বিশেষ সুবিধায় খেলাপি ঋণ পুনর্গঠনে কমিটি
Published: 30th, January 2025 GMT
বিশেষ সুবিধায় খেলাপি ঋণ পুনর্গঠনে আবারও সুযোগ দিতে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ৫০ কোটি টাকা ও তার বেশি অঙ্কের ঋণ পুনর্গঠনের জন্য একটি বাছাই কমিটি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক, সাবেক ব্যাংকার, ব্যবসায়ী ও সরকারি প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যের এ কমিটি কাজ করবে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণ যেমন– কভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক নিম্ন প্রবৃদ্ধি, বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও সর্বোপরি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণে সৃষ্ট অভিঘাত মোকাবিলা করে অর্থনীতি চলমান রাখা এবং ব্যাংক খাত সুসংহত করার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত ঋণগ্রহীতাদের ব্যবসা ও প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের মাধ্যমে সচল ও লাভজনক পর্যায়ে উন্নীত করে ব্যাংকের ঋণ আদায় নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তার সুপারিশের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক পাঁচ সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠন করেছে। কমিটির কার্যপরিধিতে ৫০ কোটি ও তদূর্ধ্ব অঙ্কের খেলাপি হওয়া ঋণ অন্তর্ভুক্ত হবে। ঋণগ্রহীতা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কিনা এবং সমস্যাসংকুল প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন ও নীতি সহায়তার মাধ্যমে ব্যবসায় ফেরানোর সুযোগ রয়েছে কিনা, তা যাছাই করে কমিটি সুপারিশ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হকের নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের কমিটিতে রয়েছেন সাবেক ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক মামুন রশীদ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব ড.
জানা গেছে, এবার আর আগের মতো ঢালাও সুবিধা মিলবে না। এতদিন নানা কৌশলে খেলাপি ঋণ কম দেখানো হচ্ছিল। সেটি বন্ধ হওয়ায় এখন দ্রুত বাড়ছে। গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা হয়েছে। মোট ঋণের যা প্রায় ১৭ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরে ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা বা ৯ শতাংশ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কৃষকের ৮ টাকার লেবু কয়েক হাত বদলের পর বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়
দেশের উত্তরাঞ্চলে সবজির অন্যতম বড় পাইকারি মোকাম বগুড়ার মহাস্থান হাট। পাইকারি এ বাজারে আজ সোমবার বাগানের বড় আকারের একটি লেবু বিক্রি করে চাষি দাম পেয়েছেন ৮ টাকা। ব্যাপারীর একহাত ঘুরে এই লেবু আড়তদারের গুদামে পৌঁছার পর দাম বেড়ে খরচ পড়ে ১০ টাকা। আড়ত থেকে পাইকারদের হাত ঘুরে খুচরা ব্যবসায়ীদের দোকানের পসরা পর্যন্ত যেতে এই লেবুর দাম বেড়ে হয় ১২ থেকে ১৩ টাকা।
পাঁচ হাত বদলের পর ১২ কিলোমিটার দূরে বগুড়ার শহরের ফতেহ আলী ও রাজাবাজারে এই লেবু খুচরা পর্যায়ে ক্রেতাদের কিনতে হয়েছে প্রতিটি ২০ টাকা দরে। সেই হিসাবে প্রতিটি লেবুতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করছেন ১২ টাকা।
বগুড়ার মহাস্থান ও রাজাবাজারে লেবু বিক্রি করতে আসা কৃষক, ব্যাপারী, আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী-ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে লেবুর উৎপাদক পর্যায়ে থেকে শুরু করে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত ধাপে ধাপে দাম বৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া গেছে।
মহাস্থান হাটে আজ সকালে গিয়ে দেখা যায়, বাগান থেকে লেবু তুলে বস্তায় ভরে হাটে বিক্রি করতে এসেছেন চাষিরা। ব্যাপারীরা চাষিদের কাছ থেকে দরদাম করে এই লেবু কিনছেন।
হাটে আসা পাইকার রিফাত হাসান বলেন, স্বাভাবিক সময়ে হাটে ১ লাখ লেবুর সরবরাহ হয়। রোজা উপলক্ষে লেবুর চাহিদা কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু এখন লেবুর মৌসুম না হওয়ায় সরবরাহ আগের মতোই আছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় লেবুর দাম এখন ঊর্ধ্বমুখী।
সদর উপজেলার কাজী নুরইল গ্রামের কৃষক ও লেবুচাষি আসহানুল কবির বলেন, তিনি এ বছর ৩ হাজার ৫০০ গাছের লেবুবাগান গড়েছেন। এক মাস পর বাগানের লেবু পুরোদমে বিক্রি করা সম্ভব হবে। এবার লেবুর ফলন খুব কম। ইতিমধ্যে বাগানের কিছু লেবু বাজারে বিক্রিও করেছেন। এবার বাগান থেকে প্রতিটি লেবু বিক্রি করে গড়ে আট টাকা দাম পেয়েছেন।
নন্দীগ্রাম উপজেলার চাকলমা গ্রামের লেবুচাষি শাহনাজ বেগম বলেন, রোজার আগে বাগানের লেবু বিক্রি করে দাম পেয়েছেন গড়ে দুই থেকে আড়াই টাকা। এখন বাগানে নতুন করে ফুল এসেছে। দেড় মাস পর বাগান থেকে লেবু বিক্রি করা শুরু হবে। এখন বাজার থেকে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে লেবু কিনতে হচ্ছে।
মহাস্থান হাটের আড়তদার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চাষি ও পাইকারদের হাত ঘুরে আড়ত পর্যন্ত আসার পর একটি লেবুর খরচ পড়ে ১২ টাকা। আড়ত থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা এই লেবু কিনে নিয়ে আরও ২ থেকে ৩ টাকা লাভ করেন। আরও এক হাত বদলের পর খুচরা ব্যবসায়ীরা এই লেবু প্রতিটি ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করছেন।
প্রতিটি লেবুতে মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভ করছেন ১২ টাকা। আজ সোমবার বিকেলে বগুড়া সার্কিট হাউসের সামনের সড়কে