রকমারি পিঠার বাহারি সাজে টেবিল যেন রঙিন এক উৎসবের আঙিনা। সুস্বাদু পিঠার মোহময় ঘ্রাণে মুখরিত চারপাশ। আর ভোজন রসিকদের কৌতূহলী দৃষ্টি প্রতিটি স্তূপে।

তবে সবার নজর কেড়েছে কিছু ব্যতিক্রমী নামের পিঠায়। এর মধ্যে রয়েছে- বোমা, ছেলেদের মন, হাসু আপার কুমড়ানি, হাইভোল্টেজ পায়েশ, আখেরি পাস্তা অন্যতম। নামের ভিন্নতা যেমন আকর্ষণ জাগাচ্ছে, তেমনি স্বাদের রহস্য উন্মোচনেও আগ্রহ বাড়িয়ে তুলছে।

এসব দেখা মিলেছে সাভারের গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) পিঠা উৎসবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ উৎসবকে ঘিরে পিঠার রাজত্ব দখল করতে দুর্দান্ত এক মধুর লড়াইয়ে নেমেছে। নিজেদের হাতের গুণে, মনের জোরে তারা সাজিয়েছে এক মহারণ; পিঠার মহাযজ্ঞ।

বাঙালিয়ানার জেদ আর ঐতিহ্যের ধুলো ঝেড়ে তারা তুলে এনেছে ২ শতাধিক পিঠার বাহার। ২৫টি স্টল জুড়ে তাদের এ দাপুটে আয়োজন যে কাউকে তাক লাগিয়ে দেবে। বাহারি আকার, রঙ, স্বাদ আর নামের নতুনত্বে পিঠা উৎসব হয়ে উঠেছে প্রাণবন্ত।

এছাড়া পাটিসাপটা, ভাপা পিঠা, নকশি পিঠা, মাংস পুলি, দুধ পুলি, মাংস-ঝাল পিঠা, লবঙ্গ লতিকা পিঠা, জামাই পিঠা, মিষ্টি কুমড়া পিঠা, তক্তি পিঠা, কদম ফুল, গোলাপ পিঠা, ডাবের পুডিং, অরেঞ্জ জেলিসহ পরিচিত সব পিঠা তো আছেই। এদের একেকটির স্বাদ একেক রকম। তবে মেলায় আগতদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে বোমা পিঠা ২০ টাকা, হাসু আপার কুমড়ানি ও ছেলেদের মন।

সমাজবিজ্ঞান ও সমাজকর্ম বিভাগের ‘সামাজিক পিঠাঘর’ স্টলে সাজানো ‘বোমা’ পিঠা দেখতে ভীড় করছেন উৎসুক দর্শকরা।

অন্যদিকে, ভেটেরিনারি অনুষদের স্টলে শিক্ষার্থীরা সাম্প্রতিক সময়ের কলকাতার সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষের জনপ্রিয় ডায়ালগকে অনুসরণ করে ঝুলিয়ে দিয়েছে এক অভিনব ফেস্টুন— ‘থাকবে না, থাকবে না! একটি পিঠাও থাকবে না!’ উৎসবে আসা পিঠাপ্রেমীদের চোখে পড়তেই এটি হয়ে উঠেছে আলোচনার বিষয়, যেন মুহূর্তেই সব পিঠা উধাও হয়ে যাবে!

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দিনভর উৎসবের আমেজে মুখর হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ। বাহারি পিঠার প্রদর্শনীতে যেন মিশে গেছে বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্যের স্বাদ। গ্রামীণ খেলাধুলার উচ্ছ্বাসে ফিরেছে শৈশবের স্মৃতি। অপরদিকে, ডিবেটিং সোসাইটির আয়োজনে রম্য বিতর্ক যেন বুদ্ধির খেলা জমিয়ে তুলেছে প্রাণবন্ত এক পরিবেশ।

উৎসব উদ্বোধনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.

মো. আবুল হোসেন বলেন, “আমাদের ঐতিহ্যকে ধারণ করে প্রতিবছর ন্যায় এবারও শিক্ষার্থীরা পিঠা উৎসব আয়োজন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস একটি পবিত্র জায়গা। আশাকরি আমরা সবাই মিলে সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ও পরিবেশ মোকাবিলা করে সফলভাবে অনুষ্ঠানটি শেষ করতে পারব।”

উৎসবের রঙ আরও গাঢ় করেছে রাফেল ড্রয়ের রোমাঞ্চ, যেখানে প্রত্যেকেই অপেক্ষায় আকর্ষণীয় পুরস্কারের। এরই মাঝে নাচ ও লোকগানের সুরে মেতে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও মিউজিক সোসাইটি, যেন সময় ফিরে গেছে হারানো বাংলার গ্রাম্য উৎসবে।

এছাড়া স্বরূপ ও হাইওয়ে ব্যান্ডের প্রাণবন্ত পরিবেশনা যেন রাতের আকাশে এক উচ্ছ্বাসের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে; ছড়িয়ে দিয়েছে সুর আর উন্মাদনার ঝংকার।

উৎসবের আয়োজক কমিটির সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান ড. আলী আজম খান বলেন, “আবহমান বাংলায় পিঠা উৎসব চমৎকার এক নিদর্শন। আমাদের শিক্ষার্থীরা আমাদের দেশজ সংস্কৃতিকে অন্তরে লালন-পালন করে। পিঠা উৎসবের মধ্য দিয়ে তারা দেশজ সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত রাখছে, এটি অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। প্রতিবারে দেশজ সংস্কৃতির এ ধারাকে অব্যাহত রেখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পিঠা উৎসব আয়োজনের সুযোগ করে দেন। এজন্য আমরা কৃতজ্ঞ।”

ঢাকা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উৎসব র

এছাড়াও পড়ুন:

আবুধাবীতে বৈশাখী উৎসব উদযাপন

সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন উপলক্ষ্য আবুধাবী শেখ খলিফা বিন জায়েদ বাংলাদেশ ইসলামিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় বৈশাখী উৎসব ও বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।

বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে জাঁকজমকভাবে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বাংলা বর্ষবরণ ও বৈশাখী উৎসব ১৪৩২ উদযাপন করা হয়।

১৯ এপ্রিল (শনিবার) দিনব্যাপী আয়োজনে আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে প্রবাসীরা উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করে তোলে। স্কুলের অডিটোরিয়াম ছাড়াও পুরো মাঠ জুড়ে প্রবাসীদের আনন্দ উল্লাস ছিল দেখার মতো।

স্টলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ দূতাবাসের ‘দূতাবাস কর্নার’, বাংলাদেশ সমিতি আবুধাবি, জনতা ব্যাংক, বাংলাদেশ বিমান আবুধাবি, ইনডেক্স মানি এক্সচেঞ্জ, আহলিয়া এক্সচেঞ্জ সহ নানান সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের স্টলগুলো ছিল বেশ আকর্ষণীয়। প্রতিটি স্টল সাজানো হয় দেশীয় সাজে। উৎসব ঘিরে নানান ধরনের পিঠাপুলি, দেশীয় আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো ছিল দেশীয় স্টলগুলো। দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পী ও স্কুলের শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন নাচ ও গান। সকাল ১০টা হতেই মেলায় জমে মানুষের ভিড়। ফিতা কেটে এই মেলার শুভ উদ্বোধন করেন মান্যবর রাষ্ট্রদূত।

রাষ্ট্রদূত তারেক আহম্মেদের সভাপতিত্বে ও মিশন উপ প্রধান শাহানাজ আক্তার রানুর উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত বৈশাখী উৎসবে দূতাবাস ও কনস্যুলেট কর্মকর্তা, নিউজিল্যান্ড, মালেশিয়া, আর্মেনিয়া, গাম্বিয়া, বসনিয়াসহ ১২টি দেশের রাষ্ট্রদূত পত্নী উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। এছাড়াও স্কুল শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, সাধারণ প্রবাসীরা উপস্থিত হন অনুষ্ঠানে, মেলা দেখতে অনেকে আসেন প্রবাসে থাকা পরিবারের নিয়েও।

আয়োজন শেষে পুরস্কার বিতরণীর মাধ্যমে শেষ হয় দিনব্যাপী এই আয়োজন। রাষ্ট্রদূত তারেক আহম্মেদ বর্ষবরণের আয়োজনকে সকলের সহযোগিতায় সাফল্যমণ্ডিত করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শাহ জাহান/হাসান/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবার রিশাদের ২ উইকেট ও ২ রান, রান উৎসবের ম্যাচে হেরে গেল লাহোর
  • ভেড়াডহর গ্রামে উরিগানের আসরে
  • এমপিওভুক্ত পৌনে ৫ লাখ শিক্ষকের বোনাস বাড়ছে
  • প্রথম আলোর উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি উৎসব আগামী ১৫ ও ১৬ মে
  • পয়লা বৈশাখের পর বৈশাখী ভাতা পেলেন মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীরা
  • কানাডার টরেন্টোতে বাংলা বর্ষবরণ উৎসব
  • আরাকান আর্মির বাংলাদেশের আকাশীমা লংঘ‌নের প্রতিবাদ
  • অনুপ্রবেশ করে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে: জামায়াত
  • মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি মেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব
  • আবুধাবীতে বৈশাখী উৎসব উদযাপন