খোয়াই নদীর বাঁধের একপাশের মাটি কেটে অন্যপাশ মেরামত!
Published: 30th, January 2025 GMT
হবিগঞ্জের জালালাবাদে ভেঙে যাওয়া খোয়াই নদীর মেরামতরত বাঁধ ফের ভাঙনের কবলে পড়তে পারে। বাঁধের অক্ষত অংশের গোড়া থেকে মাটি কেটে ভাঙা অংশে নিয়ে ফেলায় এই শঙ্কা করছেন বাঁধ সংশ্লিষ্ট বাসিন্দারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) এর দেওয়া অনুযায়ী, গত বর্ষায় বাঁধের ভেঙে যাওয়া ৭৮ মিটারে দুইদিকে স্লোপসহ ৯০ মিটার এবং নদীর ভিতরে ও বাইরে আরও ১২৫ মিটার ঢালু জায়গায় মাটি ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। এতে মোট ১৭ হাজার ২৮২ ঘনমিটার মাটি প্রয়োজন এবং ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪২ লাখ টাকা। ব্যয়ের টাকা নেওয়া হবে উপজেলা প্রশাসনের কাবিটা প্রকল্প থেকে। তিনটি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) কাজের তত্ত্বাবধান করবে।
পিআইসির শর্ত অনুযায়ী ৬ হাজার ৫২০ ঘনমিটার মাটি বাঁধের ক্ষতি হয় না নদীর এমন দূরবর্তী স্থান থেকে এনে এক্সকেভেটর দিয়ে ফেলার কথা। এজন্য প্রতি ঘনমিটার ১৫৬ টাকা হিসেবে ব্যয় ধরা হয় ১০ লাখ ১৬ হাজার টাকা। বাকি ১০ হাজার ৭৬২ ঘনমিটার মাটি ৪৪১ টাকা দরে ট্রাকে করে অন্যত্র থেকে আনার কথা। এর ব্যয় ধরা হয় আরও ২৬ লাখ টাকা।
এখানে পিআইসির শর্ত অমান্য করে ভেঙে যাওয়া স্থানের কাছেই নদীর অভ্যন্তরে অক্ষত বাঁধের ৭০ মিটারের কাছাকাছি স্থান থেকে এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। ফলে বাঁধের কাছেই অন্তত ১৫ ফুট গর্ত তৈরি হয়েছে। চিত্র এমন দাঁড়িয়েছে- একস্থানে বাঁধের গোড়ায় মাটি কেটে গভীর গর্তে পরিণত করে অপর স্থানের গর্ত মেরামত করা হচ্ছে।
সেখানে ১টি এক্সকেভেটর ও ৩টি ট্রাক্টর দিয়ে ৬ জন শ্রমিক কাজ করছেন। তারা এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কেটে ট্রাকে তুলে অদূরেই ভাঙা স্থানে নিয়ে ফেলছেন। কর্মরতরা জানান, বাইরে থেকে ট্রাকে করে কোনো মাটি আনা হবে না। নদীর ভিতর থেকেই ট্রাক্টর দিয়ে প্রয়োজনীয় সব মাটি ভাঙা বাঁধে ফেলা হবে।
জালালাবাদ এলাকার বাসিন্দা জমির আলী, রাজু মিয়া, সমুজ মিয়া জানান, বর্ষায় হবিগঞ্জ শহর রক্ষার উদ্দেশ্যে জালালাবাদে নদীর বাঁধ কেটে দেওয়া হয়েছিল। এজন্য প্রায় ৭ মাস ধরে বাঁধের উপরে নির্মিত সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন আবার এক স্থানে গর্ত করেই অপর স্থানের গর্ত ভরাট করা হচ্ছে। কিন্তু এমনভাবে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে যে, এর ফলে অক্ষত বাঁধের স্থানে বর্ষায় ভাঙন দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, “নদীর বাঁধের নিকট গর্ত করে মাটি কেটে নেওয়া দায়িত্বহীনতার পরিচয়। নদীতে নামানো এক্সকেভেটর তুলে নেওয়া উচিৎ। অন্য নিরাপদ স্থান থেকে মাটি আনা হোক।”
পিআইসি কমিটির সদস্য সচিব ও পাউবো এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সামিউল আজম বলেন, “কাজটা মূলত স্থানীয় উপকারভোগীদের নিয়ে গঠিত পিআইসি করছে। বাঁধের গোড়ার এত কাছ থেকে মাটি কেটে নেওয়ার কথা নয়। তারা যদি এমনটি করে থাকেন তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, গত মে মাসের বন্যায় খোয়াই নদীতে পানি বেড়ে হবিগঞ্জ শহর তলিয়ে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দেয়। তখন জালালাবাদের দিকে নদীর প্রায় ২০ ফুট বাঁধ কেটে দেওয়া হয় নদী থেকে পানি বের করে চাপ কমানোর জন্য। বাঁধ কেটে দেওয়ার পরদিনই হবিগঞ্জ শহর অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত হয়। সময় মেরামত না করায় বাঁধের ভাঙা জায়গা বাড়তে বাড়তে ২৫৬ ফুটে দাঁড়িয়েছে।
ঢাকা/মামুন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল হত্যায় আরও একজন গ্রেপ্তার
ঢাকায় বেসরকারি প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম (পারভেজ) হত্যা মামলার আসামি মেহেরাজ ইসলামকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাবের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ বুধবার বিকেলে মেহেরাজ ইসলামকে গাইবান্ধা সদরের শাহপাড়া ইউনিয়নের ভবানীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি জাহিদুল ইসলাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি বলেও র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
পুলিশ বলছে, ১৯ এপ্রিল বিকেলে রাজধানীর বনানীতে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জাহিদুল ও তাঁর বন্ধু তরিকুল ইসলামের ওপর হামলা চালান। হামলায় গুরুতর আহত পারভেজকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ ঘটনায় জাহিদুলের ফুফাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ থেকে ৩০ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
এর আগে আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন মো. আল কামাল শেখ ওরফে কামাল (১৯), আলভী হোসেন জুনায়েদ (১৯), আল আমিন সানি (১৯) এবং মো. হৃদয় মিয়াজীকে (২৩)।