আমার সম্মান নিয়ে কেউ খেলবে, এটা কখনো ছাড় দেই না
Published: 31st, January 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্যামেন্ট ইস্যু ছাড়াও আলোচনার কেন্দ্রে আছে ফিক্সিংও। বেশ কিছু ক্রিকেটার সন্দেহের তালিকায় আছেন এমন সংবাদ মাঝপথ থেকে শোনা যাচ্ছে। এর মধ্যে একটি গণমাধ্যম ১০ ক্রিকেটারের নাম প্রকাশ করে একটি প্রতিবেদন করে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, তাদের ফিক্সিং সন্দেহে জেরা করা হচ্ছে।
তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও বিসিবির দূর্নীতি দমন সংস্থা (আকসু) কোনো ক্রিকেটারের তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে কোথাও প্রকাশ করেনি। সন্দেহের তালিকায় থাকা ক্রিকেটারদের মধ্যে একজন মোহাম্মদ মিথুন। যিনি এবার চিটাগং কিংসকে দিচ্ছেন নেতৃত্ব।
এমন সংবাদ দেখার পর মিথুন হতভম্ব হয়ে যান। এরপর শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন মিথুন। তাতে কড়াভাবে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আইনি পথে হাঁটার আভাসও দিয়েছেন চিটাগংয়ের অধিনায়ক।
আরো পড়ুন:
শরিফুলের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং, ৫ রানে ৪ উইকেট
বিপিএলে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক ইস্যুতে ‘সত্যানুসন্ধান কমিটি’
“বাসে ওঠার পরে আমি নিউজটা দেখি, আপনি যদি প্রতিক্রিয়া জানতে চান আমার কিন্তু একবারও মন খারাপ হয়নি বা আমার ভেতরে কোনো শঙ্কা কাজ করেনি। কারণ আমি জানি আমি কী। আমার ভেতরে কী আছে আমার থেকে ভালো কেউ জানে না।”
“বিষয় হচ্ছে আমি জানি আমি কী, আমার পরিবার, বন্ধুরা জানে কিন্তু দুনিয়া জানে না আমি কী। আপনার একটা নিউজের কারণে কিন্তু আমার সম্মানহানি হচ্ছে। আমার যে ১৫ বছরের সম্মান, সেই সম্মানটা নষ্ট হচ্ছে। আপনি যদি একটা ভিউয়ের জন্যে নিউজ করেন, আপনি হয়ত ৫০ হাজার টাকা ইনকাম করতে পারেন কিন্তু এটা আমার কাছে ৫০ কোটি টাকার থেকেও বেশি। আমার মানহানি মানে.
বিপিএলের প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে আইসিসি অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের (আকসু) একজন করে প্রতিনিধি আছেন। চিটাগংয়ের সঙ্গে থাকা সেই প্রতিনিধি মিথুনের কাছে এসে তাকে আইনি পথে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
“উনি (আকসু প্রতিনিধি) এসে আমাকে বলেছে ভাইয়া আমি খুব লজ্জিত অনুভব করছি। আপনি এটার বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যান। ওনার যদি আমার প্রতি ওতটুকু বিশ্বাস না থাকত তাহলে উনি এ কথা বলতো না। আমার বিশ্বাস তো আমি জানি কী বিশ্বাস আছে। কিন্তু আমাদের দলের সঙ্গে যে প্রতিনিধি দেওয়া আছে ওনারও আমার প্রতি কতটুকু বিশ্বাস উনি নিজেই বলছে আপনার জন্য...আমি কিন্তু উনার কাছে যাইনি, উনি এসেছে আমার কাছে। আমি যদি অপরাধী হই বা আমার মাঝে যদি এমন কিছু উনি দেখে তাহলে অবশ্যই উনি এসে আমাকে এই কথা বলতো না।”
মিথুনের নেতৃত্বে চিটাগং কিংস নিশ্চিত করেছে প্লে-অফ। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) নিজেদের শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে। ব্যাট হাতেও মিথুন সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৩২.৩৭ গড়ে চিটাগংয়ের সেরা তিন ব্যাটারের মধ্যে তৃতীয় অবস্থানে আছেন তিনি।
ঢাকা/রিয়াদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘রেখাচিত্রকে অবহেলা করা উচিত নয়’
lশৈশবের প্রিয় মুহূর্ত?
তখন আমি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করি। নিয়মিত স্কুলে যাই। তখনকার পড়াশোনার পদ্ধতি ছিল ভিন্ন রকমের। এখনকার শিক্ষা পদ্ধতি আবার অন্যরকমের। ড্রয়িং ক্লাসে আমাদের ব্ল্যাকবোর্ডে চক দিয়ে গাছ, ফুল, পাখি, নদী-নালা, প্রাণীসহ বিভিন্ন ধরনের আঁকাআঁকি করে দিতেন শিক্ষক। আমরা সেসব দেখে দেখে নিজেরা আঁকতাম। স্কুলে একবার একটি তাজমহলের ছবি আঁকি। যেহেতু আমি ছবি আঁকতে ভালোবাসতাম, তাই আগ্রহ থেকেই এটা আঁকি। তখন জাপানি গিটার কালার পাওয়া যেত, অন্য কোনো কালার পাওয়া যেত না। সেই তাজমহলের ছবি দেখে আমাকে পুরস্কৃত করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। আমি যে কি আনন্দিত হই তা বলে বুঝাতে পারব না;
lযখন আপনি নবীন চিত্রশিল্পী
নবীন চিত্রশিল্পী হিসেবে বেশ স্মৃতি আছে। তখন শিল্পকলা একাডেমিতে, ঢাকা আর্ট কাউন্সিলে একটা গোল বিল্ডিং ছিল। সেখানে সব প্রদর্শনী হতো। ওখানে নবীন শিল্পী, ঢাকা বা পাকিস্তান থেকে ছবি আসত। সেখানে আমরা যেতাম, প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করতাম। তারপর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আগে ছিল পাকিস্তান আর্ট কাউন্সিল। সেই কাউন্সিলের উদ্যোগে নবীন শিল্পীর প্রদর্শনী পরবর্তী পর্যায়ে শুরু করা হয়। আমরা সেখানে নবীন চিত্রশিল্পী হিসেবে যোগ দিতে শুরু করলাম। তারপরই জাতীয় আর্ট এক্সিবিশন হলো। যার পরিচালক ছিলেন সুবীর চৌধুরী।
স্মরণীয় স্মৃতি
আমাদের সময় ডিগ্রি ছিল, অনার্স ছিল না। তখন আমি তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করি। ফার্স্ট ইয়ার, সেকেন্ড ইয়ার, থার্ড ইয়ার, ফোর্থ ইয়ার হোল ক্লাসে আমি বেস্ট অ্যাওয়ার্ড পাই। সেটা আমার জীবনের বড় স্মৃতি একটা। যে স্মৃতির ফলে সামনে এগোতে আরও বেশি সাহস পাই।
আড্ডা-তর্কে সঙ্গী যারা
আর্ট কলেজের সহপাঠী বন্ধু ছিল শহীদ কবির, মঞ্জুরুল হাই, বিজয় সেন, খুশী কবির, সেতারা ইব্রাহীম, ফরিদা শওকত, শিরিন সুলতানা, সৈয়দ আব্দুল্লাহ খালিদসহ আরও অনেকেই। আমরা বিভিন্ন আড্ডা দিতাম। নিজেদের চিন্তাধারার কথা, ভাববিনিময় নিজেদের ভেতর শেয়ার করতাম। ছবির দুটো ধারা আছে। একটি ক্রিয়েটিভ আর্ট, আরেকটি হলো ইলাস্ট্রেটিভ। আমরা সাধারণত ক্রিয়েটিভ আর্টের দিকে ঝুঁকতাম।
ভাবনাদর্শকে প্রভাবিত করেছেন যিনি
আমিনুল ইসলাম মূলত ভাবনাদর্শকে প্রভাবিত করেছে। তারপর আমার নিজস্ব স্টাইল ডেভেলপ করে গেছি। জল রংয়ে প্রভাব ছিল আনোয়ারুল হক, রফিকুন নবী ও মোস্তফা মনোয়ারের।
আপনার প্রথম চিত্রপ্রদর্শনী
১৯৮৭ সালে চারুকলার ইনস্টিটিউটের দুটো গ্যালারিতে প্রথম প্রদর্শনী করি।
আপনার প্রিয় চিত্রশিল্পী
গুরু হিসেবে ফলো করতাম দেশের বাইরে পাবলো পিকাসো, সেজান, ভ্যান গগ, রোথকো, হুসাইন। দেশের ভেতর এসএম সুলতান, জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, মুর্তজা বশীর, আমিনুল ইসলাম। তারা অসাধারণ কাজ করেছেন। তাদের পেইন্টিং অনন্য। জয়নুল আবেদিন তো মাস্টার ড্রয়িং কাজ করেছেন। এবস্ট্রাক্টে যখন প্রবেশ করি, তখন মোহাম্মদ কিবরিয়ার কথা বলতে হয়। তিনি আমার মেইনলি গুরু বলতে পারেন। তাঁর কাজ আমাকে বেশ অনুপ্রাণিত করত। তিনি জাপান থেকে ফিরে আসাতেই এ ধরনের কাজ করতেন। বাংলাদেশে এবস্ট্রাক্ট পেইন্টিংয়ে সুপারমাস্টার তিনি ছিলেন।
lএখন যা আঁকছেন
একজন চিত্রশিল্পীর মূল ড্রয়িং। একজন চিত্রশিল্পী যত ড্রয়িং করতে পারবেন, তিনি তত ভালো ছবি আঁকতে পারবেন। ভাঙচুর করতে পারবেন। ড্রয়িং করি রেগুলার। সেটাকে বেজ করে অন্য কিছু এঁকে থাকি। আমি ফিগারের লাইন ড্রয়িং করছি। সাবজেক্ট নিয়ে কাজ করছি। প্রত্যেক শিল্পীর ড্রয়িংটাকে নিয়েই কাজ করতে হবে। একজন চিত্রশিল্পীর ড্রয়িংকে অবহেলা করে চলা উচিত না। আমি এখন ড্রয়িং নিয়ে কাজ করছি। ড্রয়িংকে বেজ করে এবস্ট্রাক্ট পেইন্টিংসহ অন্যকিছু করছি।
lপ্রিয় উদ্ধৃতি
‘সবার উপরে মানুষ এবং প্রকৃতি’
গ্রন্থনা: ফরিদুল ইসলাম নির্জন