সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ
Published: 31st, January 2025 GMT
চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা।
অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জৌলুস হারাচ্ছে ঐতিহাসিক ‘ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ’
প্রায় চারশ বছর আগে মুঘল আমলে নির্মিত হয় কুষ্টিয়ার ‘ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ’। অপূর্ব কারুকাজ থাকা ঐতিহাসিক এই নিদর্শন দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে শত শত দর্শনার্থী ছুটে আসেন। স্থানীয়রা জানান, বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়ায় দিনদিন সৌন্দর্য ও জৌলুস হারাতে বসেছে মসজিদটি।
ঐতিহাসিক এই মসজিদটি কুষ্টিয়া শহর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলার মধ্যবর্তী ঝাউদিয়া গ্রামে অবস্থিত।
নির্মাণকালের সঠিক ইতিহাস জানা না গেলেও মসজিদটি ঘিরে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ আছে। ইতিহাস ঘেঁটে এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মুঘল সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকালে ইরাকের জমিদার শাহ সুফি আদানী ইসলাম প্রচারের উদ্দেশ্যে এ অঞ্চলে আসেন। প্রায় চারশ বছর আগে ঝাউদিয়া গ্রামে তিনিই নির্মাণ করেন মসজিদটি।
আরো পড়ুন:
আড়াইশ বছরের পুরোনো ১৩ গম্বুজ মসজিদ
পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চিরকুট, ‘পাগলা চাচা শেখ হাসিনা কোথায়’
জনশ্রুতি আছে, অলৌকিকভাবে এক রাতেই মসজিদটি দৃশ্যমান হয়। মুঘল শিল্পকলার অপূর্ব নিদর্শন রয়েছে মসজিদটিতে। দেয়াল জুড়ে নিপুণ আল্পনা, কারুকার্যময় অপূর্ব শিল্পের ছোঁয়া আর পাথরের খোদাই বলে দেয় এটি মুঘল আমলের স্থাপত্য নিদর্শন।
সুদৃশ্য পাঁচটি গম্বুজ আছে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদে। চার কোনায় আছে চারটি নান্দনিক মিনার। প্রবেশ দরজায় দুইটি মিনার আছে। যা সহজেই মানুষকে মুগ্ধ করে। ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে ১৯৬৯ সালে মসজিদটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত করা হয়।
দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় মসজিদ তার সৌন্দর্য ও জৌলুস হারাতে বসেছে। এ ছাড়া, ঝাউদিয়া গ্রামে থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল বা আবাসন সুবিধা না থাকায় নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হয় দর্শনার্থীদের।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন কোনো সংস্কার না হওয়ায় মসজিদটির এখন বেহাল দশা। দেখলে মনে হয় জরাজীর্ণ অবস্থা। তাছাড়া তিন কাতারের বেশি নামাজ পড়ার জায়গা নেই। অথচ মসজিদের সামনে-পেছনে অনেক জায়গা আছে। নতুন করে রংসহ মসজিদটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান তারা।
কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “এই মসজিদটি মুঘল আমলে নির্মিত হয়েছে। কারণ মোগল আমলে নির্মিত অন্যান্য স্থাপনার সঙ্গে এই মসজিদের নির্মাণ শৈলীতে অনেক সামঞ্জস্য লক্ষ্য করা যায়। মুঘল স্থাপত্যরীতি অনুসরণ করে ঝাউদিয়া শাহী মসজিদ নির্মিত।”
তিনি আরো বলেন, “দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এই মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন। শুক্রবারগুলোতে এই মসজিদে প্রায় ৪-৫ হাজার মানুষ নামাজ পড়তে আসেন।”
সেলিম উদ্দিন চৌধুরী নামে স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “মসজিদের বাইরের সৌন্দর্য রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে কিছুটা ম্লান হলেও ভেতরে চোখ ধাঁধানো নকশার তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি। বর্তমানে এ মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সম্পত্তি। সর্বশেষ ১৯৭৯-৮০ সালের দিকে একবার মসজিদটির সংস্কার করা হয়।”
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পার্থ প্রতীম শীল মসজিদটি সংস্কার না হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘এ ধরনের ঐতিহাসিক নিদর্শন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত। তাই এর সংস্কার বা দেখভাল স্থানীয়ভাবে করা সম্ভব নয়। যে কারণে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যাচ্ছে না।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ