বিএনপির সঙ্গে ছাত্রদের ‘ঝগড়া’ হচ্ছে, ‘দরকষাকষি’ হচ্ছে: মান্না
Published: 30th, January 2025 GMT
বিএনপির সঙ্গে ছাত্রদের ‘ঝগড়া’ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যর সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, বিএনপি ও ছাত্রদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হচ্ছে, দরকষাকষি হচ্ছে। আমি বলছি দেশ ও জনগণের কল্যাণের জন্য তাদের সামনাসামনি বসে সমস্যার সমাধান করতে। ঐক্যবন্ধ হয়ে এক মঞ্চে নির্বাচন করা প্রয়োজন। বৃহস্পতিবার বগুড়া জেলা পরিষদ মিলনায়নে নাগরিক ঐক্যের কর্মীসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মান্না এসব কথা বলেন।
নির্বাচন সর্ম্পকে প্রধান উপদেষ্টা ড.
মান্না আরও বলেন, মানুষের ভাগ্য বদলের জন্য প্রয়োজন ভালো সরকার, ভালো নির্বাচন। গণতন্ত্রের জন্য, দেশ গড়ার জন্য, ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য ভালো ভোটের ভালো সরকার প্রয়োজন। বিগত সরকারের সময়ে ভালো ভোট হয়নি, যে কারণে গণতন্ত্র ছিল না, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ছিল না। শুধু লুটপাট হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর জিনিসপত্রের দাম কি কমেছে? সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কি নির্মূল হয়েছে? যানজট নিরসন হয়েছে? কিছুই হয়নি। তাই নির্বাচিত সরকার লাগবে এসব সমাধান করতে। তার আগে পুলিশ ও প্রশাসনে যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে অন্যায় কাজ করেছে তাদের চিহিৃত করতে হবে। তাদেরকে সরাতে হবে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদেরও বিচার করতে হবে।
জেলা নাগরিক ঐক্যের নেতা অধ্যক্ষ মতিয়ার রহমানের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নাগরিক ঐক্যর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক সজিব, শিবগঞ্জ উপজেলার আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম, সাইদুর রহমান সাগর প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ ঝগড় র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
একটি নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার পথরেখা
আন্দোলনের রাজনীতি থেকে দল গঠন
১৯৯১ সালে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পরে ২০০৯ সাল পর্যন্ত অবাধ, নিরপেক্ষ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ দুবার এবং বিএনপি দুবার সরকার গঠন করে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ দুই দল তাদের ক্ষমতার মেয়াদে গণতান্ত্রিক চর্চার উন্নয়নে লক্ষণীয়ভাবে কোনো কাজ করেনি;বরং তারা নিজেদের ক্ষমতাকে সংহত করা এবং বিজয়ীর জন্যই সব—এই রাজনৈতিক সংস্কৃতি চিরস্থায়ী করার জন্য ব্যস্ত ছিল।
বিএনপির কর্মীদের অনেকে দখলদারি ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। যার ফলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে পুরোনো অভ্যাসের মৃত্যু সহজে হয় না। এ ধরনের অভিযোগে অনেককে বহিষ্কার করা সত্ত্বেও এর দৌরাত্ম্য কমানো যায়নি।দ্বিদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে জুলাই গণ–অভু৵ত্থানের পরে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপি দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপির সরকার গঠন করার মতো সম্ভাবনাও অনেকে দেখছেন। সাধারণভাবে জনগণের মনোযোগ এদিকে নিবদ্ধ যে তারা উন্নততর গণতন্ত্রের চর্চাকারী হিসেবে ফিরে আসবে কি না। গণ–অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্র, সরকার ও গণতন্ত্রচর্চা নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেক বক্তব্য মানুষের মধ্যে সমাদৃত হয়েছিল। মাঠপর্যায়ে আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতির ফলে ক্ষমতার যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, সে জায়গা দখল করেছেন বিএনপির কর্মীরা। এই শূন্যতার সুযোগ নিয়ে বিএনপির কর্মীদের অনেকে দখলদারি ও চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন। যার ফলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে পুরোনো অভ্যাসের মৃত্যু সহজে হয় না। এ ধরনের অভিযোগে অনেককে বহিষ্কার করা সত্ত্বেও এর দৌরাত্ম্য কমানো যায়নি। স্থানীয় পর্যায়ের মানুষদের মধ্যে এ নিয়ে অসন্তোষ আছে। সাধারণ মানুষের এই অসন্তোষ বিএনপিকে আমলে নিতে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস যে সংস্কারপ্রক্রিয়া শুরু করেছেন, ছাত্ররা সেটিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে আরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে এই সংস্কারপ্রক্রিয়াকে তাঁরা এগিয়ে নিতে চান। এ লক্ষ্যে ছাত্রদের একটি অংশ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে। এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে যেসব শক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তারা একটি নিজস্ব রাজনৈতিক ধারণা সামনে এনেছে। সেখানে তরুণ প্রজন্ম নিজেদের অবস্থান দৃঢ়ভাবে তুলে ধরতে শুরু করেছে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে নিজেদের অগ্রণী ভূমিকার জন্য ছাত্ররা শ্রদ্ধা ও গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন, বিশেষ করে তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে। পুরোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা যাতে স্থায়ীভাবে গেড়ে বসতে না পারে, সে জন্য তাঁরা যৌক্তিকভাবেই সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। একটি নতুন, আরও ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলা নিশ্চিত করতে তাঁরা সত্যিকারের সংস্কার বাস্তবায়নের দাবি জানাচ্ছেন।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনে মানুষের আনন্দ–উল্লাস। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বিকেলে সংসদ ভবন এলাকায়