বিদ্যালয়ে আগুনে পুড়ে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, ৮ শিক্ষক বরখাস্ত
Published: 31st, January 2025 GMT
চাঁদপুরের কচুয় উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগুনে দগ্ধ হয়ে সামিয়া রহমান নামে এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় আট শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষককে বরখাস্তের জন্য বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্তের তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহার ইয়াসমিন।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকরা হলেন- উপজেলার তাতৈয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফারুক হোসেন, জসিম উদ্দিন, সাহিদা আক্তার, সুমি আক্তার, রোকেয়া আক্তার, কাজী শাকিরীন, ফয়েজুন নেছা ও ফাতেমা আক্তার।
আরো পড়ুন:
মিরপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
সব স্কুলে ভর্তি ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ
এলাকাবাসী জানান, গত ২১ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় খেলতে গিয়ে ময়লার স্তূপের আগুনে দগ্ধ হয় শিক্ষার্থী সামিয়া রহমান। ঘটনার পাঁচদিন পর গত ২৬ জানুয়ারি মারা যায় সে। এ ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। তাদের দেওয়া প্রতিবেদন ভিত্তিতে শুক্রবার বিকেলে আট শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জেলা শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহার ইয়াসমিন বলেন, “সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে ওই বিদ্যালয়ের ১০ শিক্ষকের মধ্যে ৮ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সবার লিখিত বক্তব্য নেওয়া হয়। এটি একটি দুর্ঘটনা। এতে শিক্ষকদের অবহেলা ছিল। এ কারণে তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী আট শিক্ষককে দায়িত্বে অবহেলার জন্য সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রধান শিক্ষক মাসুক হাসানকে বরখাস্তের জন্য বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে সুপারিশ করা হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “সুমন মজুমদার নামে এক কর্মচারীর (দপ্তরি) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ আরো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
নিহত শিশু সামিয়ার চাচা মাহমুদুল হাসান বলেন, “সামিয়ার শরীরে আগুন লাগলেও কোনো শিক্ষক পানি দেননি বা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেননি। তারা শরীরের জামা কাটার জন্য কাঁচি আনতে বাড়িতে গিয়েছিলেন। এতে সে (সামিয়া) আরো বেশি দগ্ধ হয়। এমনকি তার বাড়িতেও খবর দেওয়া হয়নি। পরিবারকে না জানিয়ে ওই অবস্থায় সামিয়াকে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানেই সামিয়ার মৃত্যু হয়।”
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বরখ স ত শ ক ষকক র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি-যুবদল নেতাদের শাস্তি দাবি গ্রামবাসীর
বিএনপি ও যুবদলের নেতাদের বিরুদ্ধে জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার ও অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগ তুলে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার কড়িহাতা ইউনিয়নের দিঘিরকান্দা চৌরাস্তায় এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে বক্তারা অবিলম্বে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এদিকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিক্ষোভকারীদের জবাবদিহি চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি বেলায়েত হোসেন।
শুক্রবারের মানববন্ধনে কড়িহাতা ইউনিয়নের দিঘিরকান্দা, কোড্ডাইদ ও পাকিয়াব এলাকার শতাধিক ব্যক্তি অংশ নেন। দিঘিরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ও কড়িহাতা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. সিরাজউদ্দিন অভিযোগ করেন, তাঁর বাবা মৃত আহম্মদ আলী, একই গ্রামের ওহাবিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মো. সিরাজ উদ্দিন ও বড়হর গ্রামের মাহাবুবুল আলম দিঘিরকান্দা চৌরাস্তা এলাকায় বড়হর গ্রামের মো. আনছার আলীর কাছ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে ৩৫ শতাংশ জমি কিনেছিলেন। ৫ আগস্টের পর ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন, তাঁর বড় ভাই মো. ইকবাল হোসেন ও অ্যাডভোকেট মো. তোফাজ্জল হোসেন, ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মফিজউদ্দিন, ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি আমির হোসেন ও সহসভাপতি মো. বাদল মিয়ার নেতৃত্বে জমিটি দখলের পাঁয়তারা চলছে। কয়েক দিন আগে তারা সেখানে ইট, বালু ও পিলার স্থাপন করতে যান। পরে এলাকাবাসীর বাধার মুখে তারা সরে যান। ওই জমিটি যেভাবেই হোক দখলের হুমকি দিচ্ছেন ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মফিজউদ্দিন।
কোড্ডাইদ গ্রামের ব্যবসায়ী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি ও তাঁর ভাইদের কাছে এলাকাবাসী অনেকটাই জিম্মি। ১ নম্বর ওয়ার্ডে কোনো কিছু করতে হলে তাদের অনুমতি ছাড়া সম্ভব নয় বলে তারা প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়েছেন।
পাকিয়াব গ্রামের সাইফুল ইসলাম জানান, কিছুদিন আগে একটি পারিবারিক কলহ মীমাংসার আশ্বাস দিয়ে ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বাবুল মিয়া ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা
দাবি করেন।
দিঘিরকান্দা মোড়ের ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদলের নেতাদের ছত্রছায়ায় এলাকায় ব্যাপকহারে মাদকের কারবার চলছে। অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি কেটে আশপাশের ইটের ভাটায় সরবরাহেও নেতৃত্ব দিচ্ছেন তারা। এসব কারণে এলাকার রাস্তাঘাট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এলাকাবাসী নিরুপায় হয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এসব সমস্যার প্রতিকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
এসব অভিযোগের সবই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. বেলায়েত হোসেন। তিনি বলেন, জমি দখল, চাঁদাবাজি, মাদক কারবার বা মাটি কাটায় তিনি, তাঁর দল বা অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতাকর্মীর সম্পৃক্ততা নেই। এসব বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলকারীদের কাছে নেই। এজন্য বিক্ষোভকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
কড়িহাতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম এ বিষয়ে সমকালকে বলেন, তাদের কাছে এমন অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ নিয়ে কেউ আসেনি। অভিযোগ তদন্ত করে কারও দোষ পাওয়া গেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবেন।