বিপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের নিবন্ধন করতে বা টিকিয়ে রাখতে বছরে দেড় কোটি টাকার ফি দিতে হয় বিসিবিকে। এই টাকা না দিলে খেলার অনুমতি পাওয়ার কথা না কোনো দলের। এক বছর আগেও এ নিয়ম কঠোরভাবে মানা হতো। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে বিসিবির অবস্থান এতটাই নড়বড়ে হয়ে গেছে, ফি না দিয়েও লিগের বেশির ভাগ ম্যাচ খেলে ফেলেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।
একমাত্র ফরচুন বরিশাল ছাড়া বাকি ছয় দলের কেউই ফ্র্যাঞ্চাইজি ফির পুরোটা দেয়নি বলে জানান বিসিবির একজন পরিচালক। তিনি জানান, রংপুর রাইডার্স ৫০ লাখ টাকার চেক দিয়েছে মঙ্গলবার। বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সঙ্গে ফ্র্যাঞ্চাইজি স্বত্বাধিকারীদের সভায় বকেয়া ফি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
একাদশ বিপিএলে ১১ রাউন্ডের খেলা হয়ে গেলেও রংপুরের কাছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি বকেয়া ১ কোটি টাকা। বাকি পাঁচ ফ্র্যাঞ্চাইজি ১৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা করে বকেয়া রেখেছে বলে জানা গেছে। যে দেশে বিসিবির টাকা বকেয়া রেখে লিগ খেলে ফেলে, সেখানে ক্রিকেটারদের সম্মানী না পাওয়া বিপিএলের নিয়ম ধরে নিতেই পারেন। হয়তো এ কারণেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টিপ্পনী করে বিপিএলকে লেখা হচ্ছে, ‘বকেয়া’ লিগ।
বিপিএলে ক্রিকেটারদের সম্মানী সময়মতো পরিশোধ না করার সংস্কৃতি পুরোনো। ২০১২ সাল থেকেই দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের অভিযোগ জমা হয়েছে বিসিবিতে। ক্রিকেটারদের আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিবারই শঙ্কা প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে।
আগের অভিযোগগুলো লিগ শেষে শোনা গেলেও এবার মাঝামাঝি সময় থেকেই তোলপাড়। টাকার দাবিতে ক্রিকেটাররা অনুশীলন বয়কট করেছেন। ক্রিকেটারদের হোটেল থেকে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে গতকাল। দুর্বার রাজশাহীর ঢাকার আবাসিক ক্রিকেটারদের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে টাকা বাঁচাতে। টিম ম্যানেজমেন্টের দেওয়া মেসেজ ক্রিকেটাররা সাংবাদিকদের কাছে পাঠিয়ে দিলে গোমড় ফাঁস হতে দেরি লাগেনি।
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রাজশাহী থেকে পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, দলটির ঢাকায় বসবাসকারী ক্রিকেটারদের তিন দিনের ছুটি দেওয়া হয়েছে। বাধ্যতামূলক এই ছুটিতে গেছেন এনামুল হক বিজয়, তাসকিন আহমেদ, জিসান আলমরা। তারা ঠাট্টা করে বলছেন, ‘ফ্যামিলি লিভ।’
রাজশাহী একা নয়, চিটাগং কিংসের দেশি-বিদেশি ক্রিকেটাররাও সম্মানীর দাবিতে অস্থির হয়ে উঠেছেন। চেক বাউন্স করার তথ্য ফাঁস করায় জাতীয় দলের ক্রিকেটার পারভেজ হোসেন ইমনকে নিয়ে তো আপত্তিকর মন্তব্যও করেছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি স্বত্বাধিকারী সামির কাদের।
বিসিবি থেকে এখন পর্যন্ত এ ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে জবাবদিহি চাওয়া হয়নি। রাজশাহীর স্বত্বাধিকারী ভ্যালেন্টাইন গ্রুপের এমডি শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে নোটিশ ইস্যু করেনি বোর্ড। লিগের খেলা শেষের পথে চলে আসায় বাকি দলের ক্রিকেটাররাও একটু একটু করে মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা খেলোয়াড়রা ক্রিকেট খেলি টাকার জন্য। পারিশ্রমিক না পেলে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্যই খারাপ। ক্রিকেট বোর্ড আমাদের অভিভাবক, তারা আমাদের দায়িত্ব নিয়ে কথা বলবে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের সঙ্গে। সে ক্ষেত্রে যদি সমস্যা হয়, ক্রিকেট বোর্ড একটা ভালো সমাধান দেবে আমার কাছে মনে হয়।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!
ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন
গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।
এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’