২৩ বছর আগে মডেল সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী কোনো সাক্ষী পাওয়া যায়নি। আদালতকে এ তথ্য জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক। এ হত্যা মামলায় আসামি সাবেক সংসদ সদস্য পলাতক গোলাম ফারুক অভির খালাসের রায়ে এ তথ্য উল্লেখ রয়েছে। 

গত ১৪ জানুয়ারি আলোচিত এ মামলার রায়ে আসামি অভিকে খালাস দেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শাহীনুর আক্তার। সম্প্রতি এ মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। 

রায়ে উল্লেখ রয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তা সাক্ষী সানজিদুল হাসান ইমনের জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে অভির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছিলেন। সেই সাক্ষী শুনানিতে আদালতে বলেছেন, তিন্নি হত্যার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। 

আদালত বলেন, ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় আসামিকে শাস্তি দিতে হলে আসামির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে হয়। কেবল পলাতক হওয়ার কারণে কোনো আসামিকে দোষী বিবেচনা করার সুযোগ নেই। সাক্ষীদের বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে, তিন্নির সঙ্গে আসামি গোলাম ফারুক অভির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। অভি ও তিন্নি একই বাসায় থাকতেন। প্রেমের সম্পর্কের বিষয়ে রায়ে তিন্নির চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমের বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। 

২০০২ সালের ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় তিন্নি তাঁর ফুফুর বাসায় যান। এর আধা ঘণ্টা পর অভি সেই বাসায় আসেন। পরদিন সকাল পর্যন্ত ছিলেন, যা  গৃহকর্মী শেফালী ও বীণার বক্তব্যে প্রমাণিত হয়।

আদালত রায়ে আরও বলেন, আসামি অভির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তিন্নিকে হত্যা করে ১ নম্বর বুড়িগঙ্গা বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু থেকে ফেলে দিয়ে আসেন। কিন্তু মামলার ঘটনার যে তারিখ দেখানো হয়েছে, সেই তারিখে অভির অবস্থান তিন্নির বাসায় ছিল, যা সাক্ষীদের বক্তব্যে প্রমাণিত হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা ও দায়রা আদালতের প্রধান পিপি ইকবাল হোসেন। 

২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু-১-এর নিচে মডেল তিন্নির লাশ পাওয়া যায়। অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে তাঁকে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করে। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ৮ নভেম্বর গোলাম ফারুক অভির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দেড় ঘণ্টায় শেষ সুলভ মূল্যের ডিম-দুধ, পাননি অনেকেই

নির্ধারিত এলাকায় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের গাড়ি পৌঁছায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে। এরপর শুরু হয় সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও গরুর মাংস বিক্রি। দুপুর ১২টার কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল গাড়িতে ডিম ও দুধ নেই। কেবল ১৬ কেজি গরুর মাংস অবশিষ্ট রয়েছে। অর্থাৎ মাত্র দেড় ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে সুলভ মূল্যে বিক্রির জন্য আনা দুধ ও ডিম।

আজ সোমবার চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী ওয়্যারলেস এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র। এদিন নগরের ওয়্যারলেস ও টেক্সটাইল এলাকায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। এই কর্মসূচির আওতায় পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে গরুর মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০ টাকা, দুধ প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ডিম প্রতি ডজন ১১০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আজ প্রতিটি গাড়িতে ২০০ লিটার দুধ, ১ হাজার ৫০০ পিস ডিম ও ৭৫ কেজি করে মাংস ছিল। সে হিসেবে মাত্র দেড় ঘণ্টায় ২০০ লিটার দুধ ও ১২৫ ডজন ডিম বিক্রি শেষ হয়ে গেছে। তবে দুপুর ১২টার দিকে তেমন ভিড় দেখা যায়নি সেখানে। স্থানীয় লোকজন বলছেন, তাঁরা অনেকে আগে এসেও পণ্য পাননি।

এদিন অন্তত ১০ ক্রেতা দুধ-ডিম না পেয়ে ফেরত গেছেন। ডিম কিনতে আসা ক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমি দুপুর ১২টার দিকে এসে ডিম পাই নাই। বাসা থেকে আসতে আসতেই দেখি সব শেষ। তাঁরা নাকি দেড় হাজার ডিম আনছে। তাহলে আমরা পাই নাই কেন?’

গাড়ি থেকে এসব পণ্য কেনার জন্য প্রথমে টাকা দিয়ে স্লিপ নিতে হয়। কর্মকর্তারা জানান, একজন সর্বোচ্চ এক ডজন ডিম, এক বা দুই লিটার দুধ ও এক কেজি মাংস কিনতে পারেন। কেউ চাইলে শুধু ডিম, দুধ অথবা মাংস কিনতে পারবেন। তবে মাংসের চাহিদা তুলনামূলক কম।

দ্রুত শেষ হয়ে যাওয়া নিয়ে কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় ফ্রিজার ট্রাক রয়েছে। ফলে তারা দীর্ঘ সময়ের জন্য পণ্য নিয়ে আসতে পারে। কিন্তু চট্টগ্রামে সে সুযোগ নেই। তাই পরিমাণ কম। আবার দ্রুত ক্রেতাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

জানতে চাইলে দায়িত্বে থাকা বোয়ালখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রুমন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সবাইকে পণ্য দেওয়া হয়েছে। মাংসের চাহিদা কম থাকায় কিছু মাংস থেকে গেছে। ডিমের চাহিদা বেশি ছিল। দেড় থেকে দুই ঘণ্টায় শেষ হয়ে গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ