বরগুনার তালতলী উপজেলার খোট্রার চর-মাছ বাজার এলাকার একটি সেতু শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ভোরের দিকে ভেঙে খালে পড়ে গেছে। এতে ওই এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। তারা নৌকার সাহায্যে খাল পার হয়ে একপাশ থেকে অন্যপাশে যাতায়াত করছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ৩০ বছর আগে নির্মিত সেতুটি কখনো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। 

নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ড.

কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, “স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা শহরের খোট্রার চর-মাছ বাজার এলাকার ভেঙে যাওয়া সেতুটি প্রায় ৩০ বছর আগে নির্মাণ করে। ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরের সময় সেতুটি দেবে যায় এবং বিভিন্ন অংশ ভেঙে যায়। এ ছাড়া, সেতুটি একদিকে হেলে পড়েছিল।”

আরো পড়ুন:

নৌকা আর সাঁকোয় ভরসা ১০ গ্রামের মানুষের

৪.৮ কিলোমিটার যমুনা রেলসেতু ৩ মিনিটে অতিক্রম

তিনি আরো বলেন, “এরপর থেকে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দীর্ঘ ১৮ বছর পার করলেও সংস্কারের কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার ভোরের দিকে সেতুটি মাঝখান দিয়ে ভেঙে খালে পড়ে যায়। এর ফলে তলতলী শহরের সঙ্গে খোট্রার চরের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষার্থীসহ নানা পেশার মানুষ ডিঙি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে বর্তমানে খাল পারাপার হচ্ছেন।” 

স্থানীয় বাসিন্দা ওবায়দুল কবির বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতুটি দিয়ে যাতায়াত করতাম। সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে যাওয়ায় কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে। যাতায়াতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ডিঙি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার হতে হচ্ছে।”

কলেজ শিক্ষার্থী গোলাম সরোয়ার হিরু বলেন, “ভোরের দিকে হঠাৎ সেতুটি ভেঙে যায়। যে কারণে ডিঙি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে খাল পারাপার হতে হবে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অতি দ্রুত সেতুটি পুনঃনির্মাণ করার দাবি জানাচ্ছি।”

বরগুনা জেলার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খানকে ফোন করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। যে কারণে তার বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।

ভেঙে পড়া সেতু আজ দেখতে যান উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তিনি বলেন, “সেতুটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। ভোরের দিকে সেতুটি ভেঙে পড়ে যায়। মানুষের চলাচলের জন্য বিকল্প একটি কাঠের সেতু নির্মাণ করে দেওয়া হবে। অতিদ্রুত সেতু পুনঃনির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।” 

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সিলেটে ছাত্রলীগের মিছিলের পর দুই আ.লীগ নেতার বাসায় হামলা

সিলেটে সকালে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ঝটিকা মিছিল করার পর বিকাল ও সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দুই নেতার এবং ছাত্রলীগের এক নেতারা বাসায় হামলা ও ভাঙচুর হয়েছে।

বুধবার (২ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সিলেটে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য  শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল এবং সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় বিকালে হামলা হয়েছে। প্রায় একই সময়ে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায়ও হামলা চালানো হয়েছে।

আরো পড়ুন:

নোয়াখালীতে বিনোদনকেন্দ্রে হামলা, পুলিশসহ আহত ৭

রাঙ্গুনিয়ায় আহত আ.লীগ নেতার মৃত্যু

হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের বাসার জিনিসপত্র ভাঙচুর করেছে।

সিলেট নগরীর শুভেচ্ছা আবাসিক এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরীর (নাদেল) বাসভবনের ‘ফ্ল্যাট অ্যাপার্টমেন্টের কার্যালয়ে’ হামলা চালায় একদল মানুষ। তারা মিছিল নিয়ে তার বাসায় ঢুকে পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নগরের পাঠানটুলা এলাকায় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বাসায় ৭০ থেকে ৮০টি মোটরসাইকেলে করে শতাধিক তরুণ-যুবক গিয়ে এ হামলা চালান। এ সময় হামলাকারীরা বাসায় ঢুকে আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালান। বাসাটিতে আনোয়ারুজ্জামানের পরিবারের কেউ থাকেন না। দুজন তত্ত্বাবধায়ক বাসার দেখাশোনা করেন।

মেজরটিলা এলাকায় অবস্থিত ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি রুহেল আহমদের বাসায় হামলা চালায় দুর্বৃত্তদের একটি দল। সন্ধ্যা সাতটায় রুহেলের বাসায় হামলার সময় তাঁর মা ও বোন বাসায় ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

অবশ্য এসব হামলায় হতাহতের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

বুধবার সকাল থেকে সিলেট নগরীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের একটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এরপর বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা মাঠে নামে। তারা ভিডিওতে দেখা যাওয়া চার-পাঁচজন মিছিলকারীকে ধরে পুলিশে হাতে তুলে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ছাত্রলীগের ব্যানারে ৩০ থেকে ৪০ জন তরুণ নগরের ধোপাদিঘিরপাড় এলাকায় ঝটিকা মিছিল করেন। এতে ছাত্রদলের কিছুসংখ্যক নেতা-কর্মী বিক্ষুব্ধ হয়ে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের তিন নেতার বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালান।

এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা নাদেলের বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শুনেছি, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই হামলা চালিয়েছে।

তিনি বলেন, মিছিলকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ