এবার যুক্তরাজ্য থেকে কোকা-কোলা প্রত্যাহার
Published: 30th, January 2025 GMT
এবার যুক্তরাজ্যের বাজার থেকে নিজেদের কোমল পানীয় প্রত্যাহার করে নিচ্ছে কোকা-কোলা। বোতলজাত এসব পানীয়তে ‘ক্লোরেট’ নামক রাসায়নিকের ‘উচ্চ মাত্রা’ শনাক্ত হওয়ার পর, কোকা-কোলা কোম্পানির বোতলজাতকরণ অংশীদার প্রতিষ্ঠান এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের ক্যাফে এবং রেস্তোরাঁগুলোতে পাঠানো কোকা-কোলা অরিজিনাল টেস্ট, কোকা-কোলা জিরো সুগার, ডায়েট কোক এবং স্প্রাইট জিরো ক্যান প্রত্যাহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি সুপারমার্কেটগুলোতে পাঠানো ৬ বাই ২৫০ মিলি অ্যাপলেটাইজার মাল্টিপ্যাকও প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
এবার যুক্তরাজ্যের এমপি পদ থেকে টিউলিপের পদত্যাগ দাবি
অন্তর্বর্তী সরকারের সমালোচনা করে প্রতিবেদন প্রত্যাহার ব্রিটিশ এমপিদের
গত সোমবার ইউরোপ জুড়ে কোকা-কোলার পণ্য প্রত্যাহারের পরে এই ঘোষণা এলো।
কোকা-কোলা ইউরোপ্যাসিফিক পার্টনারস, যারা কোম্পানির বোতলজাতকরণের দায়িত্বে রয়েছে তারা বলছে, এই রাসায়নিকের কারণে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি খুবই কম।
কোকা-কোলার ৩২৮ জিই থেকে ৩৩৮ জিই পর্যন্ত উৎপাদন কোডের অধীন ক্যানগুলো প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
তবে কোম্পানিটি নিশ্চিত করেছে যে, যুক্তরাজ্যে বিক্রি হওয়া বেশিরভাগ পণ্য, যার মধ্যে সাধারণ ক্যান, কাঁচের বোতল ও প্লাস্টিক বোতল অন্তর্ভুক্ত, এই প্রত্যাহারের আওতায় পড়ে না।
গত সোমবার বেলজিয়াম, লুক্সেমবার্গ এবং নেদারল্যান্ডসে কোকা-কোলা পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার করার পর এবার যুক্তরাজ্য থেকেও প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
বেলজিয়ামের গেন্ট শহরের উৎপাদন কেন্দ্রে নিয়মিত পরীক্ষার সময় ক্লোরেটের উচ্চ মাত্রা শনাক্ত হয় বলে এএফপি নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্লোরেট সাধারণত ক্লোরিন-ভিত্তিক জীবাণুনাশক ব্যবহার করে পানি পরিশোধন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সময় উৎপন্ন হতে পারে। উচ্চ মাত্রার ক্লোরেট শরীরে প্রবেশ করলে থাইরয়েডজনিত সমস্যার কারণ হতে পারে, বিশেষ করে শিশু ও নবজাতকদের জন্য এটি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
এনএইচএস এবং ব্যক্তিগত পুষ্টিবিদ ক্যারন গ্রাজেট বলেন, আমাদের ভাবতে হবে, আমরা কি এমন রাসায়নিক উপাদানযুক্ত সফট ড্রিংক গ্রহণ করতে চাই, যা আতশবাজি ও জীবাণুনাশক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, যদিও তা খুবই সামান্য পরিমাণে? অতিরিক্ত ক্লোরেট গ্রহণ করলে বমি, ডায়রিয়া, রক্তের অক্সিজেন শোষণের ক্ষমতা হ্রাস এবং শরীরের অসুস্থতা সৃষ্টি হতে পারে।
তবে কোকা-কোলা বলছে, গ্রাহকদের জন্য ঝুঁকি কম।
কোকা-কোলা ইউরোপাসিফিক পার্টনার্স জানিয়েছে, স্বাধীন বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণে দেখা গেছে যে, এই পণ্যগুলো গ্রহণের ফলে সাময়িকভাবে অসুস্থ বোধের ঝুঁকি খুবই কম।
কোম্পানিটি একটি বিবৃতিতে বলেছে, “আমাদের পণ্যের গুণমান এবং সুরক্ষা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আমরা দুঃখিত যে, এক্ষেত্রে আমাদের অল্প সংখ্যক পণ্য আমাদের উচ্চ মান পূরণ করতে পারেনি এবং এর ফলে যেকোনো অসুবিধার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী।”
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
রাস্তা খুঁড়ে রেখে ঠিকাদার লাপাত্তা
ভোলায় প্রায় দুই কিলোমিটার সড়ক খোঁড়াখুঁড়ি করে রাখা হয়েছে। তিন মাসের অধিক সময় ধরে ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে সড়ক ফেলে রাখায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে কয়েক লাখ মানুষ।
ভোলার ইলিশা বাসস্ট্যান্ড থেকে হাওলাদার মার্কেট পর্যন্ত সড়কের নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ করায় মাঝপথে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে ওই রাস্তার একাংশে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। কিছু রাস্তা খুঁড়ে বালু ফেলে রাখায় মানুষের স্বাভাবিক হাঁটাচলাও বন্ধের পথে। খান্দাখন্দের কারণে বাকি অংশও এখন চলাচলের অযোগ্য। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে এ সড়কের সংস্কার ও বর্ধিতকরণের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে মাঝপথে থেমে রয়েছে উন্নয়নকাজ। ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত সংস্কারকাজ শেষ করার
দাবি এলাকাবাসীর।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ভোলা শহরের ইলিশা বাসস্ট্যান্ড থেকে কলঘাট, জাঙ্গালিয়া হয়ে পশ্চিম ইলিশার হাওলাদার মার্কেট পর্যন্ত পৌনে ১০ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কার ও বর্ধিতকরণের জন্য ২৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। ১২ ফুট চওড়া রাস্তাটিকে ১৮ ফুট চওড়া করে ভারী যানবাহন চলাচলের উপযোগী করতে ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইএফটিসিএলের অনুকূলে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এক বছরের মধ্যে ওই সংস্কারকাজ শেষ করার কথা থাকলেও নির্ধারিত সময়ে পর কাজ শুরু হয়। এর পর অনিয়মের অভিযোগে তিন মাস আগেই বন্ধ করে দেয় স্থানীয়রা। এতে ভোগান্তি কমার পরিবর্তে আরও বেড়ে যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, কার্যাদেশের শর্ত না মেনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইএফটিসিএল সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশার হাওলাদার মার্কেট থেকে
পাঙ্গাশিয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমটার পুরোনো রাস্তার পিচের কার্পেটিং এক্সক্যাভেটর দিয়ে তুলে ফেলে। পরে রোলার করে নতুন রাস্তার নির্মাণকাজ শুরু করে। স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই কাজ ফেলে তার দক্ষিণ দিকে আরও এক কিলোমিটার রাস্তার মাটি খুঁড়ে বেজমেন্টে বালু ফেলে কাজ বন্ধ করে দেয়। ফলে ব্যস্ততম ওই রাস্তায় যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। বালুর কারণে এখন মানুষ হেঁটেও চলতে পারছে না ওই রাস্তায়।
বাঘারহাট এলাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ও ছালাউদ্দিন জানান, শুরুতে কার্যাদেশ অনুযায়ী কাজ করছিলেন না ঠিকাদার। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে তারা কার্যাদেশ অনুযায়ী রাস্তা প্রশস্ত করা ও বেজমেন্টের কাজ শুরু করে। প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত পুরোনো রাস্তা খুঁড়ে বালু ফেলে এর পর রহস্যজনকভাবে কাজ বন্ধ করে চলে যায়।
কলেজছাত্র আমির হোসেন জানান, আগের ভাঙা রাস্তায় হাঁটা গেলেও এখন বালুর মধ্য দিয়ে হাঁটাচলা করা যায় না। জরুরি প্রয়োজনে রোগী হাসপাতালে নিতে সমস্যা হচ্ছে। কৃষিপণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে। বর্ষার আগে রাস্তার কাজ শেষ না হলে ভোগান্তি আরও বেড়ে যাবে।
রাস্তার কাজ বন্ধ রেখে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলার প্রতিবাদে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ ও ভোলা প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন এলাকাবাসী। তারা অবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে কাজের সাইটে গেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে পাওয়া যায়নি। এ কারণে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কবে নাগাদ কাজ শুরু হবে, বলতে পারেননি সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু আশরাফুল হাসান। তাঁর ভাষ্য, রাস্তার স্থায়িত্ব বাড়াতে
কাজের ডিজাইন পরিবর্তন করে ঢাকায় প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রকৌশলীরা এসে দেখে গেছেন। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা এলেই কাজ শুরু করা হবে।