আবারো বাড়তে পারে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়
Published: 30th, January 2025 GMT
রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে যে পরিমাণ রিটার্ন জমার আশা করেছিল সরকার এখন পর্যন্ত তা না হওয়ায় আবারো সময় বাড়াতে পারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত থাকলেও ১৫ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। সময় বাড়ালে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতা আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
এর আগে দুই দফায় আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হয়েছিল। দ্বিতীয় দফার রিটার্ন দাখিলের শেষ সময় ছিল ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। এদিন পর্যন্ত ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতারা জরিমানা ছাড়া রিটার্ন দাখিল করার সময় ছিল। এছাড়া, কোম্পানি করদাতাদের ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়কর দেওয়ার সময় রয়েছে। গত ২৪ ডিসেম্বর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এ সংক্রান্ত পৃথক দুটি আদেশ জারি করেছিল।
এনবিআর জানায়, ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছে ৩৩ লাখ ৯৮ হাজার ৯৩৭টি। এর মধ্যে অনলাইনে জমা পড়েছে ১১ লাখ ৬৯ হাজার ৭৫২টি। গত করবর্ষে আয়কর রিটার্ন জমা পড়েছিল ৪৩ লাখের বেশি।
এ বছর জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিশেষ আদেশের মাধ্যমে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনে অবস্থিত সকল সরকারি কর্মচারী, সারা দেশের সব তফশিলি ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের, সারা দেশের সব মোবাইল টেলিকম সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এবং বহুজাতিক কোম্পানিতে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর রিটার্ন অনলাইনে দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
২০২৪-২৫ করবর্ষের রিটার্ন দাখিল ও কর পরিপালন সহজ করতে এনবিআর গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইন রিটার্ন দাখিল করার জন্য করদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে।
বছরে আয় সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি হলে আয়কর প্রযোজ্য হয়। ব্যাংক হিসাব খোলা, ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারসহ বেশ কিছু কাজে এখন রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
রিটার্ন জমা দিলে ব্যাংকে সঞ্চয়ে সুদ বা মুনাফা এবং পুঁজিবাজারে লভ্যাংশের ওপর আয়কর ১৫ শতাংশের বদলে ১০ শতাংশ হয়।
ঢাকা/এনএফ/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আয়কর র ট র ন র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
নামাজের শুরু ও শেষ সময়
আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই নামাজ মুমিনদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ করা হয়েছে।’ (সুরা নিসা, আয়াত: ১০৩)
এই আয়াত থেকে স্পষ্ট যে নামাজের সময় নির্দিষ্ট এবং এটি পালন করা মুসলমানের ওপর অবশ্যক। জিবরাইল (আ.)-এর কাছ থেকে রাসুল (সা.) পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের সময় শিখেছেন এবং সাহাবিদের তা শিক্ষা দিয়েছেন।
একটি হাদিসে উল্লেখ আছে, জিবরাইল (আ.) দুই দিন রাসুল (সা.)-কে নামাজের সময় শিখিয়েছেন: প্রথম দিন প্রতিটি নামাজের শুরুর সময়ে এবং দ্বিতীয় দিন শেষ সময়ে। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩৯৩)
আধুনিক যুগে, বিশেষ করে ব্যস্ত জীবনযাত্রায়, নামাজের সময় সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। শুধু ঘড়ির কাঁটা দেখে নয়, প্রাকৃতিক নিয়মে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরু ও শেষ সময় জেনে রাখা নামাজের প্রতি যত্নের বহিঃপ্রকাশ।
জিবরাইল (আ.) দুই দিন রাসুল (সা.)-কে নামাজের সময় শিখিয়েছেন: প্রথম দিন প্রতিটি নামাজের শুরুর সময়ে এবং দ্বিতীয় দিন শেষ সময়ে।সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩৯৩আরও পড়ুনজীবনকে ছন্দে ফেরাবে ‘ধীর নামাজ’২৪ মে ২০২৫পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরু ও শেষ সময়নিচে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরু ও শেষ সময় সূর্যের অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়, যা ভৌগোলিক অবস্থান অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়ে থাকে।
১. ফজরের নামাজশুরুর সময়: ফজরের সময় শুরু হয় সুবহে সাদিক থেকে, অর্থাৎ ভোরের প্রথম আলো যখন পূর্ব দিগন্তে ছড়িয়ে পড়ে। এটি সাধারণত সূর্যোদয়ের প্রায় দেড় ঘণ্টা আগে শুরু হয়।
শেষ সময়: ফজরের সময় শেষ হয় সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে। সূর্যোদয়ের পর ফজর নামাজ আদায় করা জায়েজ নয়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬১২)
২. জোহরের নামাজশুরুর সময়: জোহরের সময় শুরু হয় সূর্য যখন মাথার ওপর থেকে পশ্চিম দিকে হেলে পড়ে (জাওয়ালের পর)।
শেষ সময়: জোহরের সময় শেষ হয় যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার নিজের দৈর্ঘ্যের সমান বা দ্বিগুণ হয় (হানাফি মাজহাব অনুযায়ী দ্বিগুণ)। এটি সাধারণত আসরের সময় শুরুর আগপর্যন্ত। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ১৪৯)
৩. আসরের নামাজশুরুর সময়: আসরের সময় শুরু হয় যখন কোনো বস্তুর ছায়া তার নিজের দৈর্ঘ্যের সমান হয় (শাফিই মাজহাব) বা দ্বিগুণ হয় (হানাফি মাজহাব)।
শেষ সময়: আসরের সময় শেষ হয় সূর্যাস্তের আগে। তবে সূর্য হলুদ হয়ে গেলে আসর নামাজ আদায় করা মাকরুহ। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫৫৩)
আরও পড়ুননামাজ আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধির একটি ধাপ১৭ জুলাই ২০২৫পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরু ও শেষ সময় সঠিকভাবে জানা এবং তা মেনে চলা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। আধুনিক প্রযুক্তি ও সময়সূচির সাহায্যে এই দায়িত্ব পালন আরও সহজ হয়েছে।৪. মাগরিবের নামাজশুরুর সময়: মাগরিবের সময় শুরু হয় সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে।
শেষ সময়: মাগরিবের সময় শেষ হয় যখন পশ্চিম দিগন্তের লাল আভা অদৃশ্য হয়। সাধারণত সূর্যাস্তের প্রায় এক ঘণ্টার মধ্যে লাল আভা মুছে যায়। (সুনানে নাসাই, হাদিস: ৫২৭)
৫. এশার নামাজশুরুর সময়: এশার সময় শুরু হয় পশ্চিম দিগন্তের লাল আভা অদৃশ্য হওয়ার পর।
শেষ সময়: এশার সময় চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। তবে ফজরের সুবহে সাদিকের আগপর্যন্ত এশা আদায় করা যায়, যদিও মধ্যরাতের পর মাকরুহ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬১২)
নামাজের সময় ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি আল্লাহর সঙ্গে মুমিনের সম্পর্ককে দৃঢ় করে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের শুরু ও শেষ সময় সঠিকভাবে জানা এবং তা মেনে চলা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব। আধুনিক প্রযুক্তি ও সময়সূচির সাহায্যে এই দায়িত্ব পালন আরও সহজ হয়েছে।
তাই প্রতিদিন নামাজের সময়সূচি অনুসরণ করে এবং ইবাদতের প্রতি আন্তরিকতা রেখে আমরা আমাদের জীবনকে আরও অর্থবহ ও আল্লাহর সন্তুষ্টির দিকে নিয়ে যেতে পারি।
আরও পড়ুননামাজ: দাসের মহিমা০৪ মার্চ ২০২৫