নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমির দেয়াল নির্মাণ করে দখল করা হয়েছে। এতে সড়কটি সংকুচিত হয়ে পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের জাইদেরগাঁও এলাকায় ডিপলেড ওয়্যার ল্যাবরেটরি লিমিটেড নামের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। দখল হওয়া জমি উদ্ধারের জন্য গত মঙ্গলবার এলাকাবাসীর পক্ষে এস এম জামালউদ্দিন আহম্মেদ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
প্রকৌশলীর কাছে দেওয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, ডিপলেড ওয়্যার ল্যাবরেটরি সওজের ওই জমিতে দেয়াল নির্মাণের পর বালু ভরাটের পাঁয়তারা শুরু করেছে। এ ছাড়া তাদের দখল করা সওজের জমিসহ বাংলা ফুড নামের একটি কোম্পানির জমির বিরোধ নিয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাংলা ফুডের পক্ষে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানি মামলা হলে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আদালত সেখানে স্থাপনা নির্মাণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এর বিপরীতে নারায়ণগঞ্জের দ্বিতীয় যুগ্ম জজ আদালতে আরেকটি দেওয়ানি মামলা করে ডিপলেড ওয়্যার ল্যাবরেটরি। ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর সেখানে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন আদালত। সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) এ আদেশ তামিল করার নির্দেশও দেন আদালত। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ২৩ নভেম্বর বিবাদী লায়ন মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান নান্নু ও তাঁর ভাই আবদুল লতিফ মিয়া ওই জমিসহ সওজের জমি দখল করে দেয়াল নির্মাণ করেন।
এলাকাবাসী জানান, দখল করে দেয়াল নির্মাণ করা জমিটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়ক নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করে। অধিগ্রহণ করা জমির পাশের রাস্তা নিয়ে চার গ্রামের মানুষ চলাচল করে। ওই জমিতে দেয়াল নির্মাণ করার কারণে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত দেয়াল উচ্ছেদ করে মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
জাইদেরগাঁও গ্রামের আমজাদ হোসেন বলেন, রাস্তা খুঁড়ে কোম্পানি দেয়াল নির্মাণ করায় তাদের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। গাড়ি নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করা যায় না। দেয়াল নির্মাণ করায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে।
মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মামুন মিয়া বলেন, সওজের জায়গা দখল করার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। কোম্পানি দখল করে থাকলে উচ্ছেদে সহযোগিতা করা হবে।
ডিপলেড ওয়্যার ল্যাবরেটরি লিমিটেডের পরিচালক আবদুল লতিফ বলেন, তারা নিজেদের জমিতেই দেয়াল নির্মাণ করেছেন। সওজের জমি দেয়ালের বাইরে রাখা হয়েছে। সওজ মাপজোখ করলেই তাদের জমি পাওয়া যাবে।
সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা জমিতে দেয়াল নির্মাণের সময় পুলিশ বাধা দিয়েছিল। পরে তারা দেয়াল নির্মাণ করে ফেলে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ উচ্ছেদ করার সময় পুলিশের সহযোগিতা পাবে।
সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। আগের এসিল্যান্ডের কাছে আদালতের নির্দেশনা তামিল করার চিঠি আসতে পারে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ নারায়ণগঞ্জের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আল রাজী লিয়ন বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ দ য় ল ন র ম ণ কর ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে কিশোর, ৬ দিন পর ঢাকা থেকে উদ্ধার
ইন্দুরকানীর নিখোঁজ কিশোর সাব্বির হোসেনকে ছয় দিন পর ঢাকার নারায়ণগঞ্জের এক রিকশাচালকের বাসায় পাওয়া গেছে। তিন দিন আগে রাস্তায় অচেতন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন ওই রিকশাচালক।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ইন্দুরকানী গ্রামের কৃষক আব্দুল জলিল শেখের ছেলে সাব্বির হোসেন কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়। রাতে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে নেমে সেখান থেকে আটো গাড়িতে নারায়ণগঞ্জ যাচ্ছিল। এ সময় অটোতে থাকা অজ্ঞান পার্টির লোকজন তাকে অজ্ঞান করে টাকা, মোবাইল ফোনসহ সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র নিয়ে যায়। পরে তাকে নারায়ণগঞ্জে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যায়। গভীর রাতে সাব্বিরকে পরে থাকতে দেখে রিকশাচালক আব্দুর জব্বার তাঁকে তাঁর বাসায় নিয়ে যায়। তিন দিন পর তার জ্ঞান ফেরে। শনিবার বিকেলে সাব্বির ফোন করে তার বাবা-মাকে বিষয়টি জানায়।
সাব্বিরের বাবা জলিল শেখ বলেন, ছেলের খোঁজ না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। খুব চিন্তায় ছিলাম। তাকে অজ্ঞান পার্টি ধরেছিল। এক রিকশাচালক ভাই তাকে উদ্ধার করেছে। তাঁর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।
ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মারুফ হোসেন জানান, নিখোঁজ সাব্বিরকে ঢাকায় পাওয়া গেছে বলে তার পরিবার জানিয়েছে।