প্রায় ৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এবং ময়মনসিংহ-২ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক এমপি শরীফ আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ কমিশনের পক্ষে এ মামলা করা হয়েছে বলে ব্রিফিংয়ে জানিয়েছেন সংস্থার মহাপরিচালক ও মুখপাত্র আক্তার হোসেন।

মামলায় শরীফের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধভাবে ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখল রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি ১২টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৪২ কোটি ৬৮ লাখ ৮১ হাজার ৮১৬ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তর করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়।

শরীফ আহমেদের স্ত্রী শেফালী বেগম, শ্বশুর গোলাম মোস্তফা, শাশুড়ি জাহানারা বেগম, দুই শ্যালক শাহ আলম ও মোহাম্মদ শামীমের নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ থাকার প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুদক।

তাদের ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। লেনদেনকৃত অর্থের উৎস জানতে সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ দেওয়া হলেও তারা হাজির হননি।

বিপুল পরিমাণ লেনদেন করা অর্থ অন্য কোনো মাধ্যমে বিনিয়োগ, হস্তান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে তারা কোনো অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন কিনা এবং এ সম্পদ সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সম্পদ বলে সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে মনে করেন দুদক কর্মকর্তারা।

বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ব্যাপক লেনদেনের বিষয়টি অধিকতর যাচাইয়ের জন্য শরীফ আহমেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আলাদা করে সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য নোটিশ পাঠানোর সিদ্ধান্তও নিয়েছে দুদক।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে তৎপর পুলিশ

চট্টগ্রাম মহানগরীতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের আকস্মিক ঝটিকা মিছিল করার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। মিছিলে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশের একাধিক টিম। 

জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের ব্যস্ততম জিইসি মোড় এলাকায় একটি ঝটিকা মিছিল বের করে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ। মাত্র কয়েক মিনিট স্থায়ী এই মিছিলটি জিইসি মোড় থেকে সিডিএ এভিনিউ’র দিয়ে সামান্য পথ এগিয়ে নেতাকর্মীরা নিজেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ২০-২৫ জনের এই মিছিলটিতে কয়েকজনকে ভিডিও ধারণ করতে দেখা যায়। এদিন বিকেলের দিকে ওই মিছিলের প্রায় দেড় মিনিটের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। 

এদিকে ঝটিকা মিছিলের খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে এই মিছিলটি হয়েছে বলে পুলিশের অনুসন্ধানে জানা যায়। মিছিলটি অনেক সকালে হওয়ায় আশেপাশে কোনো পুলিশের টহল বা অবস্থান ছিলো না। মিছিলের আগে পুলিশের অবস্থান রেকি করেই নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামি জোনের সহকারী কমিশনার মো. রকিবুল হাসান বলেন, “জিইসি এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কয়েকমিনিটের একটি ঝটিকা মিছিল হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। ইতিমধ্যে কার নেতৃত্বে এবং কারা এই মিছিলে অংশ নিয়েছে তাদের অন্তত ১০-১২ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। অতি দ্রুত সময়ে তারা গ্রেপ্তার হবে বলে পুলিশ আশা করছে।”

এর আগে গত বছরের ১৭ নভেম্বর মধ্যরাতে চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড়ে হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে মিছিলে থাকা দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ১৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগের আরেকটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

এতে দেখা যায়, দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৩০ থেকে ৫০ জন জামালখান এলাকায় ঝটিকা মিছিল করে সরে পড়েন। এর পাঁচ দিন পর ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।

ঢাকা/রেজাউল/ইমন

সম্পর্কিত নিবন্ধ