মানসিক দক্ষতা বাড়ানোর কৌশল নিয়ে মেলায় আসিফ ইকবালের বই
Published: 31st, January 2025 GMT
সালটা ২০০৬। মানুষের মুখে মুখে ফিরেছিল একটি গান ‘যদি লক্ষ্য থাকে অটুট, বিশ্বাস হৃদয়ে, হবেই হবে দেখা, দেখা হবে বিজয়ে’। চ্যানেল আইয়ে সাড়া ফেলা গানের রিয়েলিটি শো ‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুজছে বাংলাদেশ’ এর টাইটেল ট্র্যাক ছিল এটি। শওকত আলী ইমনের সুরে গানটির কথা লিখেন গীতিকার আসিফ ইকবাল। সেই গানের শিরোনামেই এবার বইমেলায় বই প্রকাশ করছেন আসিফ ইকবাল। নাম ‘যদি লক্ষ্য থাকে অটুট’। তবে বইটি শোবিজ কাজ বিষয়ক নয়, ব্যক্তি জীবনে মানসিক দক্ষতা বাড়াতে নানা কৌশল ও অভিজ্ঞতা নিয়েই এই বই।
আসিফ ইকবাল ঢাকার শোবিজ ইন্ডাষ্ট্রির একজন সফল গীতিকার হলেও তার বড় পরিচয় তিনি বাংলাদেশের একজন সফল কর্পোরেট ব্যক্তিত্ব। দেশের খ্যাতিমান একাধিক প্রতিষ্ঠানে বহুমাত্রিক ও নানান উদ্ভাবনী কাজ করে প্রশংসিত হয়েছেন। সাফল্যের সঙ্গে এ অঙ্গনে তিন দশক পার করেছেন তিনি। সফল হওয়ার সেই অভিজ্ঞতার থেকেই প্রকাশ করেছেন নতুন বই ‘যদি লক্ষ্য থাকে অটুট’।
আসিফ ইকবাল বলেন, ‘আমরা মনে করি মানুষের শারীরিক ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা মানুষকে সফল করে। আসলে প্রত্যেকের সাফল্যের পেছনে মানসিক দক্ষতাই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। এই মানসিক দক্ষতা বিষয়টির প্রতি জোর দিয়ে সুন্দর বর্ণনার বই আমার চোখে খুব একটা পড়েনি। সে বিষয়টিকেই সুন্দর একটি ফর্মেটে দাঁড় করিয়ে বইটি লিখেছি। এই বইটি ফলো করলে প্রত্যেক মানুষ তার নিজ নিজ ক্ষেত্রে সফল হতে পারবেন বলে আমি বিশ্বাস করি।’
আসিফ ইকবাল আরও বলেন, যারা সফল হতে চান, কেবল তাদের জন্য এই বই তেমন কিন্তু নয়। তারা কর্মজীবনে সফল তারা সেই সাফল্য টিকিয়ে রাখতে চান তাদের জন্যও এই বই। আমার ৩০ বছরের ক্যারিয়ারের দেশ বিদেশর নানা অভিজ্ঞতার গল্প লেখায় উপস্থাপন করেছি। আমার বিশ্বাস যা সবার বেলাতেই কাজে লাগবে। ব্যক্তিকে তার মানসিক দক্ষতা বাড়িয়ে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছে দিতে এই বই প্রচুর পরিমাণে সহায়তা করবে।
বিশেষ করে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি শুরু করবেন, বা করছেন, কিংবা উদ্যোক্তা হবেন বা উদ্যোক্তা হিসেবে যাত্রা শুরু করেছেন তাদের কাঙ্খিত যাত্রায় পৌছে দিতে এই বই বড় নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে বলেই জানান লেখক।
বইটির প্রচ্ছদ করেছেন আনিসুজ্জামান সোহেল। অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত হচ্ছে বইটি। আপাতত নেওয়া হচ্ছে প্রি-অর্ডার। চাইলে +৮৮০১৭০৮১৬৬২৯৩ (হোয়াটসঅ্যাপ) প্রি-অর্ডার করে নিতে পারবেন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আট দশটা সাধারণ মানুষের মতো আমিও রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ: ফারিয়া
নুসরাত ফারিয়া। উপস্থাপিকা, মডেল ও চিত্রনায়িকা। দেশের পাশাপাশি কাজ করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও। এবার ঈদে মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত ভৌতিক ঘরানার সিনেমা ‘জ্বীন-৩’। যেখানে তার সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন অভিনেতা সজল। তাঁর অভিনীত নতুন সিনেমা ‘জ্বীন’সহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
প্রথমবারের মতো ভৌতিক গল্পের সিনেমায় কাজের অভিজ্ঞতা?
ভৌতিক গল্পে কাজের অভিজ্ঞতা ভৌতিকই বলব। ‘জ্বীন’ সিনেমার আগের সিকুয়ালগুলোর গল্প ভিন্ন। এবার পুরোপুরি সুপারন্যাচারাল ব্যাপার নিয়ে সিনেমার গল্প। আমরা সবাই জানি পৃথিবীতে মানুষ এবং জ্বীন বসবাস করে। আমাদের আশপাশে অনেক সময়ই অলৌকিক নানা ধরনের ঘটনা ঘটে, যেগুলো আমরা চোখে দেখি, কিন্তু মন থেকে বিশ্বাস করতে পারি না। কিন্তু ঘটে। এ সিনেমার দৃশ্যধারণ করতে গিয়ে আমাদেরও নানা ধরনের ঘটনা ঘটেছে। শুটিং সেটে অনেক ধরনের ইনসিডেন্ট হয়েছে, আবার ঠিকও হয়েছে।
শুটিংয়ের সময়কার ঘটনাগুলো?
আমাদের সিনেমার বেশির ভাগ দৃশ্য রাতে। যেহেতু ভৌতিক সিনেমা, তখন রাতের বেলা দেখা গেছে কেউ না কেউ অসুস্থ হচ্ছে। কেউ হুট করে পড়ে যাচ্ছে, মাথায় ব্যথা পাচ্ছে, ক্যামেরা রোল হচ্ছে না, লাইট কাজ করছে না, আবার একটু পর ঠিক হচ্ছে। রহস্য, ভয়ের আবহ আর অতিপ্রাকৃত অভিজ্ঞতায় মোড়া এ সিনেমার শুটিং হয়েছে কয়েকটি গা ছমছমে লোকেশনে। যেসব জায়গায় অপমৃত্যুর মতো ঘটনাও ঘটেছে। যখন শুটিংয়ে যেতাম, তখন মনের ভেতরে একটা ভয় থাকে, যে কোনো কিছু হতে পারে। এ সিনেমার শেষ দৃশ্যের শুটিং যে স্থানে করছিলাম, সেটি ছিল একশ বছর পুরোনো বটগাছের নিচে। জায়গাটা এমনই যে, রাতের অন্ধকার নামলেই গা ছমছম করে। পাশে শ্মশান আছে। আমার টিমের বিশেষ করে, হেয়ার স্টাইলিস্ট, মেকআপম্যান তারা আমাকে নিয়ে খুব চিন্তিত ছিল। শুটিংয়ে যাওয়ার আগে তারা রীতিমতো দোয়া পড়ে ফুঁ দিয়ে দিত। কামিজের ওড়নার নিচে একটা রসুন দিয়ে রাখতাম, বা কিছু একটা দিয়ে রাখত যেন কোনো ধরনের খারাপ কিছুর আছর না হয়। তারপরও পুরো টিম বেশ ইতিবাচকভাবে কাজ করেছেন।
এ সিনেমায় আপনার অভিনীত চরিত্রে চ্যালেঞ্জ কেমন ছিল?
টাইমিং। যখন আমি এ সিনেমার জন্য তৈরি হচ্ছিলাম। তখন আমাকে প্রযোজক আবদুল আজিজ ভাই বলছিলনে, ফারিয়াকে সবাই গ্ল্যামারাস চরিত্রে বেশি দেখেছে। এ সিনেমায় তাঁকে আমরা দেখতে চাই মফস্বলের ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া মেয়ে হিসেবে। যে একেবারে নাদুসনুদুস। ফলে এ চরিত্রে অভিনয়ের জন্য আমাকে কিছুটা ওজন বাড়াতে হয়েছে; যা আমার জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে সহশিল্পীদের কারণে আমি উতরে গেছি বলা যায়। সিনেমার কাজে যখন সহশিল্পীরা ভালো থাকেন, তখন কাজ করে আরাম হয়, ব্লকিংগুলো দারুণ হওয়ার কারণে দৃশ্যগুলোও খুব ভালোভাবে শেষ হয়ে যায়।
জ্বীন কেন দর্শকদের দেখা উচিত বলে মনে করেন
ভৌতিক গল্পের সিনেমা। এ ধরনের জনরায় আমাদের এখানে কাজ খুব বেশি হয় না। কারণ, একজন নির্মাতা বা প্রযোজকেরা সিনেমা নির্মাণের আগে শুরুতে থ্রিলার রোমান্টিক কিংবা অ্যাকশন গল্পের দিকে বেশি মনোযোগ দেন। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর দিকে তাকালে দেখবেন, তারা হরর কমেডি, হরর থ্রিলারের কাজ বেশি করেন। এ ধরনের গল্পের দর্শকও অনেক বেশি। কিছু মানুষ সত্যিকার অর্থেই ভৌতিক গল্পের কাজ দেখতে পছন্দ করেন। সুতরাং আমরা কেন সে ধরনের ভয়ের গল্পগুলো দেখাব না, বা নির্মাণ করব না। এই ঈদে মুক্তি পাওয়া থ্রিলার, প্রেম ভালোবাসার গল্পের বাইরে সিনেমা দেখতে চান, তাদের জন্য এ সিনেমাটি ভালো লাগবে বলে আমার বিশ্বাস।
আপনার চলচ্চিত্র যাত্রার এক দশক হলো…
আমার কাছে মনে হয়, আমি অনেক লাকি একজন মানুষ। আমি মাঝেমধ্যে ভাবি, একজন উপস্থাপিকা থেকে কীভাবে একজন অভিনেত্রী হয়ে গেলাম। এখনও ভাবি, একজন উপস্থাপিকা যে কিনা প্রতিদিন একটি ছোট্ট স্টুডিওর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করত। সেই থেকে সিনেমায় দশ বছরের যাত্রা। এটি কম নয়। আমার চাহিদার চেয়ে আমি অনেক বেশি পেয়েছি।
নেতিবাচক সমালোচনা কী মন খারাপ করে দেয়?
অব্যশই। নিজের সম্পর্কে নেতিবাচক কথা শুনলে মন খারাপ হয়। কারণ অন্য আট দশটা সাধারণ মানুষের মতো আমিও রক্ত-মাংসে গড়া মানুষ। তবে কাজের সমালোচনা আমি খুব ভালোভাবেই নিই। কারণ, সেগুলো থেকে নিজের ভুলগুলো বুঝতে পারি।
পশ্চিম বাংলার সিনেমায় কাজের খবর আছে?
না, এ মুহূর্তে পশ্চিম বাংলায় কাজের কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে এসভিএফ-এর সঙ্গে আমার বেশ কয়েকটা গান তৈরি হয়ে রয়েছে, সেগুলোর কাজ হতে পারে।