট ৩৬১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন ছিল। এবারের মেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্মৃতিধারণ সংবলিত তারুণ্যের বাংলাদেশ, ৩৬ জুলাই, মুগ্ধ কর্নারগুলো ছিল তরুণদের আগ্রহের স্থানে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ