পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া এক যুবককে হত্যার পর লাশ গুমের মামলায় সাবেক রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে পঞ্চগড়ের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এর বিচারক নাহিদ আক্তার জুলিয়েট শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এদিন নুরুল ইসলাম সুজনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। আসামি পক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে শুনানি করেন। 

নুরুল ইসলাম সুজন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের মহাজন পাড়া এলাকার মৃত ইমাজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে। তিনি পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং পঞ্চগড়-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। 

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে, গত ১০ নভেম্বর পঞ্চগড় জেলা সদরের উত্তর দর্জিপাড়া এলাকার মো.

মনু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নুরুল ইসলাম সুজনকে প্রধান করে ১৯ জনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি মামলা করেন। 

মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী মো. মনুর ছেলে আলামিন পেশায় রিকশাচালক। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন। এ জন্য তাকে শুরু থেকেই বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেওয়া হতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আলামিন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিব প্লাবন পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে দিয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন কতিপয় আসামির পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ মদদে অন্য আসামিরা তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দ্বারা আল আমিনকে জখম করেন। এতে রক্তাক্ত হয়ে আলামিন সড়কে লুটিয়ে পড়লে তার নিথর দেহ নিয়ে যায় তারা। তখন থেকেই আল আমিনের সন্ধান নেই।

আসামির পক্ষের আইনজীবী মির্জা সারোয়ার আলম জানান, আদালতে আসামি নিজেই আজ বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে এ সমস্ত মামলায় তাকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে, হয়রানি করা হচ্ছে।’ এছাড়া এই মামলার বাদী নিজেই বলেছেন, ‘তিনি স্বেচ্ছায় কোনো মামলা করেননি। নুরুল ইসলাম সুজনকে আসামি করা তার অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি। এই আসামির বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই।’ আমরা রিমান্ড না মঞ্জুর এবং জামিনের আবেদন করেছিলাম। 

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফি বলেন, “৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিলো। বিজ্ঞ আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলাটি রহস্যাবৃত, এখনো ভিকটিমের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। রহস্য উদঘাটনের জন্যই আসামির রিমান্ড প্রয়োজন ছিলো। আদালত বিষয়টি অনুধাবন করেছেন এবং এই রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। আমরা আশা করছি এই মামলায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হবে।”

ঢাকা/নাঈম/ইমন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ল ইসল ম স জন কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পটুয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার দুই আসামি তিন দিনের রিমান্ডে

পটুয়াখালীর দুমকীতে জুলাই আন্দোলনে শহীদ বাবার কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে কলেজশিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলার দুই আসামিকে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শুনানি শেষে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নিলুফার শীরিন এ আদেশ দেন।

এর আগে ২২ মার্চ গ্রেপ্তার দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে তিন দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুমকী থানার উপপরিদর্শক (তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম। আজ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মজিবুর রহমান এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মো. রুহুল আমিন সিকদারসহ আটজন আইনজীবী রিমান্ড আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন। অন্যদিকে আসামিদের জামিন চেয়ে শুনানি করেন আইনজীবী শামীম হোসেন।

শুনানি শেষে আদালত দুই আসামির তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মো. রুহুল আমিন সিকদার রিমান্ডের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।

আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। ১০ দিন পর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তাঁকে দুমকী উপজেলার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়। ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় বাবার কবর জিয়ারত করে নানাবাড়িতে ফেরার পথে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তাঁর কলেজশিক্ষার্থী মেয়ে। ধর্ষণের সময় এজাহারভুক্ত আসামিরা তাঁর নগ্ন ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলেন। এরপর ভুক্তভোগী তাঁর মা ও পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে ২০ মার্চ দুপুরে থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন। সন্ধ্যায় অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজু হয়।

মামলার এজাহারে উপজেলার একটি ইউনিয়নের ১৭ ও ১৯ বছর বয়সী দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়। যদিও পুলিশ বলছে, দুজনই কিশোর। মামলা হওয়ার দিন রাতে এজাহারভুক্ত ১৭ বছর বয়সী কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়। অন্য আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়। পরে ২১ মার্চ অন্য আসামিকে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁদের যশোর শিশু সংশোধনাগারে পাঠানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইসিটির প্রসিকিউটর সিলভিয়ার নিয়োগ বাতিল
  • যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০টির বেশি ভিসা বাতিল, অধিকাংশই ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের: মার্কো রুবিও
  • সমালোচনার মুখে আইসিটির প্রসিকিউটর সিলভিয়ার নিয়োগ বাতিল
  • প্রতারণার মামলায় ইথার ফারিয়েলের জামিন আবেদন নাকচ
  • আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও চার নতুন প্রসিকিউটর
  • পটুয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ মামলার দুই আসামি তিন দিনের রিমান্ডে
  • ফিলিস্তিনিদের সমর্থন: যুক্তরাষ্ট্রে তুর্কি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার, ভিসা বাতিল
  • ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের বর্বরোচিত হামলায় নিন্দা নাগরিক সমাজের
  • স্বাধীনতা দিবসে বিজয়স্তম্ভে আইনজীবী সমিতির শ্রদ্ধা নিবেদন 
  • পাঁচ বালুমহাল ইজারা না দিতে ১৩ সরকারি কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ