মানুষের মতো আইনগত অধিকার পেল নিউজিল্যান্ডের পাহাড়
Published: 31st, January 2025 GMT
মানুষের মতো আইনগত অধিকার পেল নিউজিল্যান্ডের একটি পাহাড়। বহু বছর পর এমন আইন প্রণয়ন করা হয়। এর মানে তারানাকি মাউঙ্গা (মাউন্ট তারানাকি) নিজের মালিকানা কার্যকরভাবে পাবে। এটি পরিচালনায় একসঙ্গে কাজ করবে স্থানীয় উপজাতি, ইউয়ি এবং সরকারের প্রতিনিধিরা। খবর বিবিসির
এই আইন প্রণয়নের লক্ষ্য উপনিবেশ আমলে তারানাকি অঞ্চলে ভূমি বাজেয়াপ্ত, অবিচারের শিকার হওয়া মাওরিরা ক্ষতিপূরণ দেওয়া।
আলোচনার জন্য সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী পল গোল্ডস্মিথ বলেছেন, ‘অতীতের ভুলের কারণে যে বেদনা রয়ে গেছে, তা আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। যাতে ইউয়িদের নিজস্ব আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করে তাদের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আমরা সহায়তা করতে পারি।’
গত বৃহস্পতিবার জীবন্ত সত্তা ঘোষণার তারানাকি মাউঙ্গা কালেক্টিভ রিড্রেস বিলটি নিউজিল্যান্ডের পার্লামেন্টে পাস হয়। তাতে পর্বতটি একটি আইনি নাম পেয়েছে এবং এর আশপাশের চূড়া ও জমিকে দেওয়া হয়েছে সুরক্ষা।
পর্বত, পূর্বপুরুষ, জীবিত প্রাণীসহ প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে যে মাওরি বিশ্বদর্শন রয়েছে, সেটির স্বীকৃতি মিলেছে বিলটি পাসের মধ্য দিয়ে।
রাজনৈতিক দল থে পাথি মাওরির (মাওরি পার্টি) সহ-নেতা ডেবি নারওয়ে-প্যাকা বলেন, ‘আমাদের মাউঙ্গা টুপুনা (পূর্বপুরুষের পর্বত) অবিচার, অজ্ঞতা ও ঘৃণার শৃঙ্খল থেকে আজ মুক্তি পেয়েছে।’
নারওয়ে প্যাকা নিউজিল্যান্ডের পশ্চিম উপকূলে আটজন তারানাকি ইউয়িদের মধ্যে একজন, যার কাছে পর্বতটি পবিত্র। এলাকাটির আরও শত শত মাওরি নাগরিক বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে উপস্থিত হয়েছিলেন বিলটির আইনি রূপান্তর দেখতে।
বিবিসি লিখেছে, পর্বতটি আর আনুষ্ঠানিকভাবে ‘এগমন্ট’ নামে পরিচিত হবে না, যে নামটি ১৮ শতকে দিয়েছিলেন ব্রিটিশ পরিব্রাজক জেমস কুক। এখন এটি ‘তারানাকি মাউঙ্গা’ নামে পরিচিত হবে। আর চারপাশ ঘিরে থাকা জাতীয় উদ্যানটিও পাবে মাওরি নাম।
যে চুক্তির মাধ্যমে নিউজিল্যান্ড একটি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আদিবাসীরা জমি ও সম্পদের নির্দিষ্ট অধিকার পেয়েছিল; সেই ওয়েটাঙ্গি চুক্তি লঙ্ঘনের জন্য ক্ষতিপূরণের সর্বশেষ প্রয়াস তারানাকি মাউঙ্গা বন্দোবস্ত।
১৮৬০ এর দশকে তারানাকি পর্বত এবং স্থানীয় মাওরিদের কাছ থেকে ১০ লাখেরও বেশি একর জমি বাজেয়াপ্তের ঘটনায় সরকারের তরফে ক্ষমা প্রার্থনার অংশ হিসেবেও দেখা হচ্ছে এই বন্দোবস্তকে।
পল গোল্ডস্মিথ স্বীকার করেছেন যে, ‘চুক্তি লঙ্ঘনের অর্থ হল হোয়ানু (বৃহত্তর পরিবার), হাপু (উপ-উপজাতি) এবং তারানাকির ইউয়ির ব্যাপক পরিসরের ক্ষতি; যা বহু দশক ধরে অপূরণীয় হয়ে দাঁড়ায়।’
তিনি আরও বলেন, পর্বতটিতে প্রবেশাধিকার আর পরিবর্তন হবে না এবং নিউজিল্যান্ডের সব বাসিন্দা এই জায়গাটি পরিদর্শন করতে পারবে এবং আগামী প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্দান্ত এ জায়গাটি উপভোগ করতে পারবে।
নিউজিল্যান্ডে এর আগেও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের জীবন্ত সত্তার স্বীকৃতি পাওয়ার নজির রয়েছে। ২০১৪ সালে উরেওয়েরা বন প্রথম এই জাতীয় মর্যাদা অর্জন পায়। এরপর ২০১৭ সালে এমন স্বীকৃতি পায় হোয়াংগানুই নদী।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শেরপুরে ২০ টন নকল সার জব্দ
শেরপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেভেন কেয়ার বাংলাদেশ লিমিটেড নামে অবৈধ সার কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে ২০ টন নকল সার জব্দ করেছে যৌথবাহিনী। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের সাপমারী এলাকায় অবস্থিত ওই নকল সার কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় অভিযানের উপস্থিতি টের পেয়ে তার মালিক মো. রুবেল মিয়া পালিয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এনএসআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শেরপুর ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন এন এম নাহিয়ানের নেতৃত্বে শেরপুর সদর উপজেলার কৃষি অফিসার মুসলিমা খানম এবং সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাফিসহ সঙ্গীয় ফোর্স সাপমারী গ্রামের অবৈধ নকলা সার কারখানায় অভিযান চালায়। এ সময় ইন্ডিয়া জিপসাম, সেভেন গ্লোজিংক, সেভেন বোরনসহ ৪০০টি বস্তায় মোট ২০ টন নকল সার জব্দ করেছে। সারের আনুমানিক বাজার মূল্য ৫ লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর উপজেলার কৃষি অফিসার মুসলিমা খানম জানান, সেভেন কেয়ার বাংলাদেশ লিমিটেড নামে কোনো চালানপত্র ও বৈধ কাগজপত্র নেই। এ কারখানার মালিক রুবেল সাপমারী গ্রামে গোডাউন ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নকল সার উৎপাদন করে ফয়েল প্যাকেটে ভরে বাজারজাত করে আসছিল। এ ব্যাপারে সদর থানায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ ব্যাপারে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুবায়দুল আলম জানান, অভিযান শেষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/তারিকুল/বকুল