চলন্ত ট্রাকে তরুণীকে ধর্ষণ: সেই চালকের আমৃত্যু কারাদণ্ড
Published: 30th, January 2025 GMT
চলন্ত ট্রাকে মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে (২০) ধর্ষণের অপরাধে ট্রাক চালক সোহেল রানাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-(২) এর বিচারক বেগম সালমা খাতুন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় দেন তিনি। দণ্ডপ্রাপ্ত ট্রাক চালক সোহেল রানা (৩২) বগুড়া সদর উপজেলার আশুখোলা গ্রামের মনসুর আলীর ছেলে।
মামলার বরাত দিয়ে আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান জানান, ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে লকডাউন চলছিল। স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এ অবস্থায় ঢাকার চন্দ্রা থেকে ভিকটিমসহ আরও দু’জন পুরুষ যাত্রী নিয়ে চালক সোহেল রানা এবং সহকারী ওহাব শেখ ট্রাক নিয়ে বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেয়। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর ট্রাকটি থামিয়ে পুরুষ যাত্রীদের জানানো হয় ট্রাক নষ্ট হয়ে গেছে। মেরামতে অনেক সময় লাগবে। এরপর দুই পুরুষ যাত্রী ট্রাক থেকে নেমে যান। তবে ওই তরুণী ট্রাকের কেবিনেই ছিলেন। এরপর চালক সোহেল রানা ওই তরুণীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ওই সময় ইউনুস আলী সুমন নামে এক ব্যক্তি ধর্ষণের ঘটনাটি তার মোবাইলে ভিডিও করেন। বিষয়টি টের পেয়ে চালক ও সহকারী দ্রুত ভিকটিমসহ ট্রাক নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। ইউনুস আলী সুমন জরুরি সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে জানান বিষয়টি। এরপর সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড় এলাকা থেকে চালক ও সহকারীসহ ট্রাকটি আটক করা হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে চালক ও সহকারীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর চালক সোহেল রানা আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের সময় ২০২৩ সালের ১২ মে চালকের সহকারী ওহাব সেখ কারাগারে মারা যায়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
তৃতীয় দিনটা বৃষ্টি আর নাজমুলের
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর মাঠেই ছিলেন আম্পায়াররা। আকাশ পরিষ্কার হয়ে আলোর সংকট কাটে কিনা সেটি দেখতে মিনিট দশেক অপেক্ষা করেছেন তাঁরা। এরপর ঘোষণা দিয়েছেন আজ আর খেলা সম্ভব নয়।
দেরিতে শুরু আর আগেভাগেই শেষ হওয়া সিলেট টেস্টের তৃতীয় দিনটা বাংলাদেশ শেষ করেছে ৪ উইকেটে ১৯৪ রান নিয়ে। জিম্বাবুয়ের চেয়ে এখন ১১২ রানে এগিয়ে নাজমুল হোসেনের দল। দলের ভরসা হয়ে টিকে আছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। আগামীকাল চতুর্থ দিনটা ৬০ রানে শুরু করবেন নাজমুল। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে তাঁর সঙ্গী জাকের আলী অপরাজিত ২১ রানে।
বৃষ্টির কারণে দিনের খেলা শুরু হয় দুপুর ১টা। এরপর খেলা হতে পারে ৪৪ ওভার। ১ উইকেট ৫৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা বাংলাদেশ যোগ করতে পেরেছে ১৩৭ রান।
বৃষ্টিভেজা দিনে ইনিংসের শুরুতে নাজমুল বোলারদের ওপর চড়াও হলেও ধীরে ধীরে ফিরেছেন প্রথাগত টেস্টে মুডে। বিশেষ করে ২৬ রানের একবার জীবন পাওয়ার পর। জিম্বাবুয়ের দুই পেসার ব্লেসিং মুজারাবানি ও ভিক্টর নিয়াউচি নাজমুলকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠার প্ররোচনা দিয়েছেন বারবারই।
উদাহরণ হিসেবে ইনিংসের ৩৫তম ওভারের কথা বলা যেতে পারে। নিয়াউচির করা সেই ওভারে ষষ্ঠ-সপ্তম স্টাম্পের পাঁচ–পাঁচটি বল ছেড়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পুরো ইনিংসে অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলগুলোতে ছিলেন বাড়তি সতর্ক। ভুল যে করেননি তা নয়!
৩৮তম ওভারে মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়ায় দ্বিতীয় স্লিপের পাশ দিয়ে বল যায় বাউন্ডারিতে। তৃতীয় স্লিপ থাকলে অনায়াসে হতে পারত ক্যাচ। তবে দ্বিতীয় স্লিপে থাকা শন উইলিয়ামসের হাতে লেগে বল চলে যায় বাউন্ডারিতে। এরপর ব্যাট ছুড়ে নাজমুল যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তাতেই বোঝা গেছে নাজমুলের আজ ভুল করতে মানা! প্রথম ইনিংসে মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে মারতে গিয়ে ৪০ রানে আউটের পরই হয়তো এই উপলব্ধি তাঁর।
নাজমুল যা পেরেছেন সিলেটে আজ তা পারেননি মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। দুজনের বিষয়টি অবশ্য ভিন্ন। বাঁহাতি মুমিনুল সকাল থেকে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ড টেনেছেন। তবে ব্যক্তিগত ৪৭ রানে মনযোগ হারান এই ব্যাটসম্যান। নিয়াউচির অফ স্টাম্পের বাইরে পাতা ফাঁদে ধরা পড়েন মুমিনুল।হক। ক্যাচ দেন নিয়াশা মায়াভোর গ্লাভসে।
অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট বল ঠিকঠাক খেলতে পারেননি মুমিনুল। ব্যাটে লেগে ক্যাচ যায় উইকেটরক্ষক মায়াভোর কাছে। ভাঙে ৯১ বল স্থায়ী ৬৫ রানের জুটি।
মুশফিক ফেরেন এর পরপরই। ব্লেসিং মুজারাবানির অফ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে বসেন মুশফিক। ৪ রান করা মুশফিকের সহজ ক্যাচ নেন আরভিন।
দিনের বাকি যে সময়টুকুতে খেলা হয়েছে, তাতে ভালোভাবেই সামলেছেন নাজমুল ও জাকের আলী। ১০৩ বলে ৭ চারে ৬০ রানে খেলছেন নাজমুল । ৩ চারে ৬০ বলে জাকের আলীর রান ২১।
সংক্ষিপ্ত স্কোরবাংলাদেশ: ১৯১ ও ৫৭ ওভারে ১৯৪/৪ (সাদমান ৪, মাহমুদুল ৩৩, মুমিনুল ৪৭, নাজমুল ৬০*, মুশফিক ৪, জাকের ২১*; মুজারাবানি ৩/৫১, নিয়াউচি ১/২৮)।জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৭৩।
(তৃতীয় দিন শেষে)