সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ৫ দিনের রিমান্ডে
Published: 31st, January 2025 GMT
রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক দেবী রানী রায় এ রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুস্তাফিজার রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। শুনানি শেষে বিচারক ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।”
এর আগে সকাল ৯টায় মহানগর কোতোয়ালি থানা থেকে তাকে কড়া প্রহরায় আদালতে নিয়ে আসা হয়।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরে নিহত মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি নুরুজ্জামান আহমেদ। এছাড়া তার বিরুদ্ধে লালমনিরহাটে একাধিক মামলা রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৯টার দিকে রংপুর শহরের সেন্ট্রাল রোডের ডাক অফিসের গলিতে আত্মীয়ের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন স্লোগান দেন এবং ডিম ছুঁড়ে প্রতিবাদ জানান।
নুরুজ্জামান আহমেদ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুই দফা প্রতিমন্ত্রী ও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গতবছর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হলেও তিনি মন্ত্রিত্ব পাননি।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসন থেকে সংসদ সংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন নুরুজ্জামান আহমেদ।
ঢাকা/আমিরুল/ইমন
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র জ জ ম ন আহম দ মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।