কোথাও জায়গা ফাঁকা নেই। টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ১৬০ একর জমির ওপর টানানো শামিয়ানার নিচে মানুষ আর মানুষ। তুরাগ নদের চারদিকে জনসমুদ্র। ভারতের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা ইব্রাহীম দেওলার আমবয়ানের মধ্য দিয়ে রাজধানীর উপকণ্ঠ টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে শুরু হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার ৫৮তম আসরের প্রথম পর্ব। 
তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের বিরোধ মিটিয়ে সব শঙ্কা পেছনে ফেলে কড়া নিরাপত্তায় গতকাল বৃহস্পতিবার মাগরিবের নামাজের পর শুরু হয়েছে শূরায়ে নেজামের (যোবায়ের) অনুসারীদের আয়োজনে বিশ্ব ইজতেমা। ভোর থেকেই মুসল্লিরা  আসতে থাকেন। সূর্য পশ্চিম দিকে ঢলে পড়ার আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় পুরো ময়দান। অন্তত ৩৬ দেশের সহস্রাধিক বিদেশি মেহমান ময়দানে পৌঁছেছেন। বিদেশি মেহমানদের খিত্তাকে ঘিরে বিশেষ নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছে। বিদেশি খিত্তার পাশে পুলিশ-র‍্যাবসহ সব বাহিনীর উপনিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। এই ধাপে ঢাকার একাংশসহ মোট ৪১ জেলা অংশ নিচ্ছে।
মাগরিবের নামাজের পর ইব্রাহীম দেওলার উর্দু ভাষার মূল বয়ান মাওলানা যোবায়েরের করা তর্জমা ধ্যানমগ্ন হয়ে শোনেন আগত মুসল্লিরা। ইজতেমা ময়দানে তিন দিনব্যাপী সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান, ইবাদত বন্দেগির নিয়মকানুন ও করণীয় বিভিন্ন দিক নিয়ে বয়ান করা হয়। উর্দু ভাষার মূল বয়ানকে মূল মঞ্চের চারপাশে বিদেশি বিভিন্ন ভাষাভাষী মেহমানের জন্য বাংলা ছাড়াও ইংরেজি, আরবি, ফার্সিসহ কয়েকটি ভাষায় তাৎক্ষণিক ভাষান্তর করে শোনানো হয়। ইমান, আমল, আখলাখসহ তাবলিগের ছয় উসুল বা মূল নীতির ওপর তাবলিগের শীর্ষ মুরব্বিদের করা বয়ান প্রতিদিনই তাৎক্ষণিক ভাষান্তর করে শোনার ব্যবস্থা রয়েছে। আজ শুক্রবার ফজরের নামাজের পর পাকিস্তানের মাওলানা জিয়া উল হক বয়ান করবেন। জুমার নামাজে ইমামতি করবেন মাওলানা যোবায়ের। জুমার নামাজের আগে খিত্তায় খিত্তায় তালিমের আমল হবে বলে জানান শূরায়ে নেজামের মিডিয়া সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শূরায়ে নেজামের অধীনে এবারের ইজতেমার প্রথম পর্ব দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ আজ শুক্রবার শুরু হয়ে রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। প্রথম পর্বের দ্বিতীয় ধাপ শুরু হবে সোমবার। বুধবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। পরে ১৪ ফেব্রুয়ারি ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে। দ্বিতীয় পর্ব আয়োজন করবেন তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বি ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভি অনুসারীরা।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন জানান, ইজতেমা এলাকায় অবৈধ দখল-উচ্ছেদ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। 
গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার ড.

নাজমুল করীম খান জানান, ইজতেমা ময়দানকে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় রাখতে সব রকম ব্যবস্থা নিয়েছে গাজীপুর মহানগর পুলিশ।
 শুক্রবার ইজতেমা ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে দেশের সর্ববৃহৎ জুমার নামাজ। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইজত ম প রথম পর ব ময়দ ন ইজত ম

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ