Samakal:
2025-03-03@20:28:16 GMT

পদ্মায় আড়াআড়ি বেড়া মাছ নেই জালে

Published: 30th, January 2025 GMT

পদ্মায় আড়াআড়ি বেড়া মাছ নেই জালে

‘আমার ছয় সদস্যের পরিবার। পদ্মা নদীতে মাছ ধরে সংসার চলে। দুই সপ্তাহ ধরে নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়ার ফলে জালে আর আগের মতো মাছ পড়ছে না। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন পার করতেছি’ বলছিলেন জেলে বিল্লাল ফকির। তিনি ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার গফুর মৃধা ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা। 
জানা গেছে, চরভদ্রাসন উপজেলার সদর ইউনিয়নের মাথাভাঙ্গা গ্রামের পদ্মা নদীতে দুটি বালুচরের মধ্যবর্তী নদীর মূল চ্যানেলে সারি সারি বাঁশ পুঁতে আড়াআড়ি বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। দুটি চরের মধ্যবর্তী প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পুঁতে রাখা সারি সারি বাঁশের পানির নিচের অংশ জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। বেড়ার বাঁধে কিছু দূর পরপর রাক্ষুসী জালের ফাঁদ তৈরি করে রাখা হয়েছে। ওই ফাঁদে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আটকা পড়ছে। বিশেষ করে প্রতিদিন ওই ফাঁদে কয়েক মণ করে জাটকা আটকা পড়ছে। 
উপজেলার বালিয়াডাঙ্গী গ্রামের জেলে খোকা মণ্ডল বলেন, ‘এই শুকনা মৌসুমে পদ্মা নদীতে ইলিশ চলাচলের মূল স্রোত ধারায় বেড়ার বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এতে পদ্মায় মাছের আকাল দেখা দেওয়ায় উপজেলার বেশির ভাগ জেলে পরিবারের আয়-উপার্জন কমে গেছে।’ 
জেলে আলামিন ফকির (৪০) জানান, এ বছর পদ্মায় বড় ইলিশ খুবই কম। অন্যদিকে প্রতিদিন ওই বেড়ার বাঁধে মণকে মণ জাটকা মারা পড়ছে। 
স্থানীয় কয়েকজন জেলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পদ্মায় আড়াআড়ি বেড়ার বাঁধ দেওয়ার কারণে উপজেলার প্রায় সাড়ে ৭০০ জেলে পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এর মধ্যে সদর ইউনিয়নের পদ্মা পারের বিভিন্ন গ্রামের দুই শতাধিক জেলের উপার্জন একবারেই বন্ধ হয়ে গেছে। 
গত বুধবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, মাথাভাঙ্গা গ্রামের প্রায় অর্ধেক পদ্মাজুড়ে আড়াআড়ি বাঁশের বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বাঁশের বেড়ার পানির নিচের অংশে ঘন জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। এভাবে নদীতে মাছ চলাচলের পথ বন্ধ করে কয়েক মিটার পর পর তৈরি করে রাখা হয়েছে জাটকা ও ইলিশ আটকের ফাঁদ। বাঁধ দেওয়ায় জড়িত জেলেরা দুই ঘণ্টা পর পর ফাঁদে আটকা পড়া জাটকা ও ইলিশ তুলে এনে বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে। 
স্থানীয়রা জানান, পদ্মা নদীতে বেড়ার বাঁধ দেওয়ার সঙ্গে হিটু মৃধাসহ এলাকার আরও দু-একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি জড়িত। খোঁজ করে বাঁধের অদূরেই হিটু মৃধাকে পাওয়া যায়। আলাপকালে তিনি জানান, অনেক টাকা খরচ করে পদ্মায় বাঁধ দিয়েছেন। মাত্র কয়েকদিন ধরে বাঁধ দেওয়া হয়েছে, বাঁধে এখনও পর্যাপ্ত মাছ আসে নাই। এখন শুধু জেলেদের খাওয়া খরচ চলছে। 
বাঁধ এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল ফকির (৩৫) জানালেন, দুই সপ্তাহ ধরে ওই বাঁধ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় নদীতে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে দিনরাত জাটকা ও ইলিশ নিধন করা হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈদ হাসান বিপ্লব বলেন, পদ্মা নদীতে একটি আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। বাঁধটির এক অংশ নদীর চরভদ্রাসন উপজেলা এবং অপর অংশ সদরপুর উপজেলার জল সীমানায় পড়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনার পর যৌথভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছেন। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ ফয়সল বিন করিমের ভাষ্য, পদ্মায় আড়াআড়ি বাঁধ দেওয়া হলে শিগগিরই তা অপসারণে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র পর ব র পদ ম য়

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ