ভারতের উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে ১৪৪ বছর পর শুরু হয়েছে মহাকুম্ভ মেলা। সেখানে পদপিষ্ট হয়ে বহুজন হতাহত হয়েছেন। এ মেলায় ফুল বিক্রি করতে গিয়ে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছেন ষোড়শী মোনালিসা ভোসলে। ভাইরাল সেই মোনালিসা অভিনয় করতে যাচ্ছেন বলিউড সিনেমায়। খবর এনডিটিভির।

এ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ‘দ্য ডায়েরি অব মণিপুর’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন মোনালিসা। সিনেমাটির লেখক-পরিচালক সনোজ মিশ্রা। এর আগে এই পরিচালক নির্মাণ করেন ‘দ্য ডায়েরি অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’-এর মতো আলোচিত সিনেমা। এই নির্মাতা মোনালিসার বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেন।

মোনালিসার সঙ্গে তোলা ছবি ও ভিডিও নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন পরিচালক সনোজ মিশ্রা। এক পোস্টের ক্যাপশনে তিনি লেখেন, “ধনী ও বড় পরিবারের দুষ্ট, মাতাল মেয়েদের পরিবর্তে, আমি আমার সিনেমার জন্য একজন গরীব ও সংস্কৃতিমনা মেয়েকে বেছে নিয়েছি। যদিও এটা আমার জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ।”

আরো পড়ুন:

শ্রীদেবী কন্যাকে কখনো কেউ প্রেমের প্রস্তাব দেননি

ভুল বোঝাবুঝি থেকে হৃতিক-সুজানের বিচ্ছেদ: রাকেশ রোশান

সনোজ মিশ্রা তার দাদুর বলা একটি গল্প উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেন। তা বর্ণনা করে এই পরিচালক লেখেন, “ছোটবেলায় আমার দাদু রূপকথার গল্প বলতেন। একটি গল্প এমন ছিল— একটি মেয়ে যে খুব গরীব ছিল। মানুষজন তাকে অনেক নির্যাতন করত। এক রাতে মেয়েটি একটি পরির দেখা পান। সেই পরি মেয়েটির উপর একটি জাদুর কাঠি নাড়ায়। এরপর তার ভাগ্য বদলে যায়। এই গল্পটি সত্যি হলো। আমরা সবাই দেখেছি, মহাকুম্ভে মহাদেব তাকে আশীর্বাদ করেছিলেন। আর সেই গরীব সাধারণ মেয়েটি আজ সারা দেশে বিখ্যাত।”

দীর্ঘ দিন ধরে উত্তরপ্রদেশের নর্মদা নদীর তীরে কিলা ঘাটে ফুল ও মালা বিক্রি করে মোনালিসা। কুম্ভ মেলায় রুদ্রাক্ষের মালা বিক্রি করার সময়ে একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটরের নজরে পড়েন। মেয়েটির ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার পর দ্রুত তা ছড়িয়ে পড়ে। মোনালিসার আকর্ষণীয় চেহারা, বিশেষ করে তার চোখ, তাকে ইন্টারনেট সেনসেশন করে তোলে।

অন্তর্জালে জনপ্রিয় হয়ে উঠার পর মোনালিসার ব্যবসায় দারুণ প্রভাব পড়েছে। কারণ মানুষজন ফুল কেনার পরিবর্তে তার সঙ্গে সেলফি তুলতে ভিড় করতে শুরু করেন। এ নিয়ে বিশৃঙ্খলাও তৈরি হয়। পরে বাধ্য হয়ে মহাকুম্ভ মেলা থেকে মহেশ্বরে তার নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন মোনালিসা।

মহাকুম্ভ মেলা থেকে ভাইরাল মোনালিসা আগেই জানিয়েছিলেন, তার ইচ্ছা ছিল অভিনেত্রী হওয়ার। তেমন সুযোগ পেলে আর পরিবারের সম্মতি পেলে অবশ্যই তিনি তার স্বপ্নপূরণ করবেন। অবশেষে মোনালিসার সুপ্ত স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র পর ব

এছাড়াও পড়ুন:

আমি এসব থেকে মুক্তি চাই: তারিক আনাম

উনি তো বাংলাদেশের অমিতাভ বচ্চন, শোবিজ অঙ্গনে এ বাক্যটি প্রায়ই শোনা যায় তাঁর সহকর্মীদের মুখে। কেবল অমিতাভদের মতো করে কাজে লাগানো হয়নি। তাঁকে কেন্দ্র করে গল্প ভাবলে, গল্পের মূল শক্তিতে যদি তাঁকে রাখা হয়, তাহলে দারুণ কিছু পেতে পারত ঢাকার সিনেমা কিংবা নাটকের ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু ক’জন ভাবে এটা। অধিকাংশের ভাবনায় কেবল ট্রেন্ডি কনটেন্ট। ভাইরাল শিল্পী। ফলে ঢাকার শোবিজে দাপুটে অভিনেতা হয়েও অমিতাভ কিংবা রজনীকান্তদের মতো প্রভাব নিয়ে পর্দায় হাজির হতে পারছেন না। তিনি তারিক আনাম খান।  

ব্যক্তিজীবনে যিনি সৌম্য, শান্ত, ধীরস্থির প্রকৃতির একজন মানুষ। অভিনয়ে প্রথাগত নন। আলাদা একটি বৈশিষ্ট্য নিয়েই চলমান। তারিক আনামের সঙ্গে যারা মেশেন বা যারা তাঁকে জানেন তারা কায়মনোবাক্যে স্বীকার করবেন তিনি বলেন কম, শোনেন বেশি। শোঅফ কম, করেন বেশি। 

সদা গম্ভীর প্রকৃতির একজন মানুষ হয়েও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রায় প্রতিটি অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছেন নিজের অভিনয় সৌকর্য ও সাংগঠনিক দূরদর্শিতা দিয়ে। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে মঞ্চের আলোয় আলোকিত তিনি। গ্রুপ থিয়েটারের অন্যতম দল নাট্যকেন্দ্রের পুরোধা ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠলেও নিজের ভেতর বিন্দুমাত্র অহমিকা নেই। নেই ‘অনেক কিছু করেছি টাইপ’ দৃষ্টিভঙ্গি।

নতুন বছর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল তারেক আনাম খান অভিনীত ‘মেকআপ’ সিনেমাটি। বহু আগে শুটিং হওয়া এ সিনেমাটি বারবার সেন্সর বোর্ডের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছিল। মূলত দেশের শোবিজ অঙ্গনের খুঁটিনাটি বিষয় ও সম্পর্কের বিষয়গুলো চিত্রায়ণ করায় এই নিষেধাজ্ঞা। এই সিনেমায় একজন সুপারস্টার নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন তারিক আনাম খান। সিনেমাটি ব্যবসা করতে পারেনি। পারছে আলোচনায় আসতে। যেটা পেরেছে সেটা তারিক আনাম খানকে নতুন করে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে। যে তারিক আনাম খানদের এই সময়ের নির্মাতারা এড়িয়ে চলেন, কিংবা শুধু বাবার চরিত্রের জন্যই কাস্ট করেন, তাদের নতুন করে ভাবনার খোরাক জুগিয়েছেন। এই ছবিতে তারিক আনাম খান সত্যি সত্যিই দেখিয়েছেন বয়স একটা সংখ্যামাত্র। তাঁকে নিয়ে বহুমাত্রিক চিন্তা করার সময় এখন। তবে সেই চিন্তা কতটা প্রসারিত হবে, তা অজানা। যদিও অভিনেতা অনেকটা কৌতুকের সুরেই বিষয়টি সবাইকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। বলেন, এখন তো সব সিনেমায় বাবা চরিত্রেই অভিনয় করছি। আমি তো জাতীয় বাবা হয়ে গেছি। এর থেকে মুক্তি চাই।’

 তাঁর মতে, সিনিয়র শিল্পীদের চরিত্র নিয়ে নির্মাতাদের আলাদা করে ভাবা উচিত। যেখানে বলিউডে সিনিয়র শিল্পীদের নিয়ে আলাদা গল্প বলা হয়। কিন্তু আমাদের এখানে এটা হয় কী? আমাদের নিয়ে নতুন নতুন ভাবনার গল্প তৈরির লোক কই? কথাগুলো বলার সময় এক ধরনের আক্ষেপ ছিল বরেণ্য এই অভিনেতার। ছিল অতৃপ্তিও। তাই কথা বলতে বলতে ফিরে যাওয়া হয় অতীত স্মৃতিতে। যে স্মৃতি বর্ণিল, রঙ্গিন। যাকে সবাই সোনালি দিন বলেই সম্বোধন করেন। সেই সোনালি দিনগুলোর কথা কতটা মনে তারিক আনাম খানের? জানালেন, তিনি আসলে অতীত রোমন্থন করে তাতে মুগ্ধ থাকার মানুষ নন। বলেন, আমি অতীত মগ্ন মানুষ নই। স্মৃতি রোমন্থন করারও মানুষ নই। আমি মনে করি, বর্তমান সময়টাই সত্য।’ 

তারপরও অতীতের কাজের পদ্ধতি নিয়ে কথা বললেন এই অভিনেতা। কথা বলতে বলতেই উঠে এলো সব। বললেন, তখনকার সময়ের কথা যদি বলি তখন ভালো ছিল এই যে, স্ক্রিপটা নিয়ে নাট্যনির্দেশকরা অনেক আগে থেকে চিন্তাভাবনা করতেন। কমপক্ষে চারদিন নাটকের রিহার্সেল হতো। একটানা তিন ক্যামেরায় কাজ হতো, আর্টিস্ট অংশগ্রহণ করত। আমি এখন যদি এই একই ঢঙে নাটক নির্মাণ করি, তাহলে দর্শক গ্রহণ নাও করতে পারে। ওই সময় এবং এ সময়ের তুলনামূলক বিশ্লেষণ যদি করি, দেখা যাবে তখন সিরিয়াসনেসটা বেশি ছিল। হোমওয়ার্ক বেশি হতো। কোয়ালিটিও ছিল এবং ভালো কাজের যথেষ্ট সুযোগও ছিল। কোয়ালিটি কিন্তু আপেক্ষিক বিষয়।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গায়িকা-অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল আর নেই
  • সাইফুল-সাজ্জাদে তটস্থ চট্টগ্রামের ৫ থানার পুলিশ
  • কামরুল হাসানের কাছে শিল্প ধরা দিয়েছিল
  • ‘আমার চিত্রকর সত্তার মৃত্যু ঘটিয়েছি’
  • ‘রেখাচিত্রকে অবহেলা করা উচিত নয়’
  • অনুষ্ঠানে প্রবেশে নারী সাংবাদিককে ‘বাধা’, যা হয়েছিল সেদিন
  • যুক্তরাষ্ট্রে উড়োজাহাজ-হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় বেঁচে নেই কেউ
  • জামালপুরে ট্রাকের ধাক্কায় সিএনজির ৫ যাত্রী নিহত
  • আমি এসব থেকে মুক্তি চাই: তারিক আনাম