দুর্নীতির মামলায় সাবেক এমপি মিজানুরের ৮ বছরের কারাদণ্ড
Published: 30th, January 2025 GMT
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় খুলনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মিজানুর রহমানের ৮ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মুহাম্মদ আবু তাহের এ রায় ঘোষণা করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় মিজানুর রহমানকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুদক আইনের ২৭(১) ধারায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। সেক্ষেত্রে তার সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
এছাড়া জ্ঞাত আয়বর্হিভূত ১ কোটি ৪৪ লাখ ৫০ হাজার ৯৮৯ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সংশ্লিষ্ট আদালতের অফিস সহকারী রাজীব ভূঁইয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য ৩০ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। মিজানুর রহমান এ মামলায় জামিনে ছিলেন। ২৩ জানুয়ারি আদালত জামিন বাতিল করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এদিন রায় ঘোষণার আগে তাকে কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে রায়ের প্রতিক্রিয়ায় আসামিপক্ষের আইনজীবী সালাহ উদ্দিন খান বলেন, আসামির দাবি, শেখ পরিবারের রোষানলে তাকে রাজনীতির মাঠ থেকে মাইনাস করতেই এ মামলা করা হয়েছে। তিনি একজন সংসদ সদস্য ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মাত্র এক কোটি ৫৮ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মোটেও সত্য নয়। এ রায়ে আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। সেখানে আমরা ন্যায়বিচার পাব।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
অভিযোগপত্রে আসামির বিরুদ্ধে ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫৭ হাজার ৯৮১ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ২০ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম জ ন র রহম ন বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক রেলমন্ত্রী সুজন ৩ দিনের রিমান্ডে
পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া এক যুবককে হত্যার পর লাশ গুমের মামলায় সাবেক রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে পঞ্চগড়ের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক নাহিদ আক্তার জুলিয়েট শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিন নুরুল ইসলাম সুজনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
নুরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের মহাজন পাড়া এলাকার মৃত ইমাজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। তিনি পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, গত ১০ নভেম্বর পঞ্চগড় জেলা সদরের উত্তর দর্জিপাড়া এলাকার মো. মনু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নুরুল ইসলাম সুজনকে প্রধান করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী মো. মনুর ছেলে আলামিন পেশায় রিকশাচালক। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন। এ জন্য তাকে শুরু থেকেই বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেওয়া হতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আলামিন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিব প্লাবন পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে দিয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন কতিপয় আসামির পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ মদদে অন্য আসামিরা তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দ্বারা আল আমিনকে জখম করেন। এতে রক্তাক্ত হয়ে আলামিন সড়কে লুটিয়ে পড়লে তার নিথর দেহ নিয়ে যায় তারা। তখন থেকেই আল আমিনের সন্ধান নেই।
আসামির পক্ষের আইনজীবী মির্জা সারোয়ার আলম জানান, আদালতে আসামি নিজেই আজ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে এ সমস্ত মামলায় তাকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে, হয়রানি করা হচ্ছে।’ এছাড়া এই মামলার বাদী নিজেই বলেছেন, ‘তিনি স্বেচ্ছায় কোনো মামলা করেননি। নুরুল ইসলাম সুজনকে আসামি করা তার অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। এই আসামির বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই।’ আমরা রিমান্ড না মঞ্জুর এবং জামিনের আবেদন করেছিলাম।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি বলেন, “৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিলো। বিজ্ঞ আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলাটি রহস্যাবৃত, এখনো ভিকটিমের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। রহস্য উদঘাটনের জন্যই আসামির রিমান্ড প্রয়োজন ছিলো। আদালত বিষয়টি অনুধাবন করেছেন এবং এই রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আমরা আশা করছি এই মামলায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।”
ঢাকা/নাঈম/ইমন