বাংলা সিনেমায় সালমান শাহ এক অবিস্মরনীয় নাম। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান তিনি। মৃত্যুর এর বছরও পরও তাঁর জনপ্রিয়তায় একটুও ভাটা পড়েনি। এ কারণে তাকে নিয়ে যখনই কোন অনুষ্ঠান ,আয়োজন, কিংবা তাঁর অভিনীত কোন সিনেমায় প্রদর্শনী হয়; দর্শক ভক্তদের ঢল নামে সেখানে। বেশ কয়েকমাস ধরে রাজধানীর বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে সিনেমার প্রদর্শনী হয়ে আসছিল। দর্শকরা এখানে বিনে পয়সার সিনেমায় দেখছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নায়ক সালমান শাহর ‘স্নেহ’ সিনেমাটির প্রদর্শনীর আয়োজন করে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ কর্তৃপক্ষ। প্রদর্শনী দেখতে দর্শকের ছিল উপচে পড়া ভীড়। ভক্তদের ভালোবাসায় যেন বারবার ফিরে আসেন সালমান। গাজী মাজহারুল আনোয়ার পরিচালিত ওই সিনেমার প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের কর্মকর্তাদের পাপাপাশি ও সালমান শাহ ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনে বিশেষ অতিথি হয়েছে এসেছিলন গাজী মাজহারুল আনোয়ারে পুত্র গাজী সারফরাজ আনোয়ার উপল ও কন্যা সংগীতশিল্পী দিঠি আনোয়ার। 

সারফরাজ আনোয়ার উপল বলেন ,‘ছবিটি দেখতে গিয়ে আমি আসলেই স্মৃতিকারত হয়েছিলাম। কত সৃতি আব্বুর সাথে , ইমন ভাইয়ের সাথে [ সালমান শাহ ]। বলে শেষ করা যাবেনা। স্কুলের ফাইনাল পরীক্ষার পর এক মাস ছুটি ছিলো। প্রায় প্রতিদিন এ আব্বুর সাথে ‘স্নেহ’ ছবির শুটিং দেখতে গিয়েছিলাম । কত আনন্দ কত সৃতি। আসলে এখন কাউকেই বোঝানো যাবে না চলচ্চিত্রের সোনালি দিনগুলি কি ছিলো। ছবিটি ১৯৯৪ সালের ১৬  সেপ্টেম্বর মুক্তি পেয়েছিল। এক কথায় ব্লকবাস্টার হিট হয়েছিল । জনসমুদ্র ছিল প্রতিটা  প্রতিটা শো । এই ছবির সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকেই আমাদের সাথে নেই। সিনেমাটি দেখতে বসে আমার বাবা, সালমান শাহ, হুমায়ুন ফরীদি আঙ্কেল,বাবর আঙ্কেল, নাসির খান আঙ্কেল, চিত্র গ্রাহক আবুল খায়ের চাচার কথা মনে করে খুব কষ্ট হচ্ছিল । দর্শকদের উপস্থিতি দেখে মনটা আসলেই ভরে গেছে।

দীর্ঘ ৩১ বছর পরেও ছবিটিকে মানুষ মনে রেখেছে। ছবি চলার সময় প্রতিটি সংলাপ, ছবির প্রতিটি গান সবার একেবারে মুখস্ত!  হলে বসে সবাই রিপিট করছিল। আসলে আমার বাবা গীতিকার হিসাবে তো বটেই পরিচালক হিসেবেও বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পরিচালক ছিলেন। বাবা এ দেশের দর্শকদের পালস টা খুব বুঝতেন। তাইতো আব্বুর প্রায় সব ছবিই হিট, সুপারহিটও  ব্লকবাস্টার হতো। বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ কর্তৃপক্ষকে  ধন্যবাদ জানাচ্ছি,এমন একটি সুন্দর আয়োজনের জন্য।’ 

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলায় জন্ম নেন সালমান শাহ। ১৯৯৩ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’।  সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে পা রাখেন সালমান শাহ। তিন বছরের অভিনয় জীবনে  ২৭টি মুভিতে সিনেমায় অভিনয় করেছেন যার প্রতিটি মুভিই ব্যবসা সফল।কেয়ামত থেকে কেয়ামত, সুজন সখী, দেন মোহর, স্বপ্নের ঠিকানা, আঞ্জুমান, মহা মিলন,তোমাকে চাই, স্বপ্নের পৃথিবী, সত্যের মৃত্যু নেই, জীবন সংসার, মায়ের অধিকার, স্বপ্নের নায়কসহ অনেক ছিনেমা ছিল উল্লেখযোগ্য।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ