মধুমিতা হল ভেঙে তৈরি হবে মাল্টিপ্লেক্স!
Published: 30th, January 2025 GMT
ঢাকার অন্যতম প্রাচীন প্রেক্ষাগৃহ মধুমিতা। মতিঝিল শাপলা চত্বর থেকে টিকাটুলীর দিকে যেতে হাতের বাঁ পাশে এই সিনেমা হলের অবস্থান। চলচ্চিত্রের মন্দার চাপে একে একে সিনেমা হল যখন বন্ধ হচ্ছে তখনও মধুমিতা সিনেমা হলটি ঐহিত্য বুকে ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে। ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠানটি ৫০ বছর অতিক্রম করায় বছরজুড়ে সুবর্ণজয়ন্তীও উদ্যাপন করে।
ঐতিহ্য ধরে রাখতে সিনেমা হলটিকে কোটি টাকা খরচ করে আধুনিকায়ন করা হয়েছিল। পৈতৃক ব্যবসাকেই আঁকড়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন এর বর্তমান কর্ণধার ইফতেখার নওশাদ। কিন্তু দেশে চলচ্চিত্রের বাজারের ধারাবাহিক পতনে সেই আশা এখন মরীচিকায় রূপ নিয়েছে। ঐতিহ্যবাহী সিনেমা হলটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মালিক। আসছে রোজার ঈদে উৎসবের সিনেমা চালিয়ে সিনেমা হলটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
ইফতেখার নওশাদ বলেন, কোটি টাকা দিয়ে হলের মানউন্নয়ন করিয়ে সিনেমা না চালিয়ে মধুমিতা বন্ধ করে রেখেছি। সিনেমা নাই কি করবো হল চালু রেখে। যে সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে সেইগুলো তো সিনেপ্লেক্সের সিনেমা। আমাদের হলে চালানোর মতো না। বছরে এত লস গুনে গুনে তো টিকে থাকা যায় না। তাই আসছে রোজার ঈদের সিনেমা চালানোর পর চিরতরেই মধুমিতা বন্ধ করে দেবো।’
সিনেমা হলটি ভেঙে সেখানে উঠবে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন। আশার কথা হচ্ছে সেখানে মাল্টিপ্লেক্স থাকবে বলেও জানিয়েছেন নওশাদ। সমকালকে তিনি বলন, ‘অনেক চেষ্টাই আমি করেছি যেন হলটি চালু রাখা যায়। এটা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হলেও এই শহরের সিনেমাপ্রেমীদের জন্য একটা ইমোশন, নস্টালজিয়া। কিন্তু পারছি না। বাধ্য হয়েই বন্ধের সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। পরিবার থেকেও চাপ ছিল বন্ধ করে যেন ডেভেলপার কোম্পানিকে দিয়ে দিই। তবে নতুন ভবনে মাল্টিপ্লেক্স করার ইচ্ছে রয়েছে। দেখা যাক কতটা কি করতে পারি।’
রোজার ঈদে মুক্তি পাবে শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমা। সব ঠিক থাকলে এই বরবাদই হবে মধুমিতা হলে প্রদর্শিত শেষ সিনেমা। বাংলা চলচ্চিত্র ইন্ডাষ্ট্রির সোনালী দিনের স্মৃতি ধারণ করে রাজধানীর বুকে অর্ধশত বছর পেরিয়েছে এই মধুমিতা হল। ১৯৬৭ সালের ১ ডিসেম্বর মধুমিতা সিনেমা হল উদ্বোধন করেছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার বিচারপতি আব্দুল জব্বার খান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন ম হল
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ধান লুটের অভিযোগ
কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাহিদুল আলম জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মারধর করে ১৩ জন কৃষকের ৬৬ একর জমির ধান লুটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো প্রতিকার মেলেনি।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শহরের রথখলা এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন কৃষকরা। সেখানেই এসব অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে কৃষক মো. মাসুদ মিয়া লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান। তিনি বলেন, তিনি, নায়েব আলী, মোস্তফা মিয়া ও সাইফুল মিয়াসহ ১৩ জন কৃষক সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের ছোট ভাই আবদুল হকের কাছ থেকে এক বছরের জন্য ৬৬ একর বোরো জমি লিজ নিয়েছিলেন। প্রতি একর জমি ১৩ হাজার টাকায় লিজ নিয়ে চাষাবাদসহ প্রতি একরে খরচ পড়েছে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। প্রতি একরে ধান হওয়ার কথা ১০০ মণ। যার বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় এক লাখ টাকা। তিনি (মাসুদ মিয়া) লিজ নিয়েছিলেন ৬ একর জমি।
সংবাদ সম্মেলনে মাসুদ মিয়া উল্লেখ করেন, আবদুল হক মিঠামইন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি পলাতক। এ কারণে তাঁর জমি তিনি লিজ দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীরের রাজনৈতিক বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু কৃষকরা কী দোষ করেছেন। গত শনিবার কম্বাইন হারভেস্টার দিয়ে সমুদয় ধান জাহাঙ্গীরের লোকজন কেটে নিয়ে গেছেন। এতে কৃষক ও তাদের স্বজনরা বাধা দিতে গেলে হামলা চালানো হয়। হামলায় পাঁচজন কৃষক আহত হন।
আহতরা হলেন– মাসুদ মিয়া (৪০), মোস্তফা মিয়া (৪৫), সাইফুল মিয়া (৪০), কাছুম আলী (৫৫) ও জামির হোসেন (৪৩)। গুরুতর আহত মোস্তফা মিয়া ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
বিএনপি নেতা জাহিদুল আলম জাহাঙ্গীরের ভাষ্য, এসব জমির প্রকৃত মালিকরা থাকেন কিশোরগঞ্জ শহরে। তাদের জমি সাবেক রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদের ছোট ভাই আবদুল হক জোরপূর্বক দখল করেছিলেন। ৫ আগস্টের পর তিনি পালিয়ে গেলে প্রকৃত মালিকরাই জমি আবাদ করেছিলেন। তারা নিজেদের জমির ধান কাটার সময় অভিযোগকারীদের ৫ একরের মতো জমির ধান কাটা হয়ে থাকতে পারে। তাঁকে বিতর্কিত করার জন্যই আবদুল হকের লোকজন সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে কয়েকজন জামা খুলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখিয়েছেন। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তরা মিঠামইন থানায় গেলে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়। কিন্তু জমির মালিকদের তালিকা দেওয়ার পরও জাহাঙ্গীরের প্রভাবে থানা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
এ বিষয়ে মিঠামইন থানার ওসি শফিউল আলম দাবি করেন, জমির ধান কাটার তিন-চার দিন আগে কয়েকজন তাঁর কাছে অনানুষ্ঠানিকভাবে জানান, তারা ধান কাটার ব্যাপারে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। তখন তিনি তাদের জমির কাগজপত্রসহ অভিযোগ দিতে বলেন। কাগজপত্র দেখে অন্যদের সঙ্গে কথা বলে ধান কাটার ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তারা যোগাযোগ করেননি, কোনো লিখিত অভিযোগও দেননি।