রাজধানীর আদাবরে সুমন শেখ (২৬) নামে এক যুবককে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই যুবকের বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ৩টার দিকে আদাবরের বালুর মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত সুমন শেখ জানান, তার বাসা দারুসসালামের আনসার ক্যাম্প এলাকায়। পেশায় রাজমিস্ত্রি। সকালে আদাবর ১০ নম্বর এলাকায় তার ফুফুর বাসায় যান তিনি। পরে দুপুরের দিকে ফুফুর বাসা থেকে বের হয়ে দারুসসালামে আসার পথে আদাবর বালুর মাঠ এলাকায় পৌঁছালে ‘টুন্ডা বাবু’সহ কয়েকজন তার কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিতে চায়। ওই সময় বাধা দিলে তারা চাপাতি দিয়ে তার হাতে আঘাত করে। এতে তার বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

সুমনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা মো.

লিটন জানান, আদাবরের বালুর মাঠ এলাকায় হাত চেপে ধরে কান্নাকাটি করছিল সুমন। পরে কাছে গিয়ে দেখতে পাই তার বাম হাতের কবজি কেটে ফেলা হয়েছে। ওই সময় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি।

সুমনের দাবি, মুঠোফোন ছিনিয়ে নেওয়া কাউকেই তিনি আগে থেকে চিনতেন না। তবে ঘটনার সময় একজনের মুখে ‘টুন্ডা বাবুর’ নাম শুনতে পান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানান, আদাবর এলাকা থেকে ওই যুবককে আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার বাম হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তার চিকিৎসা চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদপ র এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে অভ্যুত্থানকে ধ্বংসের চেষ্টা করছে: জোনায়েদ সাকি

ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে জুলাই অভ্যুত্থানকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেছেন, দেশের মানুষ যখন বিরাট এক অভ্যুত্থান করে নতুন বাংলাদেশের যাত্রা দেখছেন, তখন অনেকেই যেন ওই শেখ হাসিনার অপতৎপরতার মতো নানাভাবে আবার দখলদারি করতে এবং জনগণের কণ্ঠ ও স্বাধীনতা রুখে দিতে চান।

রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আজ শুক্রবার বিকেলে এক বিক্ষোভ সমাবেশে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন। গণসংহতি আন্দোলনের উদ্যোগে ‘গাজা ও রাফার মজলুম ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা’র প্রতিবাদে ওই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশের মজলুমরা আজ যদি ঐক্যবদ্ধ হই, আমরা যেমন অভ্যুত্থান করে হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি...। বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তৈরি করে এ দেশে গণতন্ত্র কায়েম করতে পারব এবং সকলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারব।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ চায় তারা নিজের মর্যাদা নিয়ে বাঁচবে, নিজের চিন্তা ও মত প্রকাশ করতে পারবে, এ জন্য ভয় পেতে হবে না। ছাত্ররা হলে থেকে নিজের চিন্তা প্রকাশ করতে পারবে, আবরার ফাহাদের মতো শহীদ হতে হবে না। তিনি আরও বলেন, কেউ যদি এটা বন্ধ করতে চায়, তারা হাসিনারই পথ অবলম্বন করছে। শেখ হাসিনার নতুন রূপে হাজির হওয়া বাংলাদেশের মানুষ বরদাশত করবে না।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ হচ্ছে সেটাই, যখন আপনার নিজের মত অন্যর ওপর চাপিয়ে দিতে চান। আপনি আপনার মত প্রকাশ করবেন, অন্যকে আহ্বান করবেন। মত প্রকাশ করার জন্য জবরদস্তি করার অধিকার কারও নেই। জবরদস্তি মানেই ফ্যাসিবাদ।’

ইসরায়েলের জায়নবাদী প্রকল্প এক ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী প্রকল্প মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি বলেন, বছরের পর বছর ধরে তারা ফিলিস্তিনের জনগণের ওপর যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ, নিপীড়ন ও দখলদারত্ব চালিয়ে আসছে, তা মানব জাতির জন্য কলঙ্ক। ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে বিশ্বের সব বিবেকবান মানুষের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শান্তিকামী মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে বিশ্বের দরবারে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নিন, রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশের মানুষের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে সোচ্চার হোন।’

গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক বলেন, বাংলাদেশেও নানা নির্যাতন দেখেছি। এ দেশে ধর্মীয় নির্যাতনকে কেন্দ্র করে পাশের দেশ ভারত তাদের ফায়দা তুলতে চায়। নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

বাংলাদেশের নারীরা নানাভাবে আক্রমণের শিকার হচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, মাজারে যাঁরা ধর্মচর্চা করেন, তাঁদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। ফ্যাসিস্টরা নানাভাবে অভ্যুত্থানকে ধ্বংস করতে চাইছে।

গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, বিশ্বের যত নিপীড়িত মানুষ আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে নিপীড়িত হচ্ছে ফিলিস্তিনের জনগণ। অথচ তাদের এই নিপীড়ন দেখেও না দেখার ভান করে তথাকথিত বিশ্ব বিবেক। তিনি বলেন, একদিকে সারা দুনিয়ার বিবেকবান মানুষ ফিলিস্তিনের জনগণের পক্ষে সোচ্চার, অন্যদিকে ট্রাম্প-নেতানিয়াহু জুটি গাজায় গণহত্যা চালিয়ে সেখানে প্রমোদনগরী তৈরির স্বপ্ন দেখছে। এই নব্য ফ্যাসিবাদীদের বিরুদ্ধে শান্তিকামী বিবেকবান গণতন্ত্রকামী মানুষের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু, তরিকুল সুজন প্রমুখ। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন কৃষক মজুর সংহতির সাধারণ সম্পাদক আলিমুল কবীর, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহিম চৌধুরীসহ ঢাকা জেলা ও মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা–কর্মীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ