বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আখ্যা দিয়ে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলায় অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে শহরের ব্যাংকপাড়া নতুন স্কুল রোডে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ৫ জনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় রাতে মামলার পর পুলিশ ইফতি মাহমুদ নামে এক যুবক ও তাঁর বাবা কবির মাহমুদকে গ্রেপ্তার করে। তাদের গতকাল শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন– বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি অ্যান্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সেলিম রেজা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মুয়াজ বিল্লাহ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের মো.

ইমরান, কৃষি বিভাগের মাহাদি হাসান তাহমিদ, ইয়াজদানী আলী, আসাদুল্লাহ গালিব ও আবদুল্লাহ আল খালিদ।

আহত শিক্ষার্থীরা জানান, হামলাকারীরা স্থানীয় সন্ত্রাসী। বৃহস্পতিবার রাতে ‘তোরা সমন্বয়ক, তোরা আন্দোলন করেছিস’ বলে সন্ত্রাসীরা তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে অতর্কিত হামলা চালায়। স্থানীয় সন্ত্রাসী ইফতির নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে বলে জানান তারা।

আহত শিক্ষার্থী তাহমিদ বলেন, আমরা গোপালগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় (নতুন স্কুল) সড়কে বাড়ি ভাড়া নিয়ে মেস করে থাকি। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ কারণে আমরা সন্ত্রাসীদের টার্গেটে পরিণত হই। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সন্ত্রাসীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। 

এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে গতরাতেই সহপাঠী ও শিক্ষকরা আহতদের দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে শতাধিক শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জ সদর থানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এর মধ্যেই তিনজনের নাম উল্লেখ এবং ১৫-২০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন আহত ছাত্র সেলিম রেজা। পরে রাতেই পুলিশ অভিযুক্ত ইফতি ও তার বাবাকে গ্রেপ্তার করলে শিক্ষার্থীরা থানার সামনে থেকে সরে যান।

সদর থানার ওসি মীর সাজেদুর রহমান জানান, ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমন বয়ক গ প লগঞ জ গ প লগঞ জ দ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ক্রাচ হাতে, হুইলচেয়ারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের মানববন্ধন

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা সুচিকিৎসার দাবিতে ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের (পঙ্গু হাসপাতাল) সামনে দেড় ঘণ্টা মানববন্ধন করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত শতাধিক আহত ব্যক্তি এই মানববন্ধনে অংশ নেন। তাঁরা বর্তমানে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই মানববন্ধনে পাশের চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরাও অংশ নেন।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, পঙ্গু হাসপাতালে বিভিন্ন তলায় চিকিৎসাধীন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুলিতে আহত ব্যক্তিরা হুইল চেয়ার ও ক্রাচে ভর করে হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে পাশের জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা এই মানববন্ধনে যোগ দেন।

মানববন্ধনে আহত ব্যক্তিরা বলেন, গুলিতে আহত হয়ে তাঁরা মাসের পর মাস পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু তাঁরা ঠিকমতো চিকিৎসা পাচ্ছেন না। সুচিকিৎসার অভাবে তাঁরা সুস্থ হচ্ছেন না। সুচিকিৎসা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা আগামী শনিবার থেকে প্রতিদিন পঙ্গু হাসপাতালের বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া মাদ্রাসা ছাত্র মো. রাফি হোসাইন বলেন, ১৮ জুলাই শ্যামলী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর করা গুলির স্প্লিন্টার তাঁর ডান পায়ে লাগে। পরে ৫ আগস্ট সরকার পতনের আন্দোলনে মোহাম্মদপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর করা গুলি তাঁর দু হাতে লাগে। তাঁর দুই হাতেই ২৫০ স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়েছে। এরপর থেকে তিনি পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্প্লিন্টারের অসহনীয় যন্ত্রণা নিয়ে তাঁর দিন কাটছে। চিকিৎসকেরা ব্যথানাশক ট্যাবলেট দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আর কত দিন ব্যথানাশক ওষুধ খাবেন-এই প্রশ্ন রাখেন।

রাফি বলেন, সুচিকিৎসার দাবিতে আগামী শনিবার থেকে তাঁরা প্রতিদিন বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।  

এ ব্যাপারে পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক মো. আবুল কেনান আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি ব্যস্ত আছেন। পরে কথা বলবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্রাচ হাতে, হুইলচেয়ারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের মানববন্ধন
  • জাতীয় ইস্যু করার দাবি শ্রম সংস্কার কমিশনপ্রধানের
  • রানা প্লাজা ধসে নিহতদের স্মরণে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন
  • স্ট্রোক করে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতাল যাওয়ার পথে দুর্ঘটনা, প্রাণ গেল রোগীর