সেতুর গার্ডার না বসিয়েই লাপাত্তা ঠিকাদার
Published: 30th, January 2025 GMT
এলজিইডির তিন কোটি ১১ লাখ টাকার একটি সেতুর কাজ পেয়েছিলেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মামুন আল মাসুদ খানের ছোট ভাই শফিকুল আলম। পিলার বা অ্যাভার্টমেন্টের কাজ সেরে ওই সেতুর গার্ডার না বসিয়েই বিল তুলে নিয়েছেন তিনি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে হামলার একাধিক মামলার আসামি হয়ে শফিকুল এখন পলাতক।
এলাকাবাসী ও জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো.
বুধবার রঘুখালী ও ছয়না ঘুরে দেখা গেছে, নরসুন্দা নদীর ওপর নির্মাণাধীন সেতুর দুই পারে দুটি অ্যাভার্টমেন্ট দাঁড়িয়ে আছে। ওপরে লম্বা লম্বা রড বেরিয়ে আছে। সেগুলোর কিছু কেটে নিয়ে গেছে চোরেরা। বাকিগুলোতে মরিচা ধরেছে।
এলাকাবাসী জানান, এখানে আগে একটি পাকা সেতু ছিল। সেটি ভেঙেই নতুন সেতু নির্মাণ হচ্ছিল। কিন্তু সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় এখন জনদুর্ভোগ বেড়েছে। তাদের সুবিধার জন্য সম্প্রতি এর পাশেই বৌলাই ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. মাহবুব আলম একটি অস্থায়ী কাঠের সেতু নির্মাণ করে দিয়েছেন। সেতুর মাথায় প্ল্যাকার্ডে লেখা আছে, মোটরসাইকেলে একজনের বেশি উঠা যাবে না। কিন্তু অনেকেই সেটি মানছেন না।
রঘুখালীর ওষুধ ব্যবসায়ী ফারুক মিয়া ও ছয়না এলাকার বিল্লাল মিয়াসহ কয়েকজনের ভাষ্য, ঠিকাদার শফিকুল আলম সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মামুন আল মাসুদ খানের ছোট ভাই। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি বিল তুলে সেতুর কাজ ফেলে চলে গেছেন। এলাকাবাসী এর প্রতিবাদে মানববন্ধনও করেছেন। এখন শফিকুল আলম মামলার আসামি হয়ে পলাতক। মামুন আল মাসুদ খানও একই কারণে পলাতক। এলাকাবাসী দ্রুত সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন।
ঠিকাদার শফিকুল আলম পলাতক থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। বুধবার জেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আমিরুল ইসলাম বলেন, ৪০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নির্মাণের জন্য শফিকুল আলমের ‘এইচটিবিএল-এসএসি’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর। কাজটি ২০২২ সালের ২৯ নভেম্বর শেষ করার কথা ছিল। এর জন্য বরাদ্দ ছিল তিন কোটি ১১ লাখ টাকা। কিন্তু সেতুর দুই পাশে দুটি অ্যাভার্টমেন্ট নির্মাণ করে প্রায় দুই বছর আগে এক কোটি ৩৯ লাখ টাকা তুলে নেন ঠিকাদার। তিনি আর কাজে ফেরেননি। সেতুর গার্ডার বসানো কাজ বাকি ছিল। আগের কার্যাদেশ বাতিল করে ভৈরবের ‘মেসার্স মমিনুল হক’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়া হয়েছে। এজন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে দুই কোটি ১৯ লাখ টাকা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এল ক ব স
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে তৎপর পুলিশ
চট্টগ্রাম মহানগরীতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের আকস্মিক ঝটিকা মিছিল করার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। মিছিলে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশের একাধিক টিম।
জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের ব্যস্ততম জিইসি মোড় এলাকায় একটি ঝটিকা মিছিল বের করে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ। মাত্র কয়েক মিনিট স্থায়ী এই মিছিলটি জিইসি মোড় থেকে সিডিএ এভিনিউ’র দিয়ে সামান্য পথ এগিয়ে নেতাকর্মীরা নিজেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ২০-২৫ জনের এই মিছিলটিতে কয়েকজনকে ভিডিও ধারণ করতে দেখা যায়। এদিন বিকেলের দিকে ওই মিছিলের প্রায় দেড় মিনিটের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে ঝটিকা মিছিলের খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে এই মিছিলটি হয়েছে বলে পুলিশের অনুসন্ধানে জানা যায়। মিছিলটি অনেক সকালে হওয়ায় আশেপাশে কোনো পুলিশের টহল বা অবস্থান ছিলো না। মিছিলের আগে পুলিশের অবস্থান রেকি করেই নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামি জোনের সহকারী কমিশনার মো. রকিবুল হাসান বলেন, “জিইসি এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কয়েকমিনিটের একটি ঝটিকা মিছিল হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। ইতিমধ্যে কার নেতৃত্বে এবং কারা এই মিছিলে অংশ নিয়েছে তাদের অন্তত ১০-১২ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। অতি দ্রুত সময়ে তারা গ্রেপ্তার হবে বলে পুলিশ আশা করছে।”
এর আগে গত বছরের ১৭ নভেম্বর মধ্যরাতে চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড়ে হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে মিছিলে থাকা দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ১৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগের আরেকটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
এতে দেখা যায়, দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৩০ থেকে ৫০ জন জামালখান এলাকায় ঝটিকা মিছিল করে সরে পড়েন। এর পাঁচ দিন পর ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/রেজাউল/ইমন