বিমান-হেলিকপ্টার সংঘর্ষের জন্য ডেমোক্র্যাটরা দায়ী করলেন ট্রাম্প
Published: 31st, January 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির কাছে পোটোম্যাক নদীর ওপরে মধ্য আকাশে বিমান-হেলিকপ্টার সংঘর্ষের জন্য ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম জাতীয় বিপর্যয়ে গত বৃহস্পতিবার ৩৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনার জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট এবং ফেডারেল সরকারের উদ্যোগকে দোষারোপ করেন। যদিও তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের মন্তব্যে কোনো অক্ষেপ ছিল না যখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে বাইডেন ও ওবামা প্রশাসনের ওপর দোষারোপ করার পেছনে তার কী প্রমাণ আছে। ট্রাম্প বলেন, আমার সাধারণ জ্ঞান আছে, বুঝলেন? দুর্ভাগ্যবশত, অনেকেরই তা নেই।’
দ্বিতীয়বারের ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের ব্রিফিং রুম থেকে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি এটিকে ‘আমাদের জাতির জন্য শোকের মুহূর্ত’ বলে অভিহিত করেন। কিন্তু দ্রুত পরিচিত স্ক্রিপ্টে চলে যান, যা তার প্রথম মেয়াদে দেখা গিয়েছিল।
ট্রাম্প বলেন, ‘কোনো ব্যক্তি জীবিত নেই।’ এরপর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দোষারোপ করে তিনি। এ সময় ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, প্রতিরক্ষা সচিব পিট হ্যাগসেথ এবং পরিবহন সচিব শন ডাফি তার বক্তব্যকে সমর্থন করেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের বিমান ব্যবস্থায় কেবলমাত্র সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন লোকদেরই নিয়োগ দেওয়া উচিত। আমি ওবামার মাপদণ্ডকে খুবই সাধারণ থেকে অসাধারণে রূপান্তর করেছি। আপনি নিশ্চয়ই মনে করতে পারেন, শুধু সর্বোচ্চ মেধাবী, বুদ্ধিমান এবং মানসিকভাবে শক্তিশালী ব্যক্তিরাই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার হিসেবে যোগ্যতা অর্জন করেছিল।’
ট্রাম্প সাবেক পরিবহন সচিব পিট বুটিজেজকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘সে একটি বিশাল ব্যর্থ। আপনি জানেন, তিনি পরিবহন বিভাগ চালানোর পর থেকে সবকিছু কত খারাপভাবে চলছে? সে একটি বিপর্যয়। সে তার শহরকে মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে।’ ট্রাম্পের বক্তব্যের সময় টেলিভিশন সম্প্রচারে পোটোম্যাক নদীতে উদ্ধার কাজের চিত্র দেখানো হচ্ছিল, যা হোয়াইট হাউস থেকে কয়েক মাইল দূরে।
সাবেক পরিবহন সচিব পিট বুটিজেজ সামাজিকমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লেখেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন সামরিক বাহিনী ও এফএএ’র তত্ত্বাবধানে আছেন। তার প্রথম কাজগুলোর একটি ছিল আমাদের আকাশকে নিরাপদ রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বরখাস্ত ও স্থগিত করা। এখন তার উচিত প্রকৃত নেতৃত্ব প্রদর্শন করা। ক্ষমতায় ফিরে আসার পর ১১ দিনের মধ্যে একাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ট্রাম্প, যা তার প্রথম মেয়াদের তুলনায় আরও সুসংহত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, বাইডেন প্রশাসনের বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি (ডিইআই) নীতির পরিবর্তে যোগ্যতাকে সর্বোচ্চ স্থানে রাখা উচিত। তিনি আরও বলেন, ‘হ্যাঁ, ওবামা কিছুটা ঠিক ছিল। কিন্তু বাইডেন আরও খারাপ।’
এই মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত মাত্র শুরু হয়েছে। যেখানে ট্রাম্প প্রশাসন বর্তমান সরকারি কর্মচারীদের দায়ী করছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে নিহত ২, গুলিবিদ্ধ ৪ বাসিন্দা
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ গণপিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এর আগে ওই যুবকদের গুলিতে স্থানীয় চার বাসিন্দা আহত হন। সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত যুবকদের পরিচয় তাৎক্ষণিক নিশ্চিত করতে পারেননি পুলিশ। গুলিবিদ্দ স্থানীয় চার বাসিন্দা হলেন ওবায়দুল হক (২২), মামুনুর রশিদ (৪৫), নাসির উদ্দিন (৩৮) ও আব্বাস উদ্দিন (৩৮)। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা এবং একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে দশটার মধ্যে চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে একদল যুবক ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় গিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করতে থাকেন। এ সময় স্থানীয় মসজিদে ডাকাত পড়েছে এমন প্রচারের পর লোকজন জড়ো হয়ে অটোরিকশায় করে আসা দুই যুবককে আটক করে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই যুবক নিহত হন।
এক যুবকের লাশের পাশ থেকে একটি পিস্তল উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুই যুবককে আটকের আগে গুলির ঘটনায় আহত চারজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম, সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন বিশ্বাস, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দলসহ সাতকানিয়া থানা পুলিশের সদস্যরা।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ডাকাত সন্দেহে মসজিদের মাইকে প্রচারের পর স্থানীয় বাসিন্দাদের পিটুনিতে দুই যুবক নিহত হয়েছেন। এখনো ওই দুই যুবকের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।