দেশেই ফেসবুক, গুগলের সার্ভার আনার উদ্যোগ
Published: 30th, January 2025 GMT
অতীতের মতো মেটার কাছ থেকে কোনো ব্যক্তির পোস্ট ডিলিট করা বা নাগরিক হয়রানির কোনো তথ্য চায় না সরকার। শুধু ক্রিপ্টোকারেন্সি বা আর্থিক জালিয়াতের ক্ষেত্রে তা চায়। নাগরিক আপত্তির প্রতি সম্মান জানিয়ে বেশ কিছু বিষয় ইতোমধ্যে সংশোধিত হয়েছে। তবে যে ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি হয়েছে, তা যথেষ্ট নয়। সময় অনুযায়ী সংশোধন প্রয়োজন।
রাজধানীতে ১৯তম বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরাম ‘বহুপক্ষীয় ডিজিটাল ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ’ শিরোনামের সংলাপে এসব কথা বলেন আইসিটি ও টেলিকম বিভাগের নীতি উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
উপদেষ্টা ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ফেসবুক, গুগলের সার্ভার দেশে আনার চেষ্টা চলছে। উল্লিখিত দুটি ডিজিটাল পরিষেবা উদ্ভাবকের সার্ভার দেশে না থাকায় বহু ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। দেশে সিডিএন সার্ভার নেই, ডিপ প্যাকেট ইন্সপেকশান সার্ভার নেই। ফলে আমাদের দেশে ইন্টারনেটের ওপর কোনো সার্বভৌমত্ব নেই।
সভায় আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সাইদ মো.
সভায় সিনিয়র রিপোর্টার জাইমা ইসলাম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পূর্ণ ব্যর্থ আইন ছিল উল্লেখ করে বলেন, জনগণের অধিকার ও জাতীয় নিরাপত্তার মতো দুটো বিষয়কে বিগত সরকার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছিল। এটাই ছিল বিগত সরকারের মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. খলিলুর রহমান বলেন, আইন নয়; গাইড লাইন ও সচেতনতা বাড়িয়ে ইন্টারনেটে সুরক্ষা সম্ভব। ইন্টারনেটকে কখনোই বন্ধ করা যাবে না। কারণ এটা মৌলিক মানবাধিকার। তাই ইন্টারনেটের যৌক্তিক ব্যবহার বাড়াতে হবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তরুণ, আমলা ও রাজনীতিবিদদের এ বিষয়ে আগ্রহ কম। আমাদের এদিকে নজর দিতে হবে। ইন্টারনেটের মালিক কেউ না। ইন্টারনেট সবার।
সামাজিক দায়বদ্ধতা তববিল (এসওএফ ফান্ড) প্রসঙ্গে বিটিআরসির মহাপরিচালক বলেন, দুর্গম বা প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবার জন্য এই তহবিল (ফান্ড) ব্যয় হয়। কারও যদি এ সংক্রান্ত কোনো আইডিয়া থাকে, তাহলে আমাদের সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন।
বাংলাদেশ ইন্টারনেট গভর্নেন্স ফোরামের (বিআইজিএফ) চেয়ারপারসন আমিনুল হাকিম বলেন, আইন নয় সচেতনতা দিয়ে গ্লোবাল ভিলেজের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তরুণদের ইন্টারনেটে করণীয় সম্পর্কে জানতে হবে। ইন্টারনেট কোনো প্রযুক্তি নয়। ইন্টারনেট মানুষের ডিজিটাল রাইটস। কোনো সরকার যেন আর ইন্টারনেটকে বন্ধ করতে না পারে এমন ব্যবস্থা থাকতে হবে।
সভায় সূচনা বক্তব্য দেন সংগঠনের মহাসচিব এম এ হক অনু।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেটের দাম কমানোর আহ্বান
মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেটের দাম কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি বলছেন, তিন স্তরে ইন্টারনেটের দাম কমতে যাচ্ছে। ফাইবার অ্যাট হোম কর্তৃপক্ষ তাদের ৩ পর্যায়ের সংযোগের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে।
আজ সোমবার সকালে ফয়েজ আহমদ নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এসব তথ্য জানান। তিনি লিখেছেন, ফাইবার অ্যাট হোম আইটিসি পর্যায়ে ১০ শতাংশ, আইআইজি পর্যায়ে ১০ শতাংশ ও এনটিটিএন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ দাম কমাবে।
এ নিয়ে ইন্টারনেট লাইসেন্সীপর্যায়ে মোট তিন থেকে চারটি স্তরে ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ফয়েজ আহমদ।
আন্তর্জাতিক গেটওয়ে পর্যায়ে বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানি তাদের সব ধরনের সেবায় ১০ শতাংশ দাম ইতিমধ্যে কমিয়েছে। এ ছাড়া ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবি গ্রাহক পর্যায়ে ৫০০ টাকায় এখন থেকে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট দেবে বলে সম্প্রতি জানিয়েছে। অন্যদিকে ঈদুল ফিতরের দিন থেকে সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটক ১০ শতাংশ মূল্যছাড়ের ঘোষণা দেয়।
ফয়েজ আহমদ এবার দেশের তিনটি বেসরকারি মোবাইল অপারেটরদের দাম কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইতোমধ্যেই সরকার মোবাইল কোম্পানিগুলোকে ডিডব্লিউডিএম (নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণের যন্ত্র-ডেন্স ওয়েভলেংথ ডিভিশন মাল্টিপ্লেক্সিং) ও ডার্ক ফাইবার সুবিধা প্রদান করেছে। এ অবস্থায় বেসরকারি মোবাইল কোম্পানিগুলোর ইন্টারনেটের দাম না কমানোর কোনো ধরনের যৌক্তিক কারণ কিংবা অজুহাত অবশিষ্ট থাকে না। সরকার মোবাইল অপারেটরগুলোকে পলিসি সাপোর্ট দিয়েছে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় স্তরগুলোতে পাইকারি পর্যায়ে ইন্টারনেটের দামও কমিয়েছে। এখন তাদের জাতীয় উদ্যোগে শরিক হওয়ার পালা।
মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর পদক্ষেপে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফয়েজ আহমদ। পাশাপাশি দ্রুতই তিনটি বেসরকারি মোবাইল অপারেটর যৌক্তিকভাবে মোবাইল ইন্টারনেটের দাম কমানোর ঘোষণা দেবে বলে তিনি আশা করেন।
ফয়েজ আহমদ জানান, সরকার এখানে দুই ধরনের মূল্য ছাড় আশা করে—সরকারের দিক থেকে শুল্ক বৃদ্ধির উদ্যোগে অপারেটররা অ্যাডজাস্টমেন্ট বাবদ যে মূল্য বাড়িয়েছিল সেটা কমাবে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক গেটওয়ে/আইটিসি, আইআইজি ও ন্যাশনাল ট্রান্সমিশন পর্যায়ে যতটুকু পাইকারি দাম কমানো হয়েছে তার সমানুপাতিক হারে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেটের দাম কমাবে।
প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ সহকারী বলেন, বাংলাদেশের মোবাইল ইন্টারনেটের মানে ব্যাপক প্রশ্ন রয়েছে। মানের তুলনায় দাম অনেক বেশি। এ অবস্থায় গ্রাহকস্বার্থে যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।