পুতুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থায় স্বাস্থ্যে চিঠি দুদকের
Published: 30th, January 2025 GMT
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কে অবহিতকরণ ও ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। প্লট জালিয়াতি মামলা, পরিচালক নিয়োগ, দ্বৈত নাগরিত্ব, উপঢৌকন গ্রহণ ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করছে সংস্থাটি। এ সংক্রান্ত সব তথ্য মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, কোনো সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদক মামলা করলে বা অনুসন্ধান ও তদন্ত সম্পর্কিত অন্য কোনো ব্যবস্থা নিলে, এসব তথ্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দপ্তর, অধিদপ্তরকে অবহিত করা হয়ে থাকে। তার পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তর-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে আইন-বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অভিযোগ-সংক্রান্ত তথ্য পেলে করা হয় বিভাগীয় মামলা। পুতুলের ক্ষেত্রেও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
গত ২১ জানুয়ারি দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন স্বাক্ষরিত চিঠিটি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়, দুদকের তথ্য অনুসন্ধানকালে পুতুলকে ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে পদায়নে রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়মবহির্ভূত কার্যকলাপের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। ওই পদে তাঁর প্রার্থিতার যোগ্যতা সম্পর্কিত তথ্যাদি যথাযথ ছিল না। মনোনয়নকালে কানাডার পাসপোর্টধারী নাগরিক ছিলেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
তিনি দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এবং তাঁর পরিবারিক প্রভাবের মাধ্যমে ঢাকার পূর্বাচল নতুন শহর আবাসিক প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লটের বরাদ্দ নেন। সে কারণে তাঁর ও সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে দুদক দুর্নীতির মামলা করেছে। এ ছাড়া তিনি সূচনা ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান চালু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অবৈধ সুবিধা গ্রহণ, ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করে নিজে লাভবান হয়েছেন ও অন্যকে লাভবান হতে সহায়তা করেছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে সয়াবিনের মূল্যবৃদ্ধির পাঁয়তারা
বড় কোম্পানিগুলো কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে আবারো সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে। চাহিদা অনুযায়ী তেল সরবরাহ করছেন না ডিলাররা।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাজধানীর নিউ মার্কেট ও কারওয়ান বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোতে ঘুরে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সয়াবিন তেলের সরবরাহ নেই। ডিলারদের পাঁচ কার্টন তেল অর্ডার দিলে এক কার্টন পাওয়া যায়। ফলে, অনেক ক্রেতা তেল না পেয়ে ফেরত যাচ্ছেন। এখন বাজারে বোতলজাত ১ ও ২ লিটার সয়াবিন তেলের সংকট বেশি।
গত ৯ ডিসেম্বর বৈঠকের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মিল মালিকদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ভোজ্যতেলের নতুন দাম অনুমোদন দেয়। সে অনুযায়ী, বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৮ টাকা বাড়িয়ে ১৬৭ থেকে ১৭৫ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৪৯ থেকে বাড়িয়ে ১৫৭ টাকা এবং খোলা পাম অয়েলের দাম লিটার প্রতি ১৪৯ থেকে বাড়িয়ে ১৫৭ টাকা করা হয়। এছাড়া, বোতলজাত পাঁচ লিটার সয়াবিন তেলের দাম ৮১৮ থেকে বাড়িয়ে ৮৬০ টাকা করা হয় তখন।
মাছ, ডিম, আলু, পেঁয়াজ ও সবজির দাম কমেছে
রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, সিম ২৫ টাকা, মুলা ১০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, দেশি শসা ৩০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০, প্রতিটি পিস লাউ ৪০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা এবং বড় সাইজের ফুলকপির জোড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে সরবরাহ ভালো থাকায় কমেছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রতি কেজি রসুন ২৪০ টাকা ও দেশি আদা ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় মাছের দাম কিছুটা কমেছে। এখন মাঝারি সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে। বড় সাইজের চাষের পাঙাসের কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ টাকা, কৈ ১৫০ টাকা, শিং ৫০০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৩০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ টাকা, দেশি পাঁচশিশালি ছোট মাছ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা।
ডিমের দামও কমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। ব্রয়লার মুরগির দাম স্বাভাবিক আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি পাওয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। সোনালি জাতের মুরগি ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৮০০ টাকায় এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা তানভীর হাসান রাইজিংবিডি বলেছেন, “বাসায় সয়াবিন তেল শেষ হয়েছে। তাই, আজ সয়াবিন তেল কিনতে বাজারে এসেছি। কিন্তু, ১ লিটার ও ২ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল পাচ্ছি না। ৫ লিটারের একটা বোতল পেয়েছি, দাম বেশি চাচ্ছে। দোকানদার বলছেন, বাজারে সয়াবিন তেল কম, তাই পাওয়া যাচ্ছে না। এখনই যদি এ অবস্থা হয়, তাহলে সামনে রমজানে কী হবে, সে চিন্তায় আছি। সরকারের উচিত, সয়াবিন তেলের দাম ও সরবরাহ ঠিক রাখা।”
রাজধানীর নিউ মার্কেটের রাইছা স্টোরের স্বত্বাধিকারী কাইয়ুম মজুমদার রাইজিংবিডিকে বলেছেন, “আমরা অর্ডার দিয়ে ঠিকমতো সয়াবিন তেল পাচ্ছি না। ডিলাররা বলছেন, কোম্পানি ঠিকমতো তেল সরবরাহ করছে না। অনেক ক্রেতা এসে সয়াবিন তেল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। সামনে রমজানকে কেন্দ্র করে আরেক দফা সয়াবিন তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা আছে।”
ঢাকা/রায়হান/রফিক