দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে ১৯.২ শতাংশ
Published: 30th, January 2025 GMT
বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৯ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘পোভার্টি ম্যাপ অব বাংলাদেশ, ২০২২’ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সন্মেলন কেন্দ্রে পোভার্টি ম্যাপ প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস), বিশ্বব্যাংক এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো.
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহিউদ্দিন আহমেদ। প্রশ্নোত্তর পর্ব পরিচালনা করেন ড. দীপঙ্কর রায়।
পোভার্টি ম্যাপে দেখানো হয়েছে, গ্রামে দারিদ্র্য কমেছে। হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভেতে গ্রামে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ, যা পোভাটি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২ এর সার্ভেতে কমে হয়েছে ২০ দশমিক ৩ শতাংশ।
অন্যদিকে, শহর এলাকায় দারিদ্র্য বেড়েছে ১ দশমিক ৮ শতাংশ। আগে শহরে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ, তা এখন বেড়ে হয়েছে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ এবং সবচেয়ে কম চট্টগ্রাম বিভাগে ১৫ দশমিক ২ শতাংশ। রংপুরে দারিদ্র্যের হার ২৫ শতাংশ।
দারিদ্র্যের হার রাজশাহী বিভাগে ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ২২ দশমিক ৬ শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ এবং ঢাকা বিভাগে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দারিদ্র্য বেড়েছে সিলেট, রংপুর, খুলনা ও ঢাকা বিভাগে। বরিশালে দারিদ্র্যের হার বেশি হলেও তা আগের ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ০ দশমিক ৩ শতাংশ কমে হয়েছে ২৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেনডিচার সার্ভেতে ঢাকার দারিদ্র্যের হার ছিল ১৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যা পোভাটি ম্যাপ অব বাংলাদেশ ২০২২ সার্ভেতে বেড়ে হয়েছে ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ।
পোভার্টি ম্যাপে আরো দেখা গেছে, দেশের সবচেয়ে দরিদ্র উপজেলা মাদারীপুরের ডাসার। এখানে দারিদ্র্যের হার ৬৩ দশমিক ২ শতাংশ। ২০১০ সালের সার্ভেতে এ উপজেলায় দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ। ঢাকার পল্টনে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে কম ১ শতাংশ।
ঢাকা/হাসান/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স খ য ন ব য র সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
৩১ ঘণ্টা অনশনে চবির নয় শিক্ষার্থী, দু’জনকে স্যালাইন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনের তীব্র গরমে খোলা আকাশের নিচে বিছানা পেতে শুয়ে আছেন ৯ শিক্ষার্থী। সঙ্গে বসে আছেন তাদের সহপাঠীরা। গত সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে আমরণ অনশনে আছেন তারা। পিপাসা ও ক্ষুধার্ত হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন দুজন। তবুও ভাঙেননি অনশন। কিছুক্ষণ পর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরাসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা হেঁটে গেছেন তাদেরই সামনে দিয়ে। দুই-একজন আশ্বাস দিলেও বেশিরভাগ কর্মকর্তাই ছিলেন নীরব।
মূল ক্যাম্পাসে ফেরার দাবিতে ৩১ ঘণ্টা ধরে অনশনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার তীব্র গরমে ধীরে ধীরে ক্লান্ত হয়ে পড়েন তারা। বিকেল চারটায় দু’জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান মেডিকেল অফিসার আব তৈয়ব বলেন, দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের সুগার লেবেল ডাউন হয়ে যাচ্ছে। ফলে মাথা ঘোরানো, বমি ও অজ্ঞান হওয়াসহ গরমে হিট স্ট্রোক হতে পারে। আমি দু’জনকে স্যালাইন দিয়েছি।
অনশনরত ৯ শিক্ষার্থী হলেন- ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের খন্দকার মাসরুল আল ফাহিম; ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নূর ইকবাল সানি; ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মো. শাহরিয়ার হাসান সোহেল; ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ইসরাত জাহান ইয়ামিন, মালিহা চৌধুরী, ইসরাত জাহান, নুসরাত জাহান ইপা; ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের তরিকুল ইসলাম মাহী ও মাহমুদুল ইসলাম মিনহাজ ।
অনশনরত শিক্ষার্থী মো. শাহরিয়ার হাসান সোহেল বলেন, আমাদের অনশনের একটাই উদ্দেশ্য দ্রুত সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে চারুকলার বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে। হয় চারুকলা প্রত্যাবর্তন নয়তো আমাদের মৃত্যু। শিক্ষকরা সভায় এই সিদ্ধান্তের বাহিরে কোনো কিছুই আমরা মেনে নেব না।
এদিকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সভা চলছিল।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের যাত্রা ১৯৭০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। এর পর ২০১০ সালে নগরের সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে এক করে গঠন করা হয় চারুকলা ইনস্টিটিউট। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে নগরীর মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে এখন এর অবস্থান।
২০২২ সালের ২ নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের এক দফা দাবিতে আন্দোলন চলে। ওই শিক্ষার্থীরা চারুকলা ইনস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবি জানান। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চারুকলা ইনস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের ১০০তম দিনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা ও হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর সেশনজট কমাতে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। এর পর বিভিন্ন সময়ে এই দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
সর্বশেষ অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ডিসেম্বরে আবারও আন্দোলন নামেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। ১২ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি মার্চের মধ্যেই চারুকলা ইনস্টিটিউট বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান। তবে এই প্রক্রিয়ার দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখায় সোমবার থেকে আবারও আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।