ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় নিয়ে ফরিদপুরের দুই যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি হত্যার পর পরিবারের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপে তাদের ছবি পাঠানো হয়। 

নিহত দুই যুবক হলেন- ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের কুমারখালী গ্রামের মিন্টু হাওলাদারের ছেলে হৃদয় হাওলাদার (২৪) ও মজিবর হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (২৬)। 
 
হৃদয়ের বাবা মিন্টু হাওলাদার বলেন, দু’মাস আগে স্থানীয় আবু তারা মাতুব্বর, আলমাছ ও আনোয়ারের মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠাই। ছেলেকে প্রথমে দুবাই সেখান থেকে সৌদি আরব তারপর লিবিয়া নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে হৃদয়কে হত্যা করা হয়েছে।

হৃদয়ের বড় ভাই মোখলেছুর রহমান বলেন, ৪/৫ দিন ধরে হৃদয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না। দালালরা শুক্রবার দুপুরে আমার ভাইয়ের লাশের ছবি পাঠিয়েছে। ১৬ লাখ টাকা দেওয়ার পরও বিদেশ থেকে ফোন করে আরও টাকা দাবি করছিল পাচারচক্র। টাকা না দেওয়ায় ওরা আমার ভাইকে খুন করেছে। 

একই গ্রামের ফয়সাল হোসেন বলেন, রাসেল নামের আরও একজনকেও লিবিয়াতে হত্যা করা হয়েছে। ওরা একই গ্রামের বাসিন্দা। ওই মানবপাচার চক্র এভাবে মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায় করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে। টাকা না দিলেই তাদের সাথে খারাপ কিছু ঘটানো হয়। কখনও নির্যাতন করে আবার কখনও হত্যা করে।

ফরিদপুরের ভাঙ্গা থানার ওসি মো.

মোকসেদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গার দুটি ছেলেকে লিবিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় এখনও লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ওই পরিবারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করছি। তাদের সঙ্গে  আলোচনা করে দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

তুফানের পর বনলতা সেন


‘আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন/ আমারে দু-দণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন’– কবি জীবনানন্দ দাশের সুবিখ্যাত কবিতা ‘বনলতা সেন’। এ কবিতা নিয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের কোনো অন্ত নেই। কে এই সুন্দরী নারী? কী তাঁর পরিচয়? নাটোরের বনলতা সেন নামের কোনো মায়াবতীর সঙ্গে কবির কি আদৌ পরিচয় ছিল? বনলতা সেন বিষয়ে আজীবন এই নীরবতা বজায় রেখেছেন কবি; মনের অজান্তেও কখনও কারও কাছে বনলতা সেনকে নিয়ে বলেননি কোনো কথা। কবির চরিত্র অনাবিষ্কৃত থাকলেও এবার পর্দায় আসছে ‘বনলতা সেন’ নামে একটি সিনেমা। মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের পরিচালনায় এতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী ও মডেল মাসুমা রহমান নাবিলা। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরই এ সিনেমা মুক্তি পাবে। 

বনলতা সেনের খোঁজে...
নাবিলার সর্বশেষ অভিনীত সিনেমা ‘তুফান’ মুক্তি পেয়েছে গত বছর ঈদুল আজহায়। রায়হান রাফী পরিচালিত এ সিনেমায় তাঁর অভিনীত ‘জুলি’ চরিত্রটি বেশ প্রশংসিত হয়েছে। শাকিব খানের সঙ্গে তাঁর নতুন রসায়নও দর্শক গ্রহণ করেছেন। তাদের খুনসুটি, ঝগড়া, অভিমান-অনুযোগ, প্রেমের দৃশ্যগুলো দর্শককে বেশ আনন্দ দিয়েছে। এর আগে তিনি শেষ করেছেন অনুদানের সিনেমা ‘বনলতা সেন’-এর কাজ। একেবারে নীরবেই সিনেমার দৃশ্যধারণ হয়েছে । এটি তাঁর অভিনয় ক্যারিয়ারে একটি গুরুত্বপূর্ন কাজ বলে মনে করছেন তিনি।  সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে নাবিলা বলেন, ক্যারিয়ারের শুরু থেকে বেশ বাছবিচার করে সিনেমার কাজে হাত দিয়েছি। আমার অভিনীত তৃতীয় সিনেমা ‘বনলতা সেন’-এর গল্প অসাধারণ।  নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বল বেশ যত্ন নিয়ে কাজটি শেষ করেছেন। অনেক বছর ধরে সিনেমার কাজ হয়েছে। আমার অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। আমি চাই, দর্শক পর্দায় কাজটি দেখুক। গল্প ও চরিত্র মিলে সিনেমাটি দর্শকের ভালো লাগবে– এ আশা করাই যায়।

একটি সূত্রে জানা গেছে,শুরুতে নাবিলাকে নির্মাতা শুধু চরিত্রের সারসংক্ষেপ দিয়েছিলেন। পরে পুরো স্ক্রিপ্ট পড়তে চান তিনি। নির্মাতা তাঁকে প্রথমে কম গুরুত্বপূর্ন চরিত্রের কথা বলছিলেন। কিন্তু বিরতির পর ওই ধরনের চরিত্র দিয়ে ফিরতে চাইছিলেন না এই অভিনেত্রী। 

অনেক দিন পর নাবিলাকেই ডাকলেন নির্মাতা। নিলেন অডিশন। পরে চরিত্রটি নাবিলার জন্য গুরুত্বপূর্ন চরিত্রটিই বরাদ্দ হলো। নাম শুনে অনেকেই মনে করছেন এটি সাহিত্যনির্ভর কাজ। কেউ কেউ বলেছেন,বনলতা সেন কবিতার ছায়া থাকবে সিনেমায়। বিষয়টি নিয়ে নাবিলা বলেন, ‘স্ক্রিপ্টে যখন চোখ রাখি তখনই মনে হয়েছিল, আমি কোনো সাহিত্য পড়ছি। আসলে এটি সাহিত্যনির্ভর কাজ নয়। বনলতা সেন কে, এটি তো আমাদের জানা নেই। কাল্পনিকই বলা চলে। কেউ কখনও তাকে দেখেননি। নির্মাতা যেভাবে বনলতা সেনকে কল্পনা করেছেন, সেভাবেই সিনেমায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সিনেমাটিকে আসলে কোনো জনরায় ফেলা যায় না। নির্মাতা নিজের মতো করে গল্প লিখেছেন। এটি একটি রহস্যময় সিনেমা। অনেক ইতিহাস আছে এতে। বনলতা সেন কে তা সিনেমা দেখার পর বোঝা যাবে। 

রান্নার আয়োজন 
অভিনয়, উপস্থাপনা, মডেলিংয়ে বছরজুড়েই ব্যস্ত সময় কাটে নাবিলার। মাঝে সিনেমার কাজে বেশি মনোযোগী ছিলেন তিনি। এ কারণে উপস্থাপনায় একেবারেই দেখা যায়নি এ অভিনেত্রীকে। ১০ বছর পর ফিরলেন উপস্থাপনায়। ‘রাঁধুনী রান্নাঘর, বাংলাদেশের সেরা ১০০ রেসিপি’ ও ‘স্টারশিপ ফিউশন কিচেন’ নাম দুটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন তিনি। গত বছরের শেষ দিকে আবারও ‘রাঁধুনী রান্নাঘর, বাংলাদেশের সেরা ১০০ রেসিপি’ নিয়ে ফিরেছেন নাবিলা।

‘রাঁধুনী রান্নাঘর, বাংলাদেশের সেরা ১০০ রেসিপি’ উপস্থাপনা প্রসঙ্গে নাবিলা বলেন, ‘বেশ বিরতির পর রান্নার অনুষ্ঠান দিয়ে উপস্থাপনায় ফিরতে পেরে ভালোই লাগছে। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে অনেক ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার হচ্ছে। নানা অনুষ্ঠানের ভিড়ে এর আইডিয়া ব্যতিক্রম। পাকা ১০০ রাঁধুনির রেসিপি দিয়ে সাজানো হয়েছে এ আয়োজন। মাছারাঙা টেলিভিশনে এর ১৩ পর্ব প্রচার হয়েছে। বেশ সাড়া পাচ্ছি আয়োজনটিতে। ‘স্টারশিপ ফিউশন কিচেন’ কাজটি পছন্দের বলে জানিয়েছেন নাবিলা। একটি দৈনিক পত্রিকার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও চরকিতে রান্নার এ আয়োজন দেখা যাচ্ছে। রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা বেশ উপভোগ করছেন বলে জানান এ অভিনেত্রী।

কাজের অবসরে
শুটিং না থাকলেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করেন নাবিলা। তিনি বলেন, ‘আমি ঘরকুনো মেয়ে। ঘরেই বেশি মন টেকে। যখন শুটিং করি, তখনও সন্তানকে সময় দিতে পারছি না বলে অপরাধবোধ কাজ করে। ওই সময় সন্তানের সঙ্গ খুব মিস করি। সংসার সামলে সময় যে কখন চলে যায়, টেরই পাই না।’ v

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অর্পিতা নন, ভয়াবহ দুর্ঘটনায় শিকার সালমানের আরেক বোন
  • সঙ্গীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলে করণীয়
  • ঈশ্বর ও মুনিয়া
  • আমাকে ছেড়ে দেন, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে টানাটানি কইরেন না: পরীমণি
  • তুফানের পর বনলতা সেন
  • যেভাবে আদা খেলে ব্রণ দূর হয়