বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৯ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘পোভার্টি ম্যাপ অব বাংলাদেশ, ২০২২’ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সন্মেলন কেন্দ্রে পোভার্টি ম্যাপ প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), বিশ্বব্যাংক এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো.

মাহবুব হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর সামনো লাওসন পার্সিমেন্ট এবং বিশ্বব্যাংকের হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রোগ্রাম লিডার এস আমের আহমেদ।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহিউদ্দিন আহমেদ। প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন ড. দীপঙ্কর রায়।

পোভার্টি ম্যাপে দেখানো হয়েছে, গ্রামে দারিদ্র্য কমেছে। হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভেতে গ্রামে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ, যা পোভাটি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২ এর সার্ভেতে কমে হয়েছে ২০ দশমিক ৩ শতাংশ।

অন্যদিকে, শহর এলাকায় দারিদ্র্য বেড়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। আগে শহরে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ, তা এখন বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। রংপুরে দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ।

দারিদ্র্যের হার রাজশাহী বিভাগে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ২২ দশমিক ৬ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং ঢাকা বিভাগে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দারিদ্র্য বেড়েছে সিলেট, রংপুর, খুলনা ও ঢাকা বিভাগে। বরিশালে দারিদ্র্যের হার বেশি হলেও তা আগের ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ০ দশমিক ৩ শতাংশ কমে হয়েছে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ। 

হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভেতে ঢাকার দারিদ্র্যের হার ছিল ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যা পোভাটি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২ সার্ভেতে বেড়ে হয়েছে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।

পোভার্টি ম্যাপে আরো দেখা গেছে, দেশের সবচেয়ে দরিদ্র উপজেলা মাদারীপুরের ডাসার। এখানে দারিদ্র্যের হার ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১০ সালের সার্ভেতে এ উপজেলায় দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ। ঢাকার পল্টনে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে কম ১ শতাংশ।

ঢাকা/হাসান/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স খ য ন ব য র সবচ য়

এছাড়াও পড়ুন:

এবার রাগবি বিশ্বকাপও চায় সৌদি আরব

২০২২ ফুটবল বিশ্বকাপ সফলভাবেই আয়োজন করেছে কাতার। ২০৩৪ ফুটবল বিশ্বকাপের স্বাগতিক সৌদি আরব। সংযুক্ত আরব আমিরাতেরও টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, বিশ্ব ট্রায়াথলন চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্ব সাঁতার চ্যাম্পিয়নশিপের মতো বৈশ্বিক ক্রীড়া আসর আয়োজনের অভিজ্ঞতা আছে।

মধ্যপ্রাচ্যের এই তিন দেশ মিলে এবার রাগবি বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। এ জন্য তারা ২০৩৫ অথবা ২০৩৯ বিশ্বকাপের জন্য বিড করবে। এশিয়া মহাদেশের রাগবি নিয়ন্ত্রক সংস্থা এশিয়া রাগবিও সৌদি, কাতার ও আরব আমিরাতকে আয়োজন স্বত্ব পাইয়ে দিতে জোরালো সমর্থন জানাবে।

উপসাগরীয় দেশ তিনটির দাবি, তাদের সুযোগ দেওয়া হলে ‘রাগবি ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ইভেন্ট’ আয়োজন করে দেখাবে।

এশিয়া মহাদেশে এখন পর্যন্ত একবারই রাগবি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯ সালে নবম আসর হয়েছিল জাপানে। ২০২৭ সালে একাদশ আসর বসবে অস্ট্রেলিয়ায়, ২০৩১ দ্বাদশ আসরের আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র।

২০৩৫ বিশ্বকাপের বিডিং প্রক্রিয়া আগামী দুই বছরের মধ্যে শুরু হবে। সেই আসরের আয়োজক হতে এরই মধ্যে তদবির শুরু করে দিয়েছে ইতালি ও স্পেন। শেষ পর্যন্ত এই দুই দেশের কেউ ২০৩৫ বিশ্বকাপের আয়োজন স্বত্ব পেয়ে গেলে ২০৩৯ বিশ্বকাপের জন্য বিড করবে সৌদি, কাতার ও আরব আমিরাত।

তবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ তিনটির কারোরই ‘রাগবি খেলুড়ে জাতি’ হিসেবে পরিচিতি নেই। এমনকি তারা কখনো বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলার যোগ্যতাও অর্জন করতে পারেনি। ফুটবল বিশ্বকাপের ক্ষেত্রে স্বাগতিক দেশ সরাসরি মূল পর্বে খেলার সুযোগ পেলেও রাগবি বিশ্বকাপের ক্ষেত্রে তা নয়। এখানে আয়োজন স্বত্ব পাওয়া দেশকেও বাছাই পর্ব পেরিয়ে আসতে হয়। এখন পর্যন্ত যে দশবার রাগবি বিশ্বকাপ হয়েছে, প্রতিবারই স্বাগতিক দেশ বাছাই পর্বের বাধা টপকেছে।

কিন্তু সৌদি, কাতার ও আরব আমিরাত আদৌ বাছাই পেরিয়ে আসতে পারবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। তাই বিশ্ব রাগবির নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেও ফিফার পথ অনুসরণ করতে হতে পারে। অর্থাৎ, নিয়ম বদলে তিন স্বাগতিক দেশকে সরাসরি বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলার সুযোগ দেওয়া।

এশিয়া রাগবিও এ ধরনের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা করছে। সংস্থাটি মনে করে, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া অথবা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়া চাইলেই ২০৩৯ বিশ্বকাপের যৌথ আয়োজক হতে বিড করতে পারে। কিন্তু তাদের পছন্দের জায়গা মধ্যপ্রাচ্য।

রাগবি বিশ্বকাপ সাধারণত সেপ্টেম্বর–অক্টোবরে হয়ে থাকে। কিন্তু মাধ্যপ্রাচ্যে সেই সময়ের আবহাওয়া তীব্র গরম হওয়ায় সৌদি, কাতার ও আরব আমিরাতে ডিসেম্বরে বিশ্বকাপ হতে পারে। এমনকি ফাইনাল চলে যেতে পারে পরের বছর জানুয়ারিতে। ২০২২ সালে কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপও বছরের শেষ ভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

 রাগবি বিশ্বকাপ আয়োজনের বিডে সফল হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী এশিয়া রাগবির সভাপতি কাইস আল দালাই। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের উপসাগরীয় অঞ্চলের নেতাদের বিশ্বাস, কোনো কিছুই অসম্ভব নয়। আমি এখনই দেখতে পাচ্ছি, ২০৩৫ সালেই এটা ঘটতে পারে (মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ যৌথ আয়োজক হতে পারে)।’

ফুটবল বিশ্বকাপের উদাহরণ টেনে আল দালাই আরও বলেছেন, ‘আমি একাধিক দেশে (রাগবি বিশ্বকাপ) আয়োজন মডেলের পক্ষে। ফিফা ২০০২ বিশ্বকাপ জাপান ও কোরিয়া আয়োজন করে দেখিয়েছে, ২০২৬ বিশ্বকাপ মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় হতে যাচ্ছে, এরপর ২০৩০ বিশ্বকাপ হবে তিন মহাদেশে। তাহলে রাগবি কেন নয়?’

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো কেন রাগবি বিশ্বকাপ আয়োজনের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, তা সবার জানা। মানবাধিকার ইস্যুতে বহির্বিশ্বে তাদের ভাবমূর্তি ভালো নয়। বিশেষ করে সৌদি আরব সাম্প্রতিক বছরগুলোয় মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে দাবি করে আসছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকেরা, যা দেশটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। 

 ভাবমূর্তি ফেরাতেই সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ক্রীড়াঙ্গনে অঢেল অর্থ বিনিয়োগ করতে শুরু করেছেন, যেটিকে বলা হচ্ছে ‘স্পোর্টস ওয়াশিং’। ফুটবল, গলফ, বক্সিং, টেনিস, রেসিংসহ আরও অনেক খেলায় বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি।

সর্বশেষ আইপিএলের মেগা নিলামও সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইপিএলকে টক্কর দিতে ৬ হাজার কোটি টাকার টি–টোয়েন্টি লিগ আনারও পরিকল্পনা করছে। শোনা যাচ্ছে, দেশটি ২০৩৬ অলিম্পিকের আয়োজক হতেও বিড করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাতক্ষীরার চরম বেকারত্ব ঘুচবে কীভাবে
  • আরও একবার বিশ্বকাপে চুমু মেসির, কী বললেন লাজুক কণ্ঠে
  • এবার রাগবি বিশ্বকাপও চায় সৌদি আরব