যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির কাছে পোটোম্যাক নদীর ওপরে মধ্য আকাশে বিমান-হেলিকপ্টার সংঘর্ষের জন্য ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম জাতীয় বিপর্যয়ে গত বৃহস্পতিবার ৩৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট এবং ফেডারেল সরকারের উদ্যোগকে দোষারোপ করেন। যদিও তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের মন্তব্যে কোনো অক্ষেপ ছিল না যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে বাইডেন ও ওবামা প্রশাসনের ওপর দোষারোপ করার পেছনে তার কী প্রমাণ আছে। ট্রাম্প বলেন, আমার সাধারণ জ্ঞান আছে, বুঝলেন? দুর্ভাগ্যবশত, অনেকেরই তা নেই।’

দ্বিতীয়বারের ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের ব্রিফিং রুম থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি এটিকে ‘আমাদের জাতির জন্য শোকের মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেন। কিন্তু দ্রুত পরিচিত স্ক্রিপ্টে চলে যান, যা তার প্রথম মেয়াদে দেখা গিয়েছিল।

ট্রাম্প বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি জীবিত নেই।’ এরপর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করে তিনি। এ সময় ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, প্রতিরক্ষা সচিব পিট হ্যাগসেথ এবং পরিবহন সচিব শন ডাফি তার বক্তব্যকে সমর্থন করেন।

ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের বিমান ব্যবস্থায় কেবলমাত্র সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন লোকদেরই নিয়োগ দেওয়া উচিত। আমি ওবামার মাপদণ্ডকে খুবই সাধারণ থেকে অসাধারণে রূপান্তর করেছি। আপনি নিশ্চয়ই মনে করতে পারেন, শুধু সর্বোচ্চ মেধাবী, বুদ্ধিমান এবং মানসিকভাবে শক্তিশালী ব্যক্তিরাই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছিল।’

ট্রাম্প সাবেক পরিবহন সচিব পিট বুটিজেজকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘সে একটি বিশাল ব্যর্থ। আপনি জানেন, তিনি পরিবহন বিভাগ চালানোর পর থেকে সবকিছু কত খারাপভাবে চলছে? সে একটি বিপর্যয়। সে তার শহরকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।’ ট্রাম্পের বক্তব্যের সময় টেলিভিশন সম্প্রচারে পোটোম্যাক নদীতে উদ্ধার কাজের চিত্র দেখানো হচ্ছিল, যা হোয়াইট হাউস থেকে কয়েক মাইল দূরে।

সাবেক পরিবহন সচিব পিট বুটিজেজ সামাজিকমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লেখেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন সামরিক বাহিনী ও এফএএ’র তত্ত্বাবধানে আছেন। তার প্রথম কাজগুলোর একটি ছিল আমাদের আকাশকে নিরাপদ রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বরখাস্ত ও স্থগিত করা। এখন তার উচিত প্রকৃত নেতৃত্ব প্রদর্শন করা। ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ১১ দিনের মধ্যে একাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প, যা তার প্রথম মেয়াদের তুলনায় আরও সুসংহত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ট্রাম্প বলেন, বাইডেন প্রশাসনের বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি (ডিইআই) নীতির পরিবর্তে যোগ্যতাকে সর্বোচ্চ স্থানে রাখা উচিত। তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, ওবামা কিছুটা ঠিক ছিল। কিন্তু বাইডেন আরও খারাপ।’

এই মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত মাত্র শুরু হয়েছে। যেখানে ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমান সরকারি কর্মচারীদের দায়ী করছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র প রথম র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সীমান্তে গোলাগুলি, ফিরছেন ভিসা বাতিল হওয়া নাগরিকেরা

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে সীমান্তে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর এ গোলাগুলি হয়। এই পরিস্থিতিতে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দুই দেশকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

এদিকে পাল্টাপাল্টি ভিসা বাতিলের সিদ্ধান্তের পর ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকেরা নিজ নিজ দেশে ফিরে যাচ্ছেন। দুই দেশই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেশী দেশের নাগরিকদের ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল।

কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে ভারত। এ ঘটনায় পাকিস্তানকে জড়িয়ে ভারতের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে গতকাল শুক্রবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে সর্বসম্মতভাবে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ভারতকে সতর্কও করেছে পাকিস্তান। এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, দুটি পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ সব সময়ই উদ্বেগের। যদি পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায়, তাহলে এই সংঘাত একটি করুণ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।

পেহেলগামে হামলার পর নিরাপত্তা পরিস্থিতি সরেজমিন খতিয়ে দেখতে গতকাল কাশ্মীর গেছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী।

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পাশাপাশি তিনি হামলার স্থলও পরিদর্শন করেন। আগের দিন সর্বদলীয় বৈঠকে কাশ্মীরে নিরাপত্তাব্যবস্থায় যথেষ্ট গাফিলতি ছিল বলে স্বীকার করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

গত মঙ্গলবার বিকেলে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র বৈসারণ উপত্যকায় বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) নামে স্বল্প পরিচিত একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী।

এই হামলায় পাকিস্তানের মদদ আছে অভিযোগ তুলে গত বুধবার প্রতিবেশী দেশটির নাগরিকদের ভিসা বাতিল ও সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিতসহ পাঁচটি পদক্ষেপ নেয় ভারত। জবাবে পরদিন ভারতের নাগরিকদের ভিসা বাতিল, দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্থগিত, আকাশসীমা বন্ধসহ বেশ কয়েকটি পাল্টা পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তান।

পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে অব্যাহত উত্তেজনার মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলি হয়। ভারতের সেনাবাহিনীর সূত্রগুলো দাবি করেছে, পাকিস্তানের সেনারা প্রথম গুলি করেছেন। পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের কর্মকর্তা সৈয়দ আশফাক গিলানি গোলাগুলির খবর নিশ্চিত করেছেন। তবে কোন পক্ষ আগে গুলি চালিয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

পাকিস্তান থেকে ফিরে স্বজনদের সঙ্গে ভারতের এক নাগরিক (মাঝে)। গতকাল ভারতের অমৃতসর শহরের ওয়াঘা সীমান্তে

সম্পর্কিত নিবন্ধ