রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল সংস্কারের ভিত্তি গড়ে দিয়ে যেতে চায় সরকার: নাহিদ
Published: 30th, January 2025 GMT
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ফ্যাসিবাদ সমূলে উৎপাটন করতে বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোর আমূল সংস্কারের ভিত্তি গড়ে দিয়ে যেতে চায়।
আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত ‘জুলাই আন্দোলনে শহীদ ও আহত সাংবাদিক এবং অসুস্থ/অসচ্ছল সাংবাদিকদের কল্যাণ অনুদান ও সাংবাদিক সন্তানদের বৃত্তির চেক বিতরণ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। খবর বাসসের
উপদেষ্টা বলেন, ‘বিদ্যমান কাঠামো থেকে গেলে যে সরকারই আসুক, ফ্যাসিবাদ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে, আমরা তা হতে দেব না। রাষ্ট্রসংস্কার এ জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এর জন্য সময় লাগবে। সেই কাঠামো তৈরি হবার পর যে সরকারই আসুক, তারা কাঠামোকে ধরে রাখবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনে আমরা ধাপে ধাপে এগিয়েছি। কোটা সংস্কার, নির্যাতন ও হত্যার বিচার এবং ফ্যাসিবাদের বিচার করতে হবে। এসব ঘটনার আসামি শেখ হাসিনার অবশ্যই বিচার করা হবে। দমন-পীড়ন নয় বরং বিচারের মাধ্যমে দেশে ন্যায়প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
নাহিদ বলেন, ‘গত ১৫ বছরে কার কি ভূমিকা ছিলো তা ভুলে না গিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে। জুলাই আমাদের ঐক্যের শিক্ষা দেয়, শিক্ষা দেয় যে, সমাজে অনেক ভিন্নমত থাকবে, এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গেও মতের ভিন্নতা থাকতে পারে। কিন্তু দেশ, জনগণ ও জাতির সংকটের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব।’
সচেতন ও বস্তুনিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য গণমাধ্যমগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একটি রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এ সময়ে বাংলাদেশকে নিয়ে বিভিন্নভাবে অনেকে ভ্রান্ত বা ভুল তথ্য দিয়ে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারা বলছে, আমাদের গণমাধ্যম স্বাধীন নয়। সরকারের ওপর থেকে আপনাদের ওপর কোনো ধরনের চাপ নেই। আপনারা সত্যটা প্রচার করুন।’
নাহিদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা সব সমালোচনাকে স্বাগত জানান। আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে চাই। কিন্তু তাই বলে ফ্যাসিবাদের দোসররা যদি সুযোগ নিতে চায়, ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসন করতে চায়, তবে আমরা কঠোর হব।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত সময়ে সব প্রতিষ্ঠানেই দলীয়করণ ছিল এবং গণমাধ্যমগুলোর অনেকেই তার ব্যতিক্রম ছিল না। তবুও অনেকে ঝুঁকি নিয়ে সত্যের ও ন্যায়ের পক্ষে থেকেছেন। যে সময়টা ইন্টারনেট ছিল না, সেইসময় তাদের কারণে প্রকৃত অবস্থাটা জানা গেছে।’
চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও সংবাদ প্রচার করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকার জন্য শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্র ও শ্রমিকদের সঙ্গে তারাও লড়াই করেছেন। তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিতে সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘পাঁচটি শহীদ পরিবারকে আজকে আমরা একসঙ্গে পেয়েছি, তাদের জন্য ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় কিছু করতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য আনন্দ ও গর্বের বিষয়। আমরা আশা করি, এই বৃত্তি প্রদানের কাজ অব্যাহত থাকবে।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা ফারজানা।
শুভেচ্ছা বক্তৃতা দেন ট্রাস্ট সদস্য এখন টিভির সাংবাদিক সাজিদ আরাফাত, বিএফইউজে নির্বাহী সদস্য শাহীন হাসনাত, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ূব ভূঁইয়া, বিএফইউজে’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, ডিইউজের সভাপতি মো.
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহীদ সাংবাদিক মো. মেহেদী হাসান, মো. শাকিল হোসেন, আবু তাহের মোহম্মদ তোরাব, সোহেল আখঞ্জি, তাহির জামান প্রিয় ও প্রদীপ কুমার ভৌমিকের পরিবারের সদস্যরা এবং অনুদানপ্রাপ্ত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যরা। অনুষ্ঠান শেষে তথ্য উপদেষ্টা উপস্থিত অনুদানপ্রাপ্ত সবার হাতে চেক তুলে দেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম উপদ ষ ট চ র কর র জন য সদস য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’