Samakal:
2025-03-03@09:35:14 GMT

এই চিঠি পোস্ট করা হয়নি

Published: 30th, January 2025 GMT

এই চিঠি পোস্ট করা হয়নি

একটা পোস্ট অফিসের বারান্দা লাল সুরকি দিয়ে তৈরি। অফিস ঘরের জানালায় লম্বা গরাদ। গরাদের শরীর আঁকড়ে ধরেছে মাধবীলতার ঝাড়। ভিতরে জানালা ঘেঁষে পুরোনো দিনের মেহগনি কাঠের একটা টেবিল। টেবিলের ওপর নানান কাগজপত্রের স্তূপ। একটা কাঠের বাটিভর্তি আঠা। যতদূর মনে পড়ে গ্রামে ‘গদ’ বলত সবাই। ড্রয়ার টানলে ভর্তি ডাকটিকিট, এনভেলপ, কাঠের তৈরি সিল। আমাদের বাড়ির পোস্ট অফিস যেখানে একদা পায়ে ঘুঙুর বেঁধে বর্শা হাতে রানার আসত অনেক রাতে। মানুষটার চোখ জ্বলজ্বল করত নানান উত্তেজনায়। সবকিছুরই নিজস্ব ঘ্রাণ থাকে। যেমন থাকে লিখে রেখে দেওয়া কোনো চিঠির মধ্যে। শব্দের গন্ধ কী রকম হয়? 
আমি টেবিলে বসে তোমাকে চিঠি লিখছি। তুমি বাড়ির পুকুরঘাটের অসংখ্য সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসছ ভেজা কাপড় হাতে। উঠানে রৌদ্রে মেলে দিচ্ছ সাদা শাড়ি। টিয়া পাখিদের ব্যস্ত ওড়াউড়ি, হাওয়ায় বাতাবি লেবুর গাছের নিচে ঝরে পড়ছে অসংখ্য ফুলের অসমাপ্ত বেদনা।
তুই অনেক দিন চিঠি লিখিস না। শরীর ভালো আছে তোর? ভালো করে খাওয়াদাওয়া করিস।
কে বলল লিখি না? এই যে লিখছি চিঠি তোমাকে। চিঠিতে প্রিয়তমাসু অথবা সুচরিতাসু সম্বোধন লেখার বয়সে দক্ষিণের ঘরে বসে লিখছি তোমাকে। তুমি খাবার ঘরের চৌকির ওপর বড় বোলে ভাত বেড়ে রাখছ, কাচের ফুল তোলা ছোট প্লেট দিয়ে ঢেকে রাখছ লাউ আর চিংড়ি মাছ দিয়ে শীতকালে রাঁধা মিষ্টি তরকারি। তুমি কিছুই জানতে পারছ না। একটা বড় চিঠি লিখছি আমি তোমাকে।
দাদু, কেমন আছ তুমি? অনেক দিন হলো তোমার চিঠি পাই না। আমাদের একতলা বাসার পেছনের বারান্দায় এই শীতে ভুলু কুকুরটা অনেকগুলো বাচ্চা দিয়েছে। ওদের পিচবোর্ড দিয়ে ঘেরা একটা জায়গায় বস্তা পেতে ওদের রাখার ব্যবস্থা করেছি। জানো, অনেক রাতে বাসায় এখনও চোর আসে। যদি বাচ্চাগুলো চুরি করে! তাই রাতে ওদের তোমার ঘরে এনে রাখি।
হারিকেনগুলোর চিমনি পরিষ্কার করতে এসেছে অলোক ভাই বিকালবেলা। উত্তরের ঘরের বারান্দায় সার দিয়ে রাখা বাতিগুলো সন্ধ্যা নামলে উজ্জ্বল হয়ে জ্বলে উঠবে বিভিন্ন ঘরে। শীতের কুয়াশা ভাঁজ খুলে ছড়িয়ে যাচ্ছে মহিষখোলার মাঠে। অন্ধকার জমছে জাম গাছের গোড়ায়। লেবু ঝোঁপের আড়ালে জেগে উঠছে জোনাকি।
তোকে একটা চিঠি দিয়েছি পরশু। পেলি কিনা জানাবি। ভেবেছিলাম গত পরশু তুই আসবি। মনে হচ্ছিল তোর কথা। সেই কবে ঢাকায় গেলি। বললি এক সপ্তাহ পর আসবি। কই, এলি না তো! মিনা মিয়াকে পাঠিয়েছিলাম মানিকনগর ঘাটে। ও দুপুর পর্যন্ত বসে থেকে ফিরে এসেছে। জানিস, রান্নাঘরের পাশে মরিচ গাছটা ঝাঁকিয়ে মরিচ হয়েছে এবার। সবুজ গোল গোল মরিচ। পরিষ্কারের মা আজকে সকালে এসেছিল ভাঁপা পিঠা বানাতে। তোর ভাবি মানা করে দিয়েছে। অনুর একটাই কথা– বুবু, ছেলেটা বাড়ি এলে পিঠা বানাব। 
শীত পার হয়ে বসন্তে পড়েছে মাস। আমি কি এখনও চিঠি লিখে চলেছি তোমাকে? ঘুম থেকে উঠে লিখছি, ঘুমের মধ্যে লিখছি। ঘরের দরজায় ধাক্কা দিয়ে তুমি বলছ, নাশতা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে, খাবি আয়। উঠানে বড় মোরগটা ডাকছে ডানা ঝাপটে। গোয়ালঘরে কেউ গরুর দুধ দোয়াচ্ছে। শীত শেষ হয়ে গেছে দেখে আলস্য ভেঙে কোকিল ডাকছে দূরে। আচ্ছা, তুমি আমাকে প্রথম কবে কোলে নিয়েছিলে সেই শিশুকালে? ১৯৬৪ সালের মার্চ না এপ্রিল মাসে? তারিখটা মনে আছে নাকি ভুলে গেছ? তখন কি এই শহরে এত কোকিলের উৎপাত ছিল? 
সেই যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে একটা নিভুনিভু শান্ত পাড়ার টিনের বাড়িতে আমার জীবনের শুরু। তারপর থেকেই তোমার কোলেপিঠে বড় হয়ে ওঠা। সাদা থানে তরকারি আর জর্দার গন্ধ মিলেমিশে গিয়ে কবে যেন আমার আশ্রয়ের চিরস্থায়ী ঘ্রাণ হয়ে উঠেছিলে তুমি। আজও কি তুমি তোমার আঁচলে আড়াল করে রাখতে চাও আমাকে? 
তোমার মনে পড়ে, রাজনৈতিক পরিস্থিতির ভীষণ বারুদ মাখা বিস্ফোরক দিনগুলোতে আমার জন্য দুপুরবেলা ভাত আগলে বসে থাকতে? আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বাড়ি না ফিরলে ভাত খেতে না। আমি বাধ্য হয়ে ফিরতাম। আমার পরনের শার্টে তখন টিয়ার গ্যাসের ঝাঁজের বদলে তোমার অপেক্ষার দাগ লেগে থাকত। নেশায় ভীষণ লাল আমার চোখে জেগে থাকত ঘরে ফেরার পথ। 

আমি চিঠি লিখছি। একটাই চিঠি লিখে চলেছি। একটা জীবন ধরেই তো লিখছি তোমাকে। কোনো একদিন আমি গ্রামে যাচ্ছি হয়তো। দুপুরে তুমি লঞ্চঘাটে ছাতা হাতে লোক পাঠিয়েছ। তার চোখ ফাঁকি দিয়ে আমি ঘাটের ঢাল বেয়ে নেমে পড়েছি সড়কে। মাথার ওপর জুন মাসের রোদ। খালের পানিতে যেন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। গাছগুলো ক্লান্ত রোদ সহ্য করতে করতে। হাওয়া ভেসে আসছে ক্ষেতের ওপর হাত বুলিয়ে। ভেজা পাটখড়ির গাদা থেকে কেমন একটা গন্ধ। তোমার মনে পড়ে, সেই দিনগুলির কথা? অপেক্ষা মৃত্যুর চেয়েও কষ্টের। 
নয় বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল তোমার। চৌদ্দতে সাদা থান পরে ফিরলে বাপের বাড়িতে। কোলের কাছে ধরা দুই সন্তান। তখন সাদা শীতের মতো ছিল তোমার জীবন? কখনও সেই শীত কেটেছিল কি? চিঠি, চিঠি, চিঠি। অনেক শব্দ লেখা কাগজ উড়ছে দেখো আমাদের গ্রামের বাড়ির বৈঠকখানার পোস্ট অফিসের বারান্দায়। চিঠি উড়ছে এই শহরে ভাড়া বাড়ির ঘরে, হাসপাতালের বেডে। সব তোমার আমাকে লেখা চিঠি, সব আমার তোমাকে লেখা চিঠি।   
হলুদ রঙের খাম, পোস্টকার্ড। তাতে লাগানো ডাকটিকিটে চা বাগানের ছবি, ইলিশ মাছের ছবি। তুমি নানান ছবিওয়ালা ডাকটিকিট লাগিয়ে আমাকে চিঠি লিখতে। চীন দেশে তৈরি একটা কালির কলম ছিল তোমার। মাঝে মাঝে আমাকে কালি ভরে দিতে বলতে। রাতে সব কাজ শেষ করে কাঠের চেয়ার-টেবিলে বসে চিঠি লিখছ তুমি। আমি আজও দেখতে পাই তোমার চশমার কালো ফ্রেম, মনোযোগী দৃষ্টি কাগজে ফুটিয়ে তুলছে গুটি গুটি অক্ষর। তুমি আমাকেই চিঠি লিখে চলেছ। আর আমি দূরত্বে বসে দেখছি তোমাকে। আমাদের দুজনের মাঝে নিঃশব্দ সম্পর্কটা কবে থেকে গড়ে উঠেছিল? বাড়ি গেলে তোমার বিছানার পাশে দাঁড়ানো বহু পুরোনো কাঠের আলমারিটার ওপর ছিল আমার একচ্ছত্র অধিকার। তোমার ব্যবহৃত পানি খাওয়ার গ্লাস, পান রাখার পেতলের পাত্র, পানির সোরাই, কাঠের তলায় ট্রাংকে পুরোনো বইপত্র, ভাঁজ করা জাপানি পাখা, কাচের বাক্সে রাখা রুশ দেশের পুতুল– সবকিছু ছিল আমার একান্ত নিজস্ব। ভীষণ এক দাবি তোমার প্রতি আমার। তোমারও তাই ছিল আমি জানি। ওই আলমারিতে বিস্কুটের কৌটাটাও বাড়ি গেলে আমার হয়ে যেত। গ্রামের বাজার থেকে কেনা নাবিস্কো বিস্কুটের ঘ্রাণে জীবন ভরে উঠত একদা। জানো, তোমার পানি খাওয়ার গেলাসটা আমি আজও ব্যবহার করি। ওই গেলাসের গায়ে তোমার নামের আদ্যক্ষর খোদাই করা– এইচবি, হাসিনা বানু। 
আমার প্রতি তোমার ভালোবাসা ছিল মহাভারতের ধৃতরাষ্ট্রের ন্যায় অন্ধ। কিছু সম্পর্ক এ রকমই হতে হয় এখন বুঝি। টেকেন ফর গ্রান্টেড বলে একটা কথা আছে। আমিও তোমার কাছে তাই ছিলাম। কেউ বলত, প্রশ্রয় দিয়ে মাথায় তুলেছ তুমি আমাকে। কিন্তু তীব্র ভালোবাসা পাওয়ার অনুভূতি ছাড়া জীবনের অনেক অনুভূতি মরে যায়। মানুষ তা জানতে না পেরেই মরে যায়। আমার শেষ পাওয়া চিঠির ডাকনাম ভালোবাসা ছিল আমি আজ বুঝতে পারি। 
আমার চলার পথ এখনও স্থির নয়। কেঁপে উঠি আজও পথ বদলের ধাক্কায়। আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হই। আমার মাথার চুল সাদা হয়ে গেছে। মুখের রেখায় বয়সের দাগ। উচ্ছৃঙ্খল আর উদ্বাস্তু রয়ে গেলাম একটা জীবন। তুমি জানো, ছোটবেলায় অসুখ করলে মনে হতো, তোমাকে জড়িয়ে ধরলে আমার সব অসুখ সেরে যাবে? যেতও তাই। ভালোবাসার জোর বোধ হয় একেই বলে। কবে জড়িয়ে ধরেছিলে শিশু শরীর আমার, শীতের মতো সাদা শাড়ি পরিত্রাণ হয়েছিল আমার তার ইতিহাস জানে আমার সব না-লেখা চিঠির ভূমিকা। 
কত চিঠি লেখা হয়েছিল একদিন। রানার আসেনি। সেই গ্রামের বৈঠকখানার পোস্ট অফিস আজ ঘুমিয়ে পড়েছে। আমার চিঠির শুরুতে লেখা থাকত– শ্রদ্ধাভাজনেষু দাদু। তুমি লিখতে, কল্যাণীয়েষু অদিত। ডাকঘর মৃত চিঠি বহন করে না বলে শুনেছি। আজন্ম ভালোবাসার কাঙাল আমি আজও চিঠি লিখে চলেছি শব্দের পর শব্দ সাজিয়ে। তোমার স্নেহের হাওয়া কবে পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। আমি ডাকঘর খুঁজি হয়তো আজও। খুঁজি পুরোনো দিনে লেখা চিঠির শব্দগুলো। লিখতে বসে তোমাকে লেখাই হলো না আমার অভিমান আর যন্ত্রণার ভূমিকা। চিঠিগুলো ডাকঘরে জমে থাকা শীত শেষে মরে যাওয়া কুয়াশার মতো তোমার সাদা আঁচলের সূত্র খুঁজতে খুঁজতে এতদূর। 
ভালো কথা, ইতি শব্দটা বড় মারাত্মক। কেমন সব শেষ হয়ে যাওয়ার গন্ধ লেখে থাকে দুটি শব্দের শরীরে। আমি কোনোদিন লিখতে চাইনি তোমাকে এমন শব্দ। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ

অন্য বছরের তুলনায় এবার রোজার আগে বেশির ভাগ নিত্যপণ্যের দাম বলা চলে এক প্রকার স্বাভাবিক। তবে কয়েকটি পণ্যে রোজার আঁচ লেগেছে। বিশেষ করে এ তালিকায় রয়েছে লেবু, বেগুন, শসাসহ ইফতারিতে ব্যবহার হয় এমন পণ্য। চাহিদা বাড়ার সুযোগে পণ্যগুলোর দর কিছুটা বেড়েছে।

শুক্রবার ছুটির দিনে কারওয়ান বাজারসহ রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার চাঁদ দেখা গেলে রোববার থেকে শুরু হবে পবিত্র মাহে রমজান। এর আগে সবাই অগ্রিম বাজার করে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। এর কিছুটা প্রভাবও পড়েছে বাজারে।

খুচরা ও পাইকারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বলেন, এখন লেবুর মৌসুম নয়। ফলে প্রায় এক মাস ধরে দর বাড়তি। এ ছাড়া বেগুন, শসাসহ যেগুলোর দাম বেড়েছে তার মূল কারণ ক্রেতাদের বেশি পরিমাণে কেনা। রোজার আগমুহূর্তে প্রতিবছরই এসব পণ্যের দর বাড়ে। তবে পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে সামনের দিনগুলোতে দর বাড়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করেন তারা।

শরবত তৈরির অন্যতম উপাদান লেবু। রমজানে ইফতারে কমবেশি সবাই শরবত খাওয়ার চেষ্টা করেন। ফলে লেবুর চাহিদা বেড়ে যায়। আর এ সুযোগে বাড়তি দাম নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে প্রতি হালি শরবতি বা সুগন্ধি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকা এবং আকারভেদে অন্য লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাসখানেক আগে অন্তত ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে কেনা গেছে লেবুর হালি। তবে এখনও বাড়লেও গত বছরের এ সময়ের তুলনায় কিছুটা কম রয়েছে দাম।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি লেবু ব্যবসায়ী জালাল আহমেদ সমকালকে বলেন, লেবুর উৎপাদন কম। কারণ, এখন লেবুর মৌসুম নয়। তাছাড়া অনেক দিন ধরে বৃষ্টিপাত নেই। এ জন্য ফলন ভালো হচ্ছে না। সেজন্য বাজারে লেবু কম আসছে। কিন্তু রোজার কারণে মানুষ আগেভাগে লেবু কিনছেন। মূলত এ জন্য দর বাড়তি।

বাজারে এখন ভরপুর শসা রয়েছে। হাইব্রিড ও দেশি শসার পাশাপাশি ছোট আকারের খিরাও পাওয়া যাচ্ছে। হাইব্রিড শসা ও খিরার কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেনা গেলেও দেশি জাতের শসা কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। সপ্তাহখানেক আগে এসব শসা অন্তত ১০ থেকে ৩০ টাকা কমে কেনা গেছে। অবশ্য, এ দর গেল রমজানের চেয়ে বেশ কম। গত বছর এ সময় শসার কেজি সর্বোচ্চ ১১০ টাকা ছুঁয়েছিল।

এখনও টমেটোর ভর মৌসুম চলছে। ফলে বাজারে দেশি টমেটোর পর্যাপ্ত সরবরাহ দেখা গেছে। সেজন্য দাম এখনও নাগালে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৪০ টাকায়।
বেগুনি তৈরি করতে লম্বা বেগুনের দরকার হয়। সেজন্য রোজার সময় লম্বা বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়েছে দামে। পাঁচ-ছয় দিন আগেও প্রতি কেজি লম্বা বেগুন কেনা গেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। প্রায় দ্বিগুণের মতো দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। তবে পাড়া-মহল্লায় ভ্যান থেকে কিনতে গেলে ক্রেতাকে কেজিতে বাড়তি গুনতে হচ্ছে অন্তত আরও ১০ টাকা। বছরের অন্য সময়ে গোল বেগুনের দর বেশি থাকলেও এখন স্বাভাবিক। প্রতি কেজি কেনা যাবে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়।

কারওয়ান বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা ইয়াকুব আলী বলেন, এখনও শীতের সবজিতে বাজার ভরপুর। লম্বা বেগুনের চাহিদা বেশি। এ কারণে কেউ কেউ দর বেশি নিচ্ছে। তবে অন্য জায়গায় দর বাড়লেও কারওয়ান বাজারে বাড়েনি বলে দাবি করেন এই বিক্রেতা।

গাজরের সরবরাহ রয়েছে বেশ ভালো। ফলে দর বাড়ার তালিকায় উঠতে পারেনি মিষ্টি জাতীয় সবজিটি। প্রতি কেজি গাজর কেনা যাচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। গত বছরের তুলনায় এ বছর কম দরে মিলছে পেঁয়াজ। মানভেদে দেশি প্রতি কেজি পেঁয়াজ কেনা যাচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়।

রমজানে কাঁচামরিচের চাহিদা বেশি থাকে। তবে এবার ঝালজাতীয় পণ্যটির দর নাগালের মধ্যেই রয়েছে। কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকায়। মাস দুই-তিনেক ধরে এ দরের আশপাশেই বিক্রি হচ্ছে মরিচ।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও ঢাকা বিভাগীয় প্রধান বিকাশ চন্দ্র দাস সমকালকে বলেন, রোজা উপলক্ষে রোববার থেকে ঢাকা মহানগরে ১০টি বিশেষ তদারকি দল মাঠে নামবে। তারা বিভিন্ন বাজারে তদারকি করবে। রমজানজুড়ে চলবে এ তদারকি কার্যক্রম। রোববার সকালে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কারওয়ান বাজারে এ তদারকি কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও পুরোপুরি কার্যকর হয়নি: রিজভী
  • কাজ না করে আবহাওয়ার দিকে তাকিয়ে কর্মকর্তারা
  • বিজিএমইএ নির্বাচনে ৬৯০ ভুয়া ভোটার
  • ভারতের কারণে অস্ট্রেলিয়ার পর দ. আফ্রিকাও গেল দুবাইতে
  • কখনও বলিনি আমি আর অভিনয় করব না: নাঈম
  • রোজা শুরুর আগেই লেবু শসা ও বেগুনে উত্তাপ
  • বিনিয়োগকারী টানছে না শেয়ারবাজার
  • কেন সামাজিক মাধ্যমে ‘যাওয়ার সময়’ লিখেছেন, খোলাসা করলেন অমিতাভ