সেই কাঁটাতারের বেড়ায় এবার বাঁশ বাঁধল ভারতীয়রা, ভিডিও ভাইরাল
Published: 30th, January 2025 GMT
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম সীমান্তের শূন্যরেখায় সেই কাঁটাতারের বেড়ায় এবার বাঁশ বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) প্রহরায় দেশটির কৃষকেরা বাঁশ বাঁধছে- এক মিনিট ৫১ সেকেন্ডের এমন একটি ভিডিও উভয় দেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা গেছে, বিজিবি প্রতিবেশী দেশের এ কাজের বিরোধীতা করলেও তারা (ভারতীয়রা) তাদের কাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গত মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে দহগ্রাম ইউনিয়নের হাঁড়িপাড়া ও সরকারপাড়া সীমান্তে বিএসএফের জিরোর লাইনে লাগানো কাঁটাতারের বেড়ায় বাঁশের বাতা (বাকল) দিয়ে শক্ত করার চেষ্টা করে। এ সময় বিজিবি বাধা প্রদান করে। কিন্তু বিএসএফ কোনো কথা না শুনে তাদের লোকজন দিয়ে জোরপূর্বক বেড়া দেয়। তবে বিএসএফ সদস্যদের দাবি, কৃষকরাই এ কাজ করছেন।
ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বিজিবি-বিএসএফের উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সীমান্তে উভয় দেশ আপাতত কোনো ধরণের নির্মাণ কাজ হবে না- বিজিবির একজন সদস্য বিএসএফকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা উপেক্ষা করে তর্কে জড়ান বিএসএফ সদস্যরা। এ সময় একজন বিএসএফ সদস্যকে উচ্চস্বরে হিন্দিতে বলতে শোনা যায়, ‘আমরা কাজ করবো, তোমার যা করার তুমি করো।’ তবে পরে বিএসএফ সদস্যরা বলেন, ‘আমরা কাজ করতেছি না, ভারতীয় পাবলিক ওই বাঁশের বেড়া দিচ্ছে। এরপর বিজিবি সদস্য বলেন, ‘তাহলে আপনারা সীমান্তের শুন্য রেখায় তাদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন কেন?’ উত্তরে বিএসএফ সদস্যরা বলেন, ‘আমরা সীমান্ত পাহারা দিচ্ছি।’
এর আগে গত ১০ জানুয়ারি দহগ্রাম সীমান্তে শূন্যরেখা বরাবর প্রায় দেড় কিলোমিটার অংশজুড়ে চার ফুট উচ্চতার ওই বেড়া নির্মাণ করেছিল ভারতীয়রা। এতে বিজিবি বাধা দিলে উভয় বাহিনীর মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা হয়। বিষয়টি নিয়ে উভয় বাহিনীর ডিআইজি পর্যায়ের বৈঠক হয়। বৈঠক থেকে আপাতত কাজ না করার সিদ্ধান্তের পর সীমান্ত থেকে উভয় বাহিনী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়। এ ঘটনার এক সপ্তাহ না যেতে সেই কাঁটাতারের বেড়ায় অসংখ্য মদের খালি কাঁচের বোতল ঝুলিয়ে দেয় বিএসএফ ও ভারতীয়রা।
এরপর গত মঙ্গলবার সর্বশেষ সেই বেড়ায় জোর করে বাঁশের বাতা লাগানোর ঘটনা ঘটালো ভারতীয় সীমান্তরক্ষীর সহায়তায় কৃষকেরা।
এ বিষয়ে দহগ্রাম আঙ্গরপোতা সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রেজানুর রহমান রেজা বলেন, ভারতীয়রা একটার পর একটা ঘটনা ঘটাচ্ছে। তারা কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার পর মদের বোতল ঝোলায়। এর কয়েক দিন পর আবার সেই কাঁটাতারের বেড়ায় বাঁশের বাতা বেঁধেছে। এগুলো শয়তানি ছাড়া কিছুই না। দহগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় পাবলিককে দিয়ে জোর খাটিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে বিএসএফ। এটা সীমান্ত উত্তপ্ত করার কৌশল।’
রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পাটগ্রাম পানবাড়ি বিজিবি ক্যাম্পের সুবেদার মো.
এ বিষয়ে ৫১ বিজিবির কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সেলিম আল দিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এসএফ সদস ক জ কর সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
কসবা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। তবে স্থানীয় একাধিক সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেলেও এ ব্যাপারে বিজিবির দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। নিহত যুবক হলেন কসবার পুটিয়া গ্রামের সুলতান মিয়ার ছেলে আল আমীন (৩২)।
স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় কসবার পুটিয়া সীমান্তের ওপারে কয়েকজন যুবককে লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ছুঁড়ে বিএসএফ। এতে আল আমীন নামে এক যুবক আহত হয়। পরে বিএসএফ সদস্যরা তাকে ভারতের হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে শুক্রবার রাত ৯টায় মারা যান তিনি। মরদেহ বিএসএফ ক্যাম্পে রয়েছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদির ও কসবার বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তারা আল আমীন নামের ওই যুবকের বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনাটি স্থানীয় বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। তবে এ বিষয়ে বিজিবির সুলতানপুর ৬০ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বশীল কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।