হিমেল হাওয়া ও কুয়াশার চাদরে ঢাকা কুড়িগ্রাম
Published: 31st, January 2025 GMT
দেশের উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রাম। কনকনে ঠান্ডায় কষ্টে রয়েছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলো। বিশেষ করে জেলার নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষ বেশি বিপাকে পড়েছে। আজ শুক্রবার সকালে ও বিকেলের পর লোকজন খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে জেলার মাঠ-ঘাট।
আজ সকাল ৯টায় কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘণ্টায় বাতাসের গতি ৮ থেকে ৯ কিলোমিটার। বাতাসে জলীয় বাষ্পের আদ্রতা ৯৭ শতাংশ।
সকাল ১১টা পার হলেও জেলার চরাঞ্চলগুলোতে এখনো দেখা মেলেনি সূর্যের। জেলা শহরের কোথাও কোথাও সূর্য উঠলেও ঘন কুয়াশার কারণে তা ঢাকা পড়েছে। সড়কে হেড লাইট জ্বালিয়ে যানবাহনগুলো চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
সদরের সুজামের মোড়ের শ্রমিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এই দুইদিন ভালোই রোদ ছিলো, ঠান্ডাটা কম মনে হইছিলো। আজ সকাল থাকি আবার বেশি ঠান্ডা মনে হচ্ছে।’
শুলকুর বাজারের কৃষক হযরত আলী বলেন, ‘সাত সকালে জমি বাড়িত আসছি কাজ করবের। জারতে হাত-পাও শিষ্টা নাগছে। কুয়াশার তেজত আজ কাম করা মুশকিল হয়া গেইছে।’
জেলায় শীত নিবারণের জন্য সরকারিভাবে দুঃস্থদের জন্য যে কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে; তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এখনো জেলার চরের বসবাসরত মানুষরা পাননি সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত কম্বল।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের চর ইয়ুথনেটের বাসিন্দা তারা চাঁদ বলেন, ‘হামরা নদী পাড়ের মানুষ। হামার চরত কোনো মেম্বার-চেয়ারম্যান আসে নাই কম্বল দিবার।’
পাশের খেয়ার আলগা চরের হাসিনা বানু বলেন, ‘বাবা ঠান্ডাতে কাম-কাজ করা খুব মুশকিল হয়া গেইছে। চেয়ারম্যান-মেম্বর কাইয়্যো হামার চরত আসে নাই কম্বল ধরি।’
যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফুর বলেন, ‘সরকারিভাবে যে বরাদ্দ পাইছি, তা খুবই অল্প। আমার এলাকার কয়েকটি চরে এখনো কম্বল বিতরণ করতে পারি নাই।’
জেলার ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো.
কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, কুড়িগ্রামের আকাশ দিয়ে হিমেল বাতাস বয়ে যাচ্ছে। আগামী ২-৩ দিন এ রকম থাকবে। সূর্য উঠলেও সহজেই সূর্যের তাপ মিলবে না।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল
মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ালো ক্ষমতাসীন জান্তা সরকার। সামরিক অভ্যুত্থানের চার বছর পূর্তির একদিন আগে এ ঘোষণা এলো। আজ শুক্রবার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাতে রয়টার্স এ তথ্য জানায়।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সেনাবাহিনী গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত অং সান সুচির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতাসীন হয়। এরপর থেকে দেশটি গৃহযুদ্ধের কবলে পড়ে। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বড় ধরনের জয় পাচ্ছে। দেশের অনেক এলাকা এখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর নিয়ন্ত্রণে।
এদিকে জান্তা বাহিনী এ বছর নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। সমালোচকরা বলছেন, প্রক্সির মাধ্যমে জেনারেলদের ক্ষমতায় রাখার জন্য একটি প্রহসন হতে পারে এ নির্বাচন। কারণ, সেনাবাহিনী ক্ষমতা ধরে রাখতে বহুবার জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়িয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে আবারও মেয়াদ বাড়ানো পরিস্থিতির ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার চেষ্টার ইঙ্গিত দেয়।
রাষ্ট্র পরিচালিত এমআরটিভি তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে জরুরি অবস্থা বৃদ্ধির ঘোষণা প্রচার করে বলেছে, সাধারণ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য এখনো আরও অনেক কাজ বাকি আছে। বিশেষ করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য স্থিতিশীলতা ও শান্তি প্রয়োজন।
নির্বাচনের জন্য কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। তবে জান্তা সরকার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। যদিও তারা দেশের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার লড়াইয়ে ক্লান্ত। কারণ, তারা একাধিক ফ্রন্টে সশস্ত্র বিদ্রোহকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর শাসন শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটি গভীর অর্থনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এক সময় মিয়ানমারের অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাজারে একটি প্রতিশ্রুতিশীল শক্তি হিসেবে দেখা হলেও এখন তা ব্যাপক চাপে রয়েছে। সামরিক বাহিনী একাধিক ফ্রন্টে বিদ্রোহীদের সঙ্গে লড়াই করছে এবং দেশটির জনগণের ওপর চাপ দিন দিন বাড়ছে।