দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা করার খবরে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ারদর গতকাল সাড়ে ৯ শতাংশ বেড়েছে। ছিল দরবৃদ্ধির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে। প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে গতকাল বৃহস্পতিবার এ কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ ১৩ টাকা ৭০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। সার্কিট ব্রেকার অনুযায়ী যা ছিল গতকাল কোম্পানির অনুমোদিত সর্বোচ্চ দর।
প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের গত অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা কর-পরবর্তী নিট মুনাফা হয়েছে। এতে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৮৭ পয়সা। গত  হিসাব বছরের একই সময়ে নিট মুনাফা ছিল ৬৯ লাখ টাকা, আর ইপিএস ছিল মাত্র ৪ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বাড়লেও   ৬ মাসের হিসাবে এখনও লোকসানে কোম্পানিটি। গত জুলাই-ডিসেম্বর সময়কালে কোম্পানির কর-পরবর্তী নিট লোকসান ১৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের হিসাব বছরের ওই ছয় মাসে মুনাফা ছিল ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) কোম্পানি নিট ৩৫ কোটি টাকা লোকসান করে।
এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের শেয়ারদর পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত এক মাসের বেশি সময় ধরে শেয়ারটির দর ১২ থেকে ১৩ টাকার মধ্যে স্থির ছিল। দ্বিতীয় প্রান্তিকের মুনাফা বৃদ্ধির খবরে উল্লেখযোগ্য হারে দর বেড়েছে। এই দরবৃদ্ধির ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে সাম্প্রতিক সময়ের স্বল্পমূল্যের শেয়ারগুলোর দরের বড় উল্লম্ফন। গতকালও দরবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং কোম্পানির শেয়ার। সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ দর বেড়ে শেয়ারটি গতকাল ২৬ টাকা ৪০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। অথচ বহু বছর ধরে বন্ধ এ কোম্পানির শেয়ার গত ২২ ডিসেম্বরও মাত্র ৭ টাকা দরে কেনাবেচা হয়েছিল।
বাজার সংক্ষেপ
গতকাল ঢাকার শেয়ারবাজারে অধিকাংশ শেয়ার দর হারিয়েছে। তবে বাজারটির প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের অবস্থানেই থেকেছে। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্যাংক খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধি।
গতকাল ডিএসইতে ১২০ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ২১৯টি দর হারিয়েছে এবং অপরিবর্তিত ছিল  ৫৫টির। প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় মাত্র শূন্য দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ৫১১২ দশমিক ৯০ পয়েন্টে উঠেছে।
পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ব্যাংক এবং টেলিযোগাযোগ ছাড়া বাকি সব খাতের দর কমেছে। ব্যাংক খাতের ৩৬ কোম্পানির মধ্যে ২৫টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ৫টির। এতে সূচকে যোগ হয়েছে ১৩ পয়েন্ট। বুধবারের তুলনায় শেয়ার কেনাবেচার পরিমাণ পৌনে ৭৬ কোটি টাকা বেড়ে ৩৮৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দরব দ ধ র গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের বাংলাদেশের দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের ভাষ্যে

পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ‘মুক্তিযুদ্ধে নৃশংসতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কিংবা স্বাধীনতাপূর্ব অভিন্ন সম্পদের জন্য বকেয়া অর্থ দাবির’ মতো বিষয় ফলাও করে প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের দিক থেকে যে বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে, তাতে এই অমীমাংসিত বিষয়গুলোর কোনো উল্লেখ নেই।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকায় দুই দেশের সচিব পর্যায়ে ফরেন অফিস কনসালটেশন বা আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দেড় দশক পর হওয়া এই বৈঠকে ইসলামাবাদের সাথে সম্পর্ক জোরদারের জন্য অমীমাংসিত বিষয়ের সমাধান চেয়েছে বলে বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে জানান বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন।

জসিম উদ্দিন জানান, স্বাধীনতাপূর্ব ক্ষতিপূরণ হিসেবে বাংলাদেশ পাকিস্তানের কাছে চার দশমিক তিন দুই বিলিয়ন বা ৪৩২ কোটি ডলার চেয়েছে।

আরো পড়ুন:

ঢাকায় পৌঁছেছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব

পাকিস্তানের তিন ভেন্যুতে বাংলাদেশের ছয় ম্যাচ

এছাড়া, এফওসিতে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের নৃশংসতার জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ও তুলেছে ঢাকা।

একদিন পর শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ষষ্ঠবারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়া পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক সম্পর্কে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে যৌথ অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন দিক, গাজায় ইসরায়েলি হামলার নিন্দা এমনকি জম্মু ও কাশ্মির ‘ভারতের অবৈধ দখলে' রয়েছে দাবি করে এর সমাধানের মত ইস্যু নিয়ে ঢাকার বৈঠকে আলোচনার কথা বলা হলেও মুক্তিযুদ্ধে ‘গণহত্যার জন্য ক্ষমা চাওয়া' কিংবা ‘বকেয়া অর্থের’ বিষয়ে কিছু বলা নেই ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের সাথে বৈঠক শেষে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন জানিয়েছিলেন, আলোচনায় অমীমাংসিত বিষয়ের মধ্যে ছিল, "আটকে পড়া পাকিস্তানিদের প্রত্যাবাসন, অবিভক্ত সম্পদের সুষম বণ্টন, ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রেরিত বৈদেশিক সাহায্য তহবিল হস্তান্তর এবং ১৯৭১ সালে তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত গণহত্যার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়া।’

‘বাংলাদেশের আগের একটি হিসাবে ৪০০ কোটি ডলার এবং আরেকটা হিসাবে ৪৩২ কোটি ডলার। এ হিসাব আলোচনায় বলেছি,’ যোগ করেন তিনি।

তবে, এসব ইস্যুতে একটি শব্দও ব্যয় করেনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে, অতীতের ইস্যুর চেয়ে ভবিষ্যতের সম্ভাবনার দিকেই বেশি নজর দিয়েছে ইসলামাবাদ। তাদের ভাষ্য, দেশ দুটির সাংস্কৃতিক সম্পর্ক এবং অভিন্ন ইতিহাস ও জনআকাঙ্ক্ষার কথা এসেছে আলোচনায়।

‘বৈঠকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, শিক্ষাগত ও কৌশলগত সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করেছে দুই পক্ষ,’ বলা হয়েছে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে।

সাম্প্রতিক কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগের প্রসঙ্গও এসেছে সেখানে। ‘নিউইয়র্ক, কায়রো, সামোয়া ও জেদ্দার ওই সব আলাপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করেছে।’

সম্পর্কের গতিশীলতা ধরে রাখতে নিয়মিত প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ, ঝুলে থাকা চুক্তি দ্রুত চূড়ান্ত করা এবং বাণিজ্য, কৃষি, শিক্ষা ও কানেক্টিভিটির (সংযোগ) ক্ষেত্রে সহায়তা বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে, বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দেশটির কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশিদের পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আর, বাংলাদেশ প্রস্তাব দিয়েছে মৎস্য ও সামুদ্রিক বিষয়ে কারিগরি প্রশিক্ষণের। কানেক্টিভিটিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথাও বলেছে দেশ দুটি।

করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরুর বিষয়টিকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি আকাশপথে ফের সরাসরি যোগাযোগ চালুর ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সন্তোষ জানানো হয়েছে, ভ্রমণ ও ভিসা সহজীকরণে অগ্রগতির ব্যাপারে। বৈঠকে সার্ক এবং কাশ্মির প্রসঙ্গেও আলাপ হয়েছে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উভয় দেশ সার্ক পুনরুজ্জীবনের প্রয়োজনীয়তার কথা পুনর্ব্যক্ত করেছে।

‘পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশকে ভারতের অবৈধ দখলে থাকা জম্মু ও কাশ্মিরের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব এবং কাশ্মিরি জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী দ্রুত এর সমাধানের ওপর জোর দেন তিনি,’ বলা হয়েছে ইসলামাবাদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।

ফিলিস্তিনি এলাকা বিশেষ করে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানিয়েছে দুই দেশ।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচের সাক্ষাতের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।

আরো জানানো হয়, দুই দেশের মধ্যে পরবর্তী ফরেন অফিস কনসালটেশন ২০২৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্কের মধ্যে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে পূর্ব পাকিস্তান পর্ব থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়েও সেই ইতিহাস দুই দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির ক্ষেত্রে বারবার আলোচনায় এসেছে।

এসব কারণে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক কখনোই সরলরেখায় চলেনি। আওয়ামী লীগের গত তিন মেয়াদে তা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল।

গত পাঁচই অগাস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দেশ দুটির মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা দৃশ্যমান হতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৬ এপ্রিল (বুধবার) ঢাকায় আসেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী তিনদিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাস 
  • বৃষ্টি নিয়ে যে বার্তা দিল আবহাওয়া অধিদপ্তর
  • মামলায় আটকে আছে ইকোপার্ক
  • সূচকের পতন, বেড়েছে লেনদেন
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম কমার শীর্ষে বাংলাদেশ ফাইন্যান্স
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম বাড়ার শীর্ষে দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স
  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক লেনদেনের শীর্ষে বিএসসি
  • বিদায়ী সপ্তাহে মূলধন কমেছে ১ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকা
  • ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ১.৫৪ শতাংশ
  • ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের বাংলাদেশের দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের ভাষ্যে