নয়া দুনিয়ার ভ্রূণ
শিহাব সরকার
জ্যোৎস্নার ধূলিঝড়ে যুবক অন্ধ স্বপ্নজালে
তরুণ কবির শত ডানা। কলরব। শত গর্জন
ডানা ভর করে অলীক পাখিরা উড়ে যায়
চেনা নদীতীর থেকে, নামে কুয়াশার ঝাউবনে
পাখি ও নদীর জীবন অনাদিকাল এই ধরনে।
বিপ্লবী কবিদের দ্যাখ হাই তোলে বারবার
স্বপ্নভুক তরুণেরে ক্লান্ত করে এইসব চলচ্ছবি।
কবি চায় পিলে চমকে দিয়ে ছুটুক সুনামি
কেন নয়, সকলেই করে চন্দ্র-বন্দনা, সকলের
ছায়াপথে আছে একেক জন মনামি।
ওরা কি চাহে না ঘুমে ঢুলুঢুলু কবিতাকে
চমকে দিয়ে আকাশ চিরে যাক দৈব বিদ্যুৎ
চৈত্রের রাতে প্রবীণ নভোচারীরা সব ফসিল।
নগর জ্বলছে, মৃত পাখিসব ঝরে পড়ে …
মার্কেজ, তোমার মুনিয়া মৌটুসি লালঝুটি টিয়া
কেউই বাঁচবে না প্রলয়ে? কবি ধুঁকছে ধূলিঝড়ে
তখনই স্বপ্নগ্রস্ত যুবক ঘুরে দাঁড়ায়
নয়া দুনিয়ার ভ্রূণ হারানো প্রত্ন নগরীর গুহায়।
সারলৌকিক
এমরান হাসান
শরীর ছিল।
বাঁকে ছিল উড়ে যাওয়া পাখি
অন্ধ শরীরে কপোত ফিরেছিল বাড়ি। বাতাসের নদী সাঁতরে রয়ে গেল নোনা আলো। তার বিপরীতে ঘুম গড়েছিল রাত; কামনার ঘ্রাণে পোড়া ধলেশ্বরী পাড়ে বহুদিন একা শুয়েছিল ঘাসফুল, জল আর বয়সের নদী। পাখিদের পায়ে তবু হারানো স্মৃতির ভিড়। তাঁতবোনা রাতের নকশায় আনন্দিত কালপুরুষ। নদীর স্রোতে ফেরে তার কামজ শরীর। আনকোরা শিকারির পায়ে বেঁধে দিয়ে বয়সের দায়; কোনকালে কে তুলে ধরে শরীরের প্রাণ?
বাঁকে বাঁকে রাত ছিল লেখা .
মস্তক নেমে আসবে মাটির কাছে
স্নিগ্ধা বাউল
বহুদিন এমন ঝুলতে চেয়েছিলাম
বিছানা থেকে সিলিং ফ্যানের দূরত্বে
কিংবা পড়ার টেবিল থেকে জানালার গ্রিল
তোমার অবিচার রাষ্ট্রের কাছে
ঝুলতে চেয়েছিলাম আশ্চর্য অশোক গাছে
বোধিবৃক্ষে তপ্ত রোদের নিচে
আলোকের মতো এক ধূমকেতু
কলাভবনের ছাদে কিংবা অপরাজেয় বাংলায়
বাংলা বিভাগে
মরে গেলে ঠিক চিনতে আমায়!
এমন সকালে ঝুলতাম অধিকারে
মুক্তির আশায় ...
অভিমানী মস্তক নেমে আসবে মাটির কাছে
হৃদয়ে স্থান নেবে জিহ্বা
আর মধ্যাকাশে উড়বে আমার স্তন
বহুবার এমন মৃত্যুর কথাই ভেবেছি
আকাশ বাতাস তোলপাড় করা মৃত্যু
সার্টিফিকেটের গোলামের মৃত্যু
দম ফুরিয়ে আসা জীবনের মৃত্যু!
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ঠিকাদার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ২ প্রকৌশলীকে হুমকির অভিযোগ
খুলনা নগরীর খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগের বিরুদ্ধে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুই প্রকৌশলীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কুয়েটের একটি ভবনের ছাদের ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে লাভ আরও বেশি নির্ধারণের কথা বলেছিলেন ওই ঠিকাদার। এ নিয়ে প্রকৌশলীদের তিনি হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ প্রেক্ষাপটে কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াত ও নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. গোলাম কিবরিয়া সোমবার কুয়েট উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করে নিরাপত্তা চেয়েছেন।
সূত্র জানায়, কুয়েটের ১৩ নম্বর ভবনের ছাদের ওপর ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজ নিয়েছেন মোল্লা সোহাগ। কাজটি কয়েকদিন আগে শুরু হয়। গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে ঠিকাদার সোহাগ প্রথমে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এ বি এম মামুনুর রশিদ এবং অন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। গালাগাল করতে নিষেধ করলে তিনি গোলাম কিবরিয়াকেও গালাগাল ও হুমকি দেন। পরে তিনি একই পরিচয় দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে ফোনে গালাগাল ও হুমকি দেন।
উপাচার্যের কাছে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী লিখিত অভিযোগে বলেন, ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজের দর প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা বাজারদরের সঙ্গে সরকারি নিয়মে ভ্যাট, আইটি ও ১০ শতাংশ প্রফিট বা লাভ (পূর্বনির্ধারিত) যুক্ত করে নির্ধারণ করেন। ঠিকাদার সোহাগ ১০ শতাংশ লাভ কেন যুক্ত করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে, তাঁকে আরও বেশি লাভ দিতে হবে বলে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে জানান। এ কথা বলার পর প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও শেখ আবু হায়াতকে গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন সোহাগ। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াত বলেন, রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলে– ‘তুই চেয়ারের পরে বসে সবাইরে ১০ লাখ ২০ লাখ টাকার কাজ দিস। আমাকে দিছিস টেন পারসেন্ট লাভে।’ এই বলে আমাকে যাচ্ছেতাই বলে গালাগাল করেন। পাঁচ মিনিট পর ফোন দিয়ে আমাকে দেখে ছাড়বেন, আমার বাড়ি আক্রমণ করবেন, ফুলবাড়িগেটে গেলে আমাকে দেখে নেবেন– এসব বলে হিুমকি দেন।
নিজের সাংগঠনিক পরিচয় ও প্রকৌশলীকে ফোন দেওয়ার কথা স্বীকার করেন মোল্লা সোহাগ। তবে কোনো ধরনের ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। মোল্লা সোহাগ বলেন, আমার নেতার অর্ডার আছে– আমি কোনো জায়গায় কোনো টেন্ডারেও যাই না, কোনো ঠিকাদারিতেও নেই। আমার কোনো কাজ কুয়েটে চলে না। আমার ট্রেড লাইসেন্সই নেই, কাজ পরের কথা। আমি তাদের (প্রকৌশলী) ফোন দিয়েছিলাম, কথা হয়েছে, তবে কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি।
কোনো কাজ চলছে না, তাহলে প্রকৌশলীদের কার হয়ে ফোন দিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আবু হায়াত ও গোলাম কিবরিয়াকে ফোন দিলে ভালোভাবে জানতে পারবেন।’