আওয়ামী লীগ নেতা ও গাজীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য আহ্সান উল্লাহ্ মাস্টার হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের বেঞ্চ গতকাল বুধবার এই দিন ধার্য করেন।

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দস কাজল। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি আহ্সান উল্লাহ্ মাস্টার হত্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের আপিল দ্রুত শুনানি করতে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুনানির দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সমাবেশে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় আহ্সান উল্লাহ্ মাস্টারকে। এ ঘটনায় করা হত্যা মামলার রায় ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল ঘোষণা করেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।

রায়ে মামলার আসামি বিএনপি নেতা নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন আদালত। পরে বিচারিক আদালতের রায় অনুমোদনের জন্য মামলার নথি হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়। পাশাপাশি ওই রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপিল করে আসামিরা। এর পর উভয় আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ১৫ জুন রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ছয়জনের ফাঁসি বহাল রাখা হয়।

এ মামলায় ৩০ আসামির মধ্যে নিম্ন আদালতে ২৮ জনের দণ্ড হয়। এর মধ্যে ২২ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। এসব আসামির মধ্যে ১৭ জন কারাগারে ও ৯ জন পলাতক। দু’জন মারা গেছেন। পরে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে পৃথক আপিল আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিরা। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

অপহরণের ছয় দিন পর টেকনাফের পাহাড় থেকে সিলেটের ৬ বাসিন্দাকে উদ্ধার

অপহরণের ছয় দিন পর কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ার শিলখালীর পাহাড়ের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে সিলেটের জাকিগঞ্জ এলাকার ছয় বাসিন্দাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, মানব পাচারকারীরা তাঁদের বিদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে অপহরণ করে গোপন আস্তানায় আটকে রেখেছিল। আজ মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে অপহৃত ব্যক্তিদের উদ্ধারের কথা জানায় পুলিশ।

অপহৃত ব্যক্তিদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৫ এপ্রিল কাজের সন্ধানে সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেন ছয় বাসিন্দা। ১৬ এপ্রিল কক্সবাজারে পৌঁছে সবাই পরিবারের সঙ্গে মুঠোফোনে কথাও বলেন। এরপর সবার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের কয়েকজন সদস্য গতকাল সোমবার বিকেলে কক্সবাজার শহরে পৌঁছে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এ নিয়ে গতকাল প্রথম আলোয় ‘কক্সবাজারে গিয়ে ৫ দিন ধরে নিখোঁজ সিলেটের এক গ্রামের ৬ জন’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

উদ্ধার হওয়া ছয়জন হলেন জকিগঞ্জের ঈদগাঁও বাজার এলাকার বাসিন্দা রশিদ আহমদ (২০), একই গ্রামের মারুফ আহমদ (১৮), শাহিন আহমদ (২১), এমাদ উদ্দিন (২২), খালেদ হাসান (১৯) ও আবদুল জলিল (৫৫)।

আজ বিকেলে অপহৃত একজনের ভাই বাহার উদ্দিন টেকনাফ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর পুলিশ অভিযানে নামে।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের একটি দল বিকেল থেকে টেকনাফের পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান শুরু করে। রাত পৌনে ৯টার দিকে পুলিশের একটি দল সমুদ্র উপকূলীয় বাহারছড়া ইউনিয়নের শিলখালী গ্রামের পূর্ব পাশের পাহাড়ের একটি আস্তানা থেকে অপহৃত ছয়জনকে উদ্ধার করে। অপহরণকারী দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।

পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানান, আজ দুপুরে অপহৃত রশিদ আহমদের মুঠোফোন নম্বর থেকে কল দিয়ে তাঁর ভাই বাহার উদ্দিনকে বলা হয়, অপহৃত ছয়জন টেকনাফের বাহারছড়ার পাহাড়ের আস্তানায় বন্দী আছেন। রাতেই তাঁদের বাহারছড়া সৈকত থেকে ট্রলারে তুলে সমুদ্রপথে ইন্দোনেশিয়া পাঠানো হবে। ওই ছয়জনের মধ্যে বাহার উদ্দিনের আরও এক ভাই এমাদ উদ্দিনও রয়েছেন। ফোন পাওয়ার পরপরই খবরটি বাহার উদ্দিন পুলিশকে জানান।

বাহার উদ্দিন বলেন, কলটি পাওয়ার পর অপহৃত ব্যক্তিদের অবস্থান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। পুলিশকে না জানালে রাতের মধ্যে তাঁদের ইন্দোনেশিয়ায় পাচার করা হতো। রাজমিস্ত্রির কাজ করার জন্য অপহৃত ব্যক্তিরা কক্সবাজারে এসেছিলেন। মানব পাচারকারী চক্র ছয়জনকে তুলে নিয়ে কক্সবাজার থেকে টেকনাফে নিয়ে পাহাড়ের আস্তানায় জিম্মি করে। তখন ছয়জনের মুঠোফোনও বন্ধ রাখা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, টেকনাফে মুক্তিপণের জন্য লোকজনকে অপহরণ এবং ট্রলারে সমুদ্রপথে মানব পাচার বেড়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপের পশ্চিমে গভীর সাগর থেকে ২১৪ জন যাত্রীসহ একটি ট্রলার জব্দ করেছেন। তাঁদের মালয়েশিয়ায় পাচার করা হচ্ছিল। উদ্ধার যাত্রীদের অধিকাংশই ছিলেন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও কিশোরী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মদিনা শহরকে কটাক্ষ: রংপুরে সাইবার নিরাপত্তা আইনে দুই কিশোরসহ গ্রেপ্তার ৩
  • আবার রিমান্ডে শাজাহান, পলক, আতিকুলসহ ছয়জন
  • অপহরণের ছয় দিন পর টেকনাফের পাহাড় থেকে সিলেটের ৬ বাসিন্দাকে উদ্ধার