দেশে নির্বাচনী ব্যবস্থা তৈরি না হলে কোনো সমস্যার সমাধান হবে না—এমনটা জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘‘জাতীয় কিংবা স্থানীয়, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর যতই ঝড়-তুফান হোক না কেন, নির্বাচন হতেই হবে। নির্বাচনের বিকল্প নেই। এর সঙ্গে কম্প্রোমাইজ নেই।’’

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) তিন জেলায় (চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়া) ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা’ শীর্ষক কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘‘বিএনপি সব সময় একটি নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে। নির্বাচনী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারলে, দেশে কোনো সমস্যার সমাধানই হবে না। যতই সংস্কারের কথা বলি না কেন, জনগণের কাছে যাদের জবাবদিহিতা আছে, তাদের সহযোগিতা লাগবেই।’’

আরো পড়ুন:

সালাহ উদ্দিনের ইঙ্গিত
নির্বাচনের চাপ বাড়াতে ‘দ্রুত আন্দোলনে যাবে’ বিএনপি 

তিন জেলার কর্মশালায় তারেক রহমান
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সব দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে

তিনি বলেন, ‘‘আমরা জানতাম স্বৈরাচার পতন হবে। কিন্তু কোন তারিখে হবে, সেটা নিশ্চিত না। সেই বিশ্বাস থেকে দেশের মানুষের সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছে বিএনপি। স্বৈরাচার যেভাবে দেশকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে, সেই দেশকে মেরামত করতে হবে। দলের পক্ষ থেকে ৩১ দফায় আমরা যা যা বলেছি, তাই তাই বর্তমান সরকারের সংস্কার কমিশন রিপোর্ট আকারে জমা দিয়েছে। কিন্তু সরকার হিসেবে একটু এদিকে-ওদিকে বলার চেষ্টা করবেই। তবে মূল বিষয় আমাদের বাইরে নয়।’’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘সব সময় ভালো ভালো কথা বলবেন, সংসদ দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট করবেন, একজন ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নন, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবেন, সংস্কার করবেন। কিন্তু দিনশেষে মানুষ প্রশ্ন তুলবে দ্রব্যমূল্য, শিক্ষাব্যবস্থা, স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসংস্থান নিয়ে। এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কী করতে পারবেন, তা মানুষ জানতে চায়।’’

তিনি বলেন, ‘‘৩১ দফার মধ্য দিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর যে শপথ বিএনপির রয়েছে, সে শপথকে লক্ষ্যভ্রষ্ট করার জন্য কেউ যদি এমন অন্যায় করে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’’

দিনব্যাপী এই কর্মশালায় চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা অংশ নেন। কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক ডা.

মওদুদ আলমগীর পাভেল, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, চেয়ার পারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, ফরিদা ইয়াসমিন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।

অন্যদিকে, চুয়াডাঙ্গায় কর্মশালায় সভাপতিত্ব করে জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়া হালিমা আরলী, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ। আরো বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাবেদ মাসুদ মিল্টন ও সদস্য সচিব অ্যাড. কামরুল হাসান, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ প্রমুখ।

ঢাকা/মামুন/কাঞ্চন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ত র ক রহম ন ত র ক রহম ন র সদস য সদস য স ব এনপ র কম ট র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বপ্ন পূরণে যে পরামর্শ দিলেন শাহরুখ খান

বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খান। তাকে ‘কিং খান’ও বলা হয়। কিন্তু এই মানুষটি বিশ্বাস করেন, মানুষের দেওয়া কোনো ‘ট্যাগ’ জীবনে খুব একটা কাজে আসে না। জীবনকে তিনি খুবই ছোট মনে করেন, এই ছোট জীবনে নিজের বড় স্বপ্ন পূরণে কি করা উচিত—সেই বিষয়ে একটি বক্তব্যে বিস্তারিত বলেছেন। 

শাহরুখ খানের বক্তব্যের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ: মানুষ আপনার জীবনে যে ‘ট্যাগ’ই দিক, সেটা জীবনে খুব একটা কাজে আসে না। জীবন  খুব ছোট। মানুষ আপনাকে স্বপ্নকে বড় ভাবে কিন্তু আপনার চুপ করে থাকাকে ভাবে দুর্বলতা। মানুষ আপনার সততা দেখে মনে করে আপনি নিষ্পাপ। সত্যিকার অর্থে শুধুমাত্র আপনিই জানেন, আপনি কে।

আমি যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসি তখন আমার মাথার ওপর কেউ ছিল না। এক জোড়া ছেঁড়া জুতা, একটি স্যুটকেস, সেকেন্ড হ্যান্ড জামাকাপড় আর বুকভর্তি স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। মানুষ আমাকে দেখলে বলতেন, এই ছেলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারবে! মানুষ আমাকে দেখলে হাসতেন। কিছু মানুষ আমাকে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল প্রধান হিরো হবো। আপনি দেখবেন যে, কোনো মানুষকে আপনার স্বপ্নের কথা বললে, তিনি বলবেন, এটা যথেষ্ট ভালো নয়, স্মার্ট নয়, ট্যালেন্টেড নয়। যখনই আপনি কারও কাছে আপনার স্বপ্নের কথা বলবেন, তার অর্থ আপনি তাদেরকে আপনাকে সংজ্ঞায়িত করার সুযোগ দিয়ে দিচ্ছেন। এটা খুবই বিদপজনক।  

আরো পড়ুন:

ষাটের দশকের হেঁশেলের চিত্র ‘খাদ্যবিলাস’

যে রং দেখা যায় না

আপনি আপনার স্বপ্নের দিকে যাত্রা শুরু করুন। এরপর আপনার পাশে অন্য অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে যাবে। আপনি যদি আপনার লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়ান, তাহলে আপনি ভুলে যাবেন, আপনার স্বপ্নের কথা। মনে রাখবেন, আপনি কারও কাছ থেকে ‘বৈধ্যতা’ পাওয়ার জিনিস নন। আপনি কারও সেকেন্ড চয়েস নন। আপনি কারও ব্রেকআপ প্ল্যান নন। আপনি আপনার পরিকল্পনার প্রধান চরিত্র।

স্বপ্ন পূরণের পথে যাত্রা শুরু করুন। যে মানুষেরা আপনাকে অপমান করেনে, ছোট করেন তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। যেখানে আপনার মূল্যায়ন নেই, সেখান থেকে সরে যান। সেই সম্পর্ক থেকে সরে যান, যে সম্পর্ক আপনাকে কেবল ‘ছোট’ অনুভব করায়। এরপরে মানুষ আপনাকে বড় ভাবতে শুরু করবে। এর অর্থ এই নয় যে, আপনি মানুষকে ভয় পাবেন। এর অর্থ হলো, সেই সব মানুষের কাছ থেকে সরে থাকা; যারা আপনাকে মূল্য দেয় না। 

নিজেকে গড়ে তোলার জন্য সময় নিন। শিক্ষা অর্জন করুন। নিজেকে নির্মাণ করুন। দয়া করে নিজের সঙ্গে কথা বলুন। অহংকারী হয়ে উঠবেন না, সচেতন হয়ে উঠুন। এর অর্থ এই নয় যে, আমি অন্যদের চেয়ে বড়। এর অর্থ হলো, আপনি অন্যদের চেয়ে ছোট নন। 

অনেক সময় আমরা দ্বিধায় পড়ে যাই যে, নম্রতা হলো নিজেকে অবহেলা করা। মনে রাখবেন, আপনি উজ্জ্বলভাবে জ্বলে ওঠার জন্য জন্মেছেন। স্বপ্ন তাড়া করা থামিয়ে দেবেন না। এটি আপনার ডেইলি রুটিনে যুক্ত করে নিন। একদিন সকালে আপনি একজন সুপারস্টারের মতো জেগে উঠবেন আর অন্যদিনগুলোতে আপনি আপনার গল্পে একজন পার্শ্ব চরিত্রের মতো জেগে উঠবেন; এটাও ঠিক আছে। এটা কোনো ব্যাপার নয় যে, আপনি আপনার গল্পের বা ফিল্মের কোন চরিত্রটি অনুভব করছেন। কিন্তু নিজেকে এটা মনে করিয়ে দিন ‘আমি বিক্রির জন্য নই, আমার কোনো ডিসকাউন্ট নেই, আমার কোনো দর কষাকষি নেই।’ আয়নায় শুধু নিজের মুখ দেখবেন না, নিজের ভেতরে থাকা আগুন দেখুন। কারণ ওই আগুনই সত্য। 

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ