অপসারণের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভের পর পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজসহ চার বিচারককে বদলি করা হয়েছে। তাদের মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন-০১) এএফএম গোলজার রহমান সই করা পৃথক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য জানানো হয়। পরে তা মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়।
বদলি হওয়া চার বিচারক হলেন- জেলা ও দায়রা জজ মো.
এছাড়া ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মো. মাসুদ পারভেজকে পঞ্চগড়ের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে পদায়ন এবং পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নুরুজ্জামানকে পঞ্চগড় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে বদলি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রণালয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী বলেন, চার বিচারকের বদলির প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি ইতোমধ্যে জেনেছি। আমরা চার বিচারকের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতি ও নিয়োগ বাণিজ্যের তথ্যপত্র শিগগির জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেব।
পঞ্চগড় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জমিরুল ইসলাম বলেন, চার বিচারককে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করে প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও চিঠি পাইনি।
গত ২২ জানুয়ারি দুপুরে নিয়োগ বাণিজ্য, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে চার বিচারকের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ করে পঞ্চগড় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তারা ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। পরে ২৬ জানুয়ারি একই দাবিতে আদালত ঘেরাওসহ পঞ্চগড়-তেতুঁলিয়া মহাসড়ক অবরোধ করেন তারা। রাত ৮ টার দিকে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয় পঞ্চগড় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে তৎপর পুলিশ
চট্টগ্রাম মহানগরীতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের আকস্মিক ঝটিকা মিছিল করার ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। মিছিলে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশের একাধিক টিম।
জানা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের ব্যস্ততম জিইসি মোড় এলাকায় একটি ঝটিকা মিছিল বের করে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ। মাত্র কয়েক মিনিট স্থায়ী এই মিছিলটি জিইসি মোড় থেকে সিডিএ এভিনিউ’র দিয়ে সামান্য পথ এগিয়ে নেতাকর্মীরা নিজেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ২০-২৫ জনের এই মিছিলটিতে কয়েকজনকে ভিডিও ধারণ করতে দেখা যায়। এদিন বিকেলের দিকে ওই মিছিলের প্রায় দেড় মিনিটের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে ঝটিকা মিছিলের খবর পেয়ে নড়েচড়ে বসে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে এই মিছিলটি হয়েছে বলে পুলিশের অনুসন্ধানে জানা যায়। মিছিলটি অনেক সকালে হওয়ায় আশেপাশে কোনো পুলিশের টহল বা অবস্থান ছিলো না। মিছিলের আগে পুলিশের অবস্থান রেকি করেই নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঝটিকা মিছিল করেছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ।
এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বায়েজিদ বোস্তামি জোনের সহকারী কমিশনার মো. রকিবুল হাসান বলেন, “জিইসি এলাকায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কয়েকমিনিটের একটি ঝটিকা মিছিল হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। ইতিমধ্যে কার নেতৃত্বে এবং কারা এই মিছিলে অংশ নিয়েছে তাদের অন্তত ১০-১২ জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। অতি দ্রুত সময়ে তারা গ্রেপ্তার হবে বলে পুলিশ আশা করছে।”
এর আগে গত বছরের ১৭ নভেম্বর মধ্যরাতে চট্টগ্রামের প্রবর্তক মোড়ে হঠাৎ ঝটিকা মিছিল করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ ঘটনায় অভিযান চালিয়ে মিছিলে থাকা দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ১৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রলীগের আরেকটি মিছিলের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।
এতে দেখা যায়, দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৩০ থেকে ৫০ জন জামালখান এলাকায় ঝটিকা মিছিল করে সরে পড়েন। এর পাঁচ দিন পর ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।
ঢাকা/রেজাউল/ইমন